এক.
ঘোলাপানির ঝোল
দিনটি ছিল ৮ই ফালগুন
রক্ত ঝরার দিন,
নামলো মাঠে দামাল ছেলে
শোধতে মায়ের ঋণ।
ঝড়ের বেগে উঠলো জেগে
দামাল ছেলের দল,
ঢাকার বুকে নামলো সেদিন
রক্তনদীর ঢল।
রক্তনদীর লহু হাওয়ায়
উঠলো দারুণ ঝড়,
ঝড়ের মুখে উপড়ে গেলো
উর্দুভাষার খড়।
কায়েম হলো ফের ধরাতে
বাংলামায়ের বোল,
পাকহানাদার খেয়ে গেলো
ঘোলাপানির ঝোল।
দুই.
ভাষার জয়
চেপে দিতে চাইলো ওরা
উর্দুভাষার ভূত,
রাগে ক্ষোভে নামলো মাঠে
বাংলামায়ের পুত।
ভূত তাড়াতে হাতে নিলো
সর্ষেদানার বীজ,
বুঝলো তখন পাকহানাদার
বাংলা কেমন চিজ।
জ্বললো আগুন ঢাকার মাঠে
পেলো ভূতে ভয়,
দামাল ছেলের রক্তদানে
আসলো ভাষার জয়।
তিন.
বায়ান্ন
আগুন ঝড়ে উঠলো কেঁপে
সেই বায়ান্নের সাল,
পাকবুলেটে ঢাকার জমিন
হলো লালে লাল।
রক্তনদীর ঢেউ’র মাঝে
ছিলো দারুণ ঝাল,
ঝাল আগুনে পুড়লো শেষে
উর্দু নৌকার পাল।
ভেস্তে গেলো পাকবাহিনীর
নোংরা যতো চাল,
অবশেষে নিজের চালথই
হলো তাদের কাল।
উপচে পড়া রক্ত ঢেউ’য়ে
হারায় শেষে তাল,
ছিন্নভিন্ন হলো তাদের
ষড়যন্ত্রের জাল।
চার.
রাষ্ট্রভাষা
উর্দু হবে রাষ্ট্রভাষা
করলো নোটিশ জারি,
এমন খবর সাওর হলো
বাংলামায়ের বাড়ি।
বাংলামায়ের দামাল ছেলে
উঠলো ক্ষোভে ফেটে,
রাষ্ট্রভাষা বাংলা হবে
তৃষ্ণা যাতে মেটে।
প্রতিবাদের দাবানল ওই
জ্বললো ঢাকার বুকে,
উর্দুভাষা উড়ে গেলো
দাবানলের ফুঁকে।
বাংলা হলো রাষ্ট্রভাষা
রক্তনদীর বানে,
বাংলামায়ের দামালছেলে
দেশ বাঁচাতে জানে।
পাঁচ.
শহীদ সালাম
ফেনীর ছেলে শহীদ সালাম
বায়ান্নের ওই বীর,
বেয়নটের সামনেও তাঁর
হয়নি নতো শীর।
আনতে বিজয় মায়ের ভাষার
যুদ্ধে দিলো ঝাঁপ,
সাহস দেখে হানাদারের
উঠলো বুকে কাঁপ।
ছুঁড়লো বুলেট পাকহানাদার
ঝাঁঝরা হলো বুক,
বুকের রক্তে তুললো মাতম
দাবানলের ফুঁক।
দাবানলের ফুঁকে জ্বললো
ষড়যন্ত্রের জাল,
জীবন দিয়ে ছিঁড়ে দিলো
উর্দুনৌকার পাল।







