‘মনোনয়ন পেলে ধানের শীষের জয় উপহার দেব’ • নতুন ফেনীনতুন ফেনী ‘মনোনয়ন পেলে ধানের শীষের জয় উপহার দেব’ • নতুন ফেনী
 ফেনী |
২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘মনোনয়ন পেলে ধানের শীষের জয় উপহার দেব’

রাশেদুল হাসানরাশেদুল হাসান
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৬:২৫ অপরাহ্ণ, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭

হাবিবুর রহমান খান।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনে এবারও বিএনপির মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন তাবিথ আউয়াল। আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না দিলেও তাকে সবুজ সংকেত দিয়েছে দলটির হাইকমান্ড। সুবজ সংকেত পেয়েই নির্বাচনসংক্রান্ত প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন তিনি। বর্তমানে ফিনল্যান্ডে অবস্থান করছেন তাবিথ। দেশে ফিরেই পুরোদমে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়বেন। ধানের শীষ প্রতীকে প্রথমবারের মতো নির্বাচন করার অনুভূতি, নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী এসব নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তাবিথ আউয়াল।

টেলিফোনে কেমন আছেন জানতেই বলেন, ভালো আছি। এবারও নির্বাচন করবেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের সদ্ধিান্ত নিয়েছে। কিন্তু এখনও প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি। সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন। আশা করি হাইকমান্ড তাকে দলীয় মনোনয়ন দেবে।

মনোনয়ন পেলে প্রথমবারের মতো ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন-এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা হবে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা গৌরবের। হাইকমান্ড যদি তার হাতে ধানের শীষ তুলে দেয় তাদের সেই আস্থার প্রতিদান দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টাকরব। মনোনয়ন পেলে উত্তর সিটিতে ধানের শীষের জয় উপহার দেব।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ ২০১৫ সালের ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ছিলেন। তবে ২৮ এপ্রিল নির্বাচনের দিন দুপুরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায় তার দল। ৩ ঘণ্টার নির্বাচনে সাড়ে তিন লাখের বেশি ভোট পান তাবিথ। প্রয়াত আনিসুল হকের মতো জাদরেল প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে তরুণ প্রার্থী হিসেবে সবার নজর কাড়েন তিনি। দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেন। এরপর নিজের যোগ্যতা এবং দক্ষতার ফলে অল্পদিনেই বিএনপির হাইকমান্ডের আস্থাভাজন হয়ে উঠেন। আস্থার প্রতিদান দিতে সর্বোচ্চ চষ্টো করে যাচ্ছেন তিনি। ইতিমধ্যে ইশতেহার তৈরিসহ নির্বাচনের প্রাসঙ্গিক কাজ শুরু করেছেন। দলটির একাধিক নীতিনির্ধারক জানান, তাবিথকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। সম্প্রতি সিনিয়র কয়েক নেতা চেয়ারপারসনের সঙ্গে নির্বাচন প্রসঙ্গে আলোচনাকালে তিনি জানান, আমাদের প্রার্থী ঠিক করা আছে। এ নিয়ে ভাবতে হবে না।

তাবিথ আউয়াল নিজেও আশাবাদী। হাইকমান্ড তাকেই মনোনয়ন দেবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (উত্তর) গত নির্বাচনে আমার অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং এ বিষয়ে কিছু কাজও করা আছে। ওই নির্বাচনে আমি দলের হাইকমান্ডের প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছি বলে আমার বিশ্বাস। আশা করি এবারও আমাকে মনোনয়ন দেবে। আমি হাইকমান্ডের সদ্ধিান্তের অপেক্ষায় আছি। শেষ পর্যন্ত দল আমাকে যোগ্য মনে না করে অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলেও তার পক্ষে কাজ করব। দলের সদ্ধিান্তের বাইরে আমি কিছুই করব না।

দল মনোনয়ন দিলে জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী জানতে চাইলে তাবিথ বলেন, গত নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। উপনির্বাচন হচ্ছে এমন খবরের পর এবারও সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি শতভাগ আশাবাদী। কারণ, এবার ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে মাঠে নামব। এ প্রতীকের প্রতি সব শ্রেণী-পেশার মানুষের একটা আস্থা আছে। এছাড়া সরকারের অন্যায়, অবিচার ও দুর্নীতি এবং জুলুমের কারণে অনেকেই ক্ষুব্ধ। তারা ধানের শীষকে ভোট দেবেন। আর যুব সমাজের বড় একটি অংশের সমর্থন আমি পাব বলে বিশ্বাস করি। তরুণ নেতৃত্বের প্রতি নগরবাসীও আস্থা রাখবেন। প্রতীক এবং তরুণ নেতৃত্ব এ দুইয়ের সমন্বয়ে বিপুল ভোটে জয়ী হব বলে আশা করি।

প্রতিপক্ষ দল আওয়ামী লীগে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে একজন তারকা ব্যবসায়ীর নাম শোনা যাচ্ছে তার সঙ্গে নির্বাচনে কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন জানতে চাইলে তাবিথ বলেন, গত নির্বাচনেও আমি দেশের একজন স্বনামধন্য ব্যক্তির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেছি। তাই প্রতিপক্ষ কে তা নিয়ে ভাবছি না। বিজনেস কমিউনিটিতে তার মতো তারও পরিচিতি রয়েছে। কিন্তু ভোটের মাপকাঠি শুধু তারাই নয়। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে হয়তো বিজসেন কমিউনিটিতে পরিচিতি যদি কিছুটা কমও থাকে পারিবারিকভাবে ওই কমিউনিটিতে আমাদের ঐতিহ্য রয়েছে। তিনি হেসে বলেন, বিজনেস কমিউনিটির দায়িত্ব না হয় আমার বাবাকেই দিয়ে দেব। অনেকটা রসিকতা করে বলেন, একবার নির্বাচন করার কারণে বিজনেস কমিউনিটিসহ যে কোনো সম্ভাব্য প্রার্থী থেকে আমার পরিচিতি কোনো অংশেই কম নয়।

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে কতটা আশাবাদী জানতে চাইলে তাবিথ আউয়াল বলেন, গত নির্বাচনে যা ঘটেছে তাতে খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার কারণ নেই। তবে কুমিল্লা ও রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অতীতের চেয়ে কিছুটা ভালো হয়েছে। এছাড়া এ নির্বাচন ইসির জন্যও চ্যালেঞ্জ। আশা করি উত্সবমুখর পরিবেশে একটা ভালো নির্বাচন হবে।

নগরবাসীর জন্য আপনার বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত নির্বাচনে আমার স্লোগান ছিল ণ্টনতুন প্রজন্ম নতুন ঢাকা’। এবারও এ স্লোগানকেই গুরুত্ব দেয়া হবে। একটি পরিকল্পিত আন্তর্জাতিকমানের আদর্শ ঢাকা নগরী গড়ে তোলাই হবে তার প্রধান কাজ। নগরবাসীর প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করা আছে। এ লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়ে এগোতে পারব। সীমিত সামর্থযের মধ্যে সর্বোচ্চ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করাকেই অগ্রাধিকার দেয়া হবে। উত্তরের বাসিন্দারা যে ধরনের সিটি চান, সে ধরনের একটা নগর গড়ে তোলার সাহস এবং সক্ষমতা আমার দল এবং আমার আছে।
প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক প্রসঙ্গে তাবিথ বলেন, তার মেয়র নির্বাচিত হওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জিং কাজ করেছেন এবং নগরবাসীর সমর্থন পেয়েছেন। নাগরিক সুবিধাকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি যেসব প্রকল্প নিয়েছেন নির্বাচিত হলে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রসঙ্গত, আনিসুল হকের মৃত্যুর পর উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করে সরকার। এরপর নির্বাচন কমিশন তাদের ১৫তম সভা শেষে ঘোষণা দেয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচন নিয়ে কোনো জটিলতা নেই। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল এবং ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে ভোটগ্রহণ হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। নতুন ৩৬টি ওয়ার্ডেও নির্বাচন হবে এবং এর কাউন্সিলরদের মেয়াদ হবে কর্পোরেশনের বাকি সময়টুকু।

প্রসঙ্গত, আনিসুল হকের মৃত্যুর পর উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করে সরকার। এরপর নির্বাচন কমিশন তাদের ১৫তম সভা শেষে ঘোষণা দেয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচন নিয়ে কোনো জটিলতা নেই। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল এবং ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে ভোটগ্রহণ হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। নতুন ৩৬টি ওয়ার্ডেও নির্বাচন হবে এবং এর কাউন্সিলরদের মেয়াদ হবে কর্পোরেশনের বাকি সময়টুকু। (সূত্র: যুগান্তর)
সম্পাদনা: আরএইচ

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.