১৬ জনের নামে অভিযোগপত্র, সংশ্লিষ্টতা পায়নি ৫জনের • নতুন ফেনীনতুন ফেনী ১৬ জনের নামে অভিযোগপত্র, সংশ্লিষ্টতা পায়নি ৫জনের • নতুন ফেনী
 ফেনী |
২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

১৬ জনের নামে অভিযোগপত্র, সংশ্লিষ্টতা পায়নি ৫জনের

নতুন ফেনীনতুন ফেনী
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৪:০৩ অপরাহ্ণ, ২৯ মে ২০১৯

সোনাগাজীর মাদসারা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ফেনীর সিনিয়র জুডিশয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে মামলার তদারককারী পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম আদালতে উপস্থিত হয়ে আসামীদের সার্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড চেয়ে ৮২২ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করেন।

পরে পৌনে তিনটার সংবাদকর্মীদের ব্রিফ করেন পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল। এসময় তিনি বলেন, নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করে আজ (বুধবার) আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছি। সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১৬ জনের নামে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে মামলার এজহার নামীয় ৮জন ও এজহার বর্হিভূত তদন্তে প্রাপ্ত ৮জন। আমরা সকল আসামীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড চেয়ে সুপারিশ করেছি।

তিনি আরো বলেন, গত ১০ এপ্রিল থেকে মোট ৫০ দিনে ৩৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দাখিল করেছি। এ মামলায় সর্বমোট ৯২জন স্বাক্ষীর মধ্যে ৬৯জন স্বাক্ষী স্বাক্ষ্য দিয়েছেন। অপর স্বাক্ষীরা হলেন বিশেষজ্ঞ, বাদী, মামলার তদন্তকর্মকর্তা ও সিজারলিষ্টের স্বাক্ষী। এ মামলায় ৭জন স্বাক্ষী ১৬৪ ধারায় স্বাক্ষ দিয়েছেন ও ১২ আসামী নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

ওসি মেয়াজ্জেমকে এ মামলার অভিযোগপত্রে কেন আনা হয়নি সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মো. ইকবাল বলেন, তার বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তার সংশ্লিষ্ট বা কর্মে কি অবহেলা পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত কমিটি সে রিপোর্ট দিয়েছেন ও সেই রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

নুসরাতের মায়ের দায়ের করা শ্লীলতাহানির মামলাটিও পিবিআই তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে ওই মামলার অভিযোগপত্র অল্প সময়ের মধ্যে আদালতের দাখিল করা হবে।

এসময় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. শাহ আলমসহ পিবিআইয়ে বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাচিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌও আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা/শম্পা (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামলীগের সভাপতি ও মাদরাসার সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০)।

এছাড়া নুসরাত হত্যা মামলায় অভিযুক্ত গেপ্তার সহপাঠি আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলামকে অভিযোগে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।

এ মামলায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগিরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা ৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে মারা যায় নুসরাত জাহান রাফি।

এ ঘটনা তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামালা দায়ের করেন। মামলার এজহারভূক্ত ৮ আসামীসহ এখন পর্যন্ত ২১জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।

সম্পাদনা:আরএইচ/এইচআর

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.