হত্যার পর সেনা সদস্যের লাশ ভাসিয়ে দেয়ার অভিযোগ • নতুন ফেনীনতুন ফেনী হত্যার পর সেনা সদস্যের লাশ ভাসিয়ে দেয়ার অভিযোগ • নতুন ফেনী
 ফেনী |
১৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

হত্যার পর সেনা সদস্যের লাশ ভাসিয়ে দেয়ার অভিযোগ

মিরসরাই প্রতিনিধিমিরসরাই প্রতিনিধি
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৭:১৮ অপরাহ্ণ, ১৬ জুন ২০১৯

মিরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলে কর্মরত সাবেক এক সেনা সদস্যকে হত্যার পর তার লাশ খালে ভাসিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিখোঁজের দুইদিন পর রোববার (১৬ জুন) দুপুরে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল সংলগ্ন মঘাদিয়া ইউনিয়নের বদিউল্ল্যা পাড়া এলাকার একটি খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। নিহতের নাম মো. নান্নু মিয়া (৫৫)। তিনি নামে সাবেক সেনা সদস্যের (ল্যান্স কার্পোরাল)। মো. নান্নু মিয়া মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে করিম গ্রæপের আওয়াতাধীন ওয়াহিদ কন্সস্ট্রাশনের নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার পশ্চিম দারাখোলা গ্রামের মো.আবদুল হকের ছেলে।

মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ওয়াহিদ কন্সস্ট্রাকশনে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, মো. নান্নু মিয়াকে গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সন্ধ্যার পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। কোম্পানীর মালামাল লুট করতে না পেরে দূর্বৃত্তরা তাকে মেরে ফেলে দেয় বলে কর্মরত শ্রমিকদের সন্দেহ হয়। অর্থনৈতিক অঞ্চলে ওয়াহিদ কন্সস্ট্রাকশনে কর্মরত শ্রমিক ও কর্মকর্তারা গত দুইদিন ধরে নান্নু মিয়াকে খোঁজাখুঁজি করে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে রোববার সকালে অর্থনৈতিক অঞ্চল সংলগ্ন মঘাদিয়া ইউনিয়নের বদিউল্যা পাড়া এলাকার একটি খালে তার লাশ ভাসতে দেখা যায়। পরে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারকারী ইব্রহীম নামে একজন জানান, নিহতের শরীর গরম পানি দিয়ে ঝলসে দেয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার নাক, কান কেটে ফেলা হয়, চোখ উপড়ে ফেলা হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপানো দাগ রয়েছে।

কোম্পানীর প্রজেক্ট ম্যানেজার আবুল কালাম সাংবাদিকদের জানান, ‘গত ২৮ মার্চ বোট নিয়ে বামনসুন্দর খাল হয়ে সাগরে দিকে যাচ্ছিলাম পথিমধ্যে দেখা যায় মেরিন ড্রাইভের বাধেঁর কাজ চলছে। বিপরীত টানেলে বোট ফিরলাম তখন দেখলাম পিছন দিক থেকে চায়না হারবারের একটি ট্রলার আমাদের ধাওয়া করে আমাদের উপর হামলা করে। এছাড়াও আমাদের সাথে থাকা বোটটি রেখে দেয়। বিষয়টি আমরা ইকোনমিক জোন পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দিই। বিষয়টি সেখানে মীমাংসা হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ ১৪ জুন শুক্রবার বিকাল ৫টায় আমাদের এক কর্মচারী বোট নিয়ে খালে গেলে চায়না হারবারের ভাসমান ড্রেজার দিয়ে ওর উপর আক্রমণ করে। তাৎক্ষণিক সে বোটটি রেখে প্রাণ বাচানো জন্য চলে আসে। বিষয়টি আমি আমাদের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর ইঞ্জিনিয়ার মো. রেজা স্যারকে অবহিত করি। পরবর্তীতে বোটটি নিয়ে আসার জন্য নান্নু সহ ৭জনকে দায়িত্ব দিই। ওরা রাত ১১টায় বোটটি আনার জন্য গেলে চায়না হারবারের লোকজন দলবল নিয়ে ওদের উপর হামলা করে এবং ৬জন কোনো রকম প্রাণে বেচে চলে আসতে সক্ষম হয়। কিন্তু নান্নুকে ওরা ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এই বিষয়য়ে পুলিশকে জানালে তারা ব্যবহৃত গাড়ি না থাকার অজুহাতে আসতে পারবেনা বলে জানায়। তিনদিন নিখোঁজের পর একটি খালে নান্নুর ভাসমান মৃতদেহ আজ সকালে পাওয়া যায়।

নিহত নান্নুর স্ত্রী সুলতানা মাফিয়া মনিরা কেঁদে কেঁদে বলেন, আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। কোম্পানীর সাথে চায়না হারবারের শুত্রæতার বলি হয়েছে আমার স্বামী। আমি ৩জন ছেলে মেয়ে কে নিয়ে কার কাছে যাবো? কোথায় যাবো? অবিলম্ভে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবী করছি।

জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান জানান, নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এটি একটি হত্যাকান্ড বলে ধারনা করা হচ্ছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে এবং কারা এর সাথে জড়িত তাদের বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আবেদ আলী জানান, সাবেক সেনা সদস্য হত্যার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) প্রেরণ করা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সম্পাদনা: আরএইচ/এমইউ

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.