মুসাপুর উপকূল থেকে ফিরেঃ ভালো নেই নোয়াখালী মুসাপুর উপকূলীয় অঞ্চল গুচ্ছগ্রাম’র জেলেরা। মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ ধরাড নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মৎস্য অধিদফতর। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ আদেশ অমান্য করলে কারাদ-, অর্থদ- বা উভয় দ-ের বিধান রেখেছে মৎস্য অধিদফতর। মূলত এ মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ সাগর থেকে স্রোতযুক্ত মিঠাপানিতে এসে ডিম ছাড়ে বলে জানান মৎস্য গবেষকরা।
চলতি মাসের শুরু থেকে মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও জেলেদের জন্য সরকার থেকে পাঠানো ত্রান সামগ্রী তারা এখন পর্যন্তও পায়নি। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নোয়াখালীর মুসাপুর উপকূলীয় অঞ্চল গুচ্ছগ্রামের জেলেরা সাগরে জাল ফেলে মাছ ধরার জন্য সাগরপাড়ে উপরে প্লাস্টিকের চাউনি দিয়ে নিচে সবুজ ঘাসের উপর বসে ভালোভাবে জাল বুনে নিচ্ছেন। যাতে মাছ ধরার সময় জাল ছিড়ে না যায়। সেখানে কথা হয় ষাটোর্ধ নুর ইসলামের সাথে।
নতুন ফেনী’র এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ১২ বছর আগে জেলে ফখরুদ্দিন’র সাথে সূদুর লক্ষীপুর থেকে গুচ্ছগ্রাম এসে ইলিশ মাছ ধরার জন্য পাড়ি জমান। তার সাথে আরো এগারো জন একই কাজ করেন। প্রতিবছর বৈশাখ থেকে অগ্রাহায়ন মাস পর্যন্ত নৌকা ও ট্রলারে করে নিয়ে সাগরে জাল ফেলে ইলিশ মাছ সংরক্ষণ করে স্থানীয় আড়তদারদের কাছে ৪’শ টাকা থেকে সাড়ে ৬’শ টাকায় বিক্রি করেন। এ বছর জাল ক্রয় ও মেরামত করা ভাবদ তাদের খরচ হয়েছে প্রায় দুই লক্ষ টাকা। চলতি মাসেই মা ইলিশ সংরক্ষনের জন্য ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ রাখেন। এই কয়দিন তারা জাল মেরামতের কাজ করেন।
স্থানীয় জেলে সত্তোরর্ধ সায়দুল হক, বাকের, নুরুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, মাছ ধরার মৌসুমে ইলিশ মাছ ধরে ও বিক্রি করে কোনরকমে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালান। সরকার থেকে জেলেদেরকে সাগরে মাছ না ধরার জন্য উৎসাহী করতে ত্রান সামগ্রী দেওয়ার কথা থাকলেও তারা এখন পর্যন্ত কোন ধরনের সাহায্য সহায়তা পাননি। তাদের সবারই ইলিশের ধরার নিষিদ্ধ মৌসুমে ত্রান সহায়তা পেতে কার্ড থাকা স্বত্তেও তারা কখনো পায়না। সবই চরফকিরা ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যান তাদের দলীয় লোকদেরকে দিয়ে দেয়। তবে সামনে আদৌ পাবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন জেলেরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ ইয়াসিন নতুন ফেনী’কে বলেন, এখানকার মুসাপুর উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেদের একমাত্র ভরসা ইলিশ মাছ ধরে বিক্রি করা। চলতি মাসের শুরু থেকে মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও জেলেদের জন্য সরকার থেকে পাঠানো ত্রান সামগ্রী তারা এখন পর্যন্তও পায়নি। এখন তারা নিরুপায় হয়ে অসহায়ত্ব জীবন যাপন করছেন। এব্যাপারে নোয়াখালীর চরফকিরা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ লিটন’র কাছে জানতে তার মুঠোফোনে কল দিলে ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সম্পাদনা: আরএইচ/এমকেএইচ