ফেনীতে দপ্তরি হত্যায় চারজন অংশ নেয় • নতুন ফেনীনতুন ফেনী ফেনীতে দপ্তরি হত্যায় চারজন অংশ নেয় • নতুন ফেনী
 ফেনী |
২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ফেনীতে দপ্তরি হত্যায় চারজন অংশ নেয়

নিজস্ব প্রতিনিধিনিজস্ব প্রতিনিধি
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৯:২৩ অপরাহ্ণ, ১২ জুন ২০১৯

শুধুমাত্র ঈদের আগে পাওয়া চাকুরীর বেতন ও বোনাসের টাকার জন্যই ফেনী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী সফি উল্যাহকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ৩০ মে রাতে নৈশপ্রহরীকে হত্যার পর তাঁর বাসা থেকে নগদ টাকা ও কিছু স্বর্ণালঙ্কার লুট করা হয়। এ কাজে তারা চারজন অংশগ্রহন করে। তিনজন ঘরে ঢোকে তাঁকে খুন ও লুট করে, একজন বাসার বাইরে প্রহরায় ছিল। তারা হলেন- সোহেল হাওলাদার (২৪) তার ভাই মো. রনি (১৬), মো. ইয়াছিন সাকিব কাজী (১৬) ও মেহেদী হাসান রাব্বী (১৬)। চার আসামীকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

বুধবার বিকেলে ফেনীর অতিরিক্ত মূখ্য বিচারিক হাকিম তাওহিদুল হকের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে নৈশপ্রহরী হত্যাকান্ডে অংশগ্রহনকারী মো. রনি (১৬), মো. ইয়াছিন সাকিব কাজী (১৬) নামে দুইজন কিশোর দায় স্বীকার করে। দুইজনের পৈত্রিক বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার পঞ্চকরণ ও সুনিজর গ্রামে। দীর্ঘদিন থেকে তারা পরিবারের সঙ্গে ফেনী শহরের গাজী ক্রসরোডে ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। মো. রনি শহরের মহিপাল এলাকায় একটি গণমিলনায়তনে বয়ের কাজ ছাড়াও যখন যে কাজ পায়-সে কাজ করে থাকে। মো. ইয়াছিন সাকিব কাজী ঢালাই মিস্ত্রির কাজ করে।

জবানবন্দি প্রদান শেষে আসামী মো. রনি ও মো. ইয়াছিন সাকিব কাজীকে ফেনী জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত জাতীয় কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এর আগে গত মঙ্গলবার অপর আসামী মেহেদী হাসান রাব্বী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে খুনের ঘটনা স্বীকার করেছে। এনিয়ে এ মামলার চার আসামীর মধ্যে তিনজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।

অপর আসামী সোহেল হাওলাদার ওরফে ঘোড়া সোহেলকে বুধবার আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ৩০ মে রাতে শহরের গাজী ক্রসরোড এলাকায় ভাড়া বাসায় ফেনী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী সফি উল্যাহকে হাত-পা ও মুখ বেধে নির্মম ভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরদিন সফি উল্যার ছেলে বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামীর বিরুদ্ধে ফেনী সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাঈন উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, তদন্ত শেষে সোমবার রাতে মেহেদী হাসান রাব্বী (১৬) নামে এ কিশোরকে এবং মঙ্গলবার রাতে সোহেল হাওলাদার (২৪) তার ভাই মো. রনি (১৬), মো. ইয়াছিন সাকিব কাজীকে (১৬) গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার ফেনীর অতিরিক্ত মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে মো. রনি, মো. ইয়াছিন সাকিব কাজী নৈশপ্রহরী হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেছে।

সাকিব আদালতকে জানায়, হত্যাকান্ডের ঘটনাটি সে আগে থেকে জানতো না। রনি নামে তার এক বন্ধু ওই দিন সন্ধ্যায় কাজ আছে বলে ওই স্থানে তাকে ডেকে নেয়। সেখানে রনির বড় ভাই সোহেল হাওলাদার ও রাব্বি নামে অপর একজনকে দেখতে পায়। সে নৈশ প্রহরীর ঘরের বাইরে পাহারার দায়িত্বে ছিল। তারা তিনজন নৈশ প্রহরীর ঘরে ঢুকে। খুনের পর তারা তাঁর বেতন-বোনাসের টাকা ও অলংঙ্কার নিয়ে বের হয়ে চলে যায়। ঘটনা শেষে সাকিবকে সোহেলের ভাই রনি ১০ হাজার টাকা দেয় এবং সফি উল্যার মোবাইল ফোনটি বিক্রি করতে দেয়। স্বর্ন বিক্রির টাকার ভাগ পরে দিবে বলে জানায়।

ফেনী সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম পলাশ জানান, সফি উল্যা খুনের ঘটনায় বুধবারসহ তিনজন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে দায় স্বীকার করেছে। অপর আসামী সোহেল হাওলাদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
সম্পাদনা: আরএইচ/এনজেটি

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.