মো. কামরুল হাসান >>
শখের বসে নার্সারী করে লাখপতি ছাগলনাইয়া সরকারী কলেজের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী হারুন অর রশিদ। সরকারী চাকুরির পাশাপাশি নিজ বাড়ীর পাশের পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনে বর্গা নিয়ে মডার্ণ নার্সারি নামে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নার্সারিতে নিবিষ্ট মনে কাজ করছেন হারুন অর রশিদ। তাঁর সাথে আরো চারজন কর্মচারীও কাজ করছেন। পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৯৮৫ সালে অন্যের ৪০ শতক জমি বর্গা নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির চারা লাগিয়ে একটি নার্সারি তৈরি করেন। এ নার্সারিতে ৭০টিরও বেশি প্রজাতির গাছ রয়েছে তাঁর নার্সারিতে। তাঁর নার্সারির গাছ নিতে ও দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন।
হারুন অর রশিদের নার্সারির চারাগুলো পরিচর্যা করার জন্য ৪ জন কর্মচারী রয়েছে। অফিস শেষে কর্মচারীদের সাথে নিড়ানী-কাস্তে-কোদাল হাতে নিয়ে নার্সারিতে কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। চলে গভীর রাত পর্যন্ত।
তাঁর নার্সারিতে গোলাপ, চন্দ্র মল্লিকা, ডালিয়া, গাদা, নয়ন তারা, রজনী গন্দা, বেলি, একজোড়া, ইন্ডিয়ান রঙ্গণসহ ২০ প্রজাতির ফুলের চারা ও আপেল, কমলা, পেয়ারা, কাঁঠাল, লেবু, জাম্বুরা, আম, সপেদা আতা ফল, জলপাই, ডালিম, আনারস, আঙুর, আনারসহ ৩০ টি প্রজাতির ফলজ এবং ওষুধী গাছের মধ্যে রয়েছে অর্জুন, নিম, হরিতকি, বহেরা, এ্যলুবেরা, তুলসী, আমলকী, শাকসবজির মধ্যে সিম, লাউ, সসিন্দা, তিতা করলা, ঝিঙ্গা, টমেটো, বেগুন, কুমড়া, বরবটি, মরিচ, ধনিয়াপাতা, লেটুস পাতা, কেপছিকাম মরিচসহ শতাধিক প্রজাতির গাছ-গাছালি রয়েছে।
হারুন অর রশিদ জানান, গাছের চারাকে পোকা দমনের হাত থেকে রক্ষা করতে কেরেট, মার্শাল, নিউবিট, রেডিসিন গোল্ড ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এর পাশাপাশি নার্সারির ভিতরে রয়েছে একটি পুকুর তাঁর পুকুরে মাছ আছে কই, শিং, রুই, কাতল, মৃগা, মাগুর, তেলাপিয়া, বোয়াল আরো অনেক প্রজাতির মাছ। তিনি সেখানেও মাছ চাষ করে প্রতি বছর অনেক টাকা আয় করেন। আকার ভেদে চারা প্রতি বিক্রি করেন ৫-১০০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বিনামূল্যে গাছের চারা দিয়ে থাকেন।
এ ব্যাপারে হারুনুর রশিদ নতুন ফেনী’কে বলেন, শখের বসে নার্সারিটি গড়ে তোলার সময় তৎকালীন সরকারি কলেজের প্রয়াত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসেন খান তাকে সবসময় উৎসাহ এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে ফলজ, বনজ এবং ওষুধি চারা নিয়ে আসতে পরামর্শ দিতেন। তিনি আরো বলেন, এ নার্সারি থেকে প্রতিবছর দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ করেন তিনি।
আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, নার্সারি শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কোন ধরনের সহযোগীতা পাননি। এবং কেউ কখনো এসেও দেখে যাননি। স্ত্রী, ২ ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছে তার।
সম্পাদনা: আরএইচ/এমকেএইচ