বিশেষ প্রতিনিধি>>
ফেনীর ২শ’ ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই দীর্ঘ দিন ধরে। এতে করে পাঠদান ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি স্কুলের প্রশাসনিক কাজে নেমে এসেছে স্থবিরতা । এছাড়াও জেলায় ৩শ’ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বন্ধ থাকা ও সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি না থাকায় ফেনীর ৫শ’ ৫৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২শ’ ৩টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যসূচী অনুযায়ী প্রয়োজনীয় গাইড লাইন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দারুন ভাবে ব্যাহত হচ্ছে এ জেলার শিশু শিক্ষা কার্যক্রম। প্রধান শিক্ষকের শূন্যতায় অনেকটা দায়সারা গোছেই সহকারী শিক্ষকরা পাঠদানের নামে সময় পার করছেন বলে অভিযোগ অভিভাবক মহল থেকে। শিক্ষক শূন্যতার কারনে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
সূত্র আরো জানায়, ফেনী সদর উপজেলার ১শ’ ৫১টি স্কুলের মধ্যে ৫০ জন প্রধান শিক্ষক ও ৮০ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সোনাগাজীতে ১শ’ ৯টি স্কুলের মধ্যে ৫০ জন প্রধান শিক্ষক ও ৮৭ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য। ফুলগাজীতে ৬৫টি স্কুলের মধ্যে ২৪ জন প্রধান শিক্ষক ও ৩৪ জন সহকারী শিক্ষক, পরশুরামে ৫১টি স্কুলের মধ্যে ১৭ জন প্রধান শিক্ষক ও ৩৩ জন সহকারী শিক্ষক, ছাগলনাইয়ায় ৭৮টি স্কুলের মধ্যে ২৯ জন প্রধান শিক্ষক ও ৩২ জন সহকারী শিক্ষক এবং দাগনভূঞায় ১শ’ ২টি স্কুলের মধ্যে ৩৩ জন প্রধান শিক্ষক ও ৭৮ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।
খালেদুল আশরাফ নামের মিয়ার বাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, হেড স্যার না থাকায় অন্যন্য স্যাররা ঠিক মত ক্লাশ না করে অফিসে বসে গল্প করে। ডাকতে গেলে স্যারেরা ভয় দেখায়, রাগ করে।
চান্দলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবক জাফর আহাম্মদ খান জানান, প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় গাইড লাইন্স পাচ্ছেনা। সিলোবাস অনুযায়ী পড়ালেখাও ব্যাহত হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সহকারী শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক না থাকলে সহকারী শিক্ষকদেরকেই প্রশাসনিক কাজগুলো সারতে হয়। কিন্তুু এর জন্য বাড়তি কোন সুবিধা না থাকায় দাপ্তরিক কাজ করতে শিক্ষকদের আগ্রহ থাকেনা।
সোনাগাজীর দক্ষিণ পশ্চিম চরছান্দিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সমীর মজুমদার নতুন ফেনী’কে বলেন, বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষকের মধ্যে ২ জনের পদ শূন্য। একজন অবসরে চলে গেছেন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় একজন অতিথি শিক্ষক শ্রেনী কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। কোন কাজে বাহিরে যেতে হলে স্কুলটি বন্ধ করেই যেতে হয়।
সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আবু ইউছুফ নতুন ফেনী’কে জানান, বিধি মোতাবেক ৬৫ ভাগ সহকারী শিক্ষক পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষক হয়ে থাকেন। কিন্তুু গত ৬ বছর যাবত পদোন্নতি বন্ধ থাকায় শুন্য পদের সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা শিক্ষা অফিসার বিলকিছ আরা নতুন ফেনী’কে জানান, ইতোমধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম চলছে। নতুন শিক্ষক নিয়োগ হলে চলমান শিক্ষক সংকট কেটে যাবে। এছাড়াও নানা জটিলতায় সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি বন্ধ থাকায় দিন দিন শিক্ষক সংকট বাড়ছে।
সম্পাদনা: আরএইচ/এনকে
ফেনীতে ২০৩ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই







