সোনাগাজী উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের ভীড় কমিয়ে সঠিকভাবে সেবা দিতে ও মঙ্গলকান্দি নবাবপুর চরমজলিশপুর বগাদানা ইউনিয়নসহ সাধারণের মানুষের সুধার্থে মঙ্গলকান্দি ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়।
কিন্তু অবকাঠামো নির্মানের সাড়ে ৫ বছরেও জনবল ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে সোনাগাজীর মঙ্গলকান্দি ২০ শয্যার সরকারি হাসপাতালটি চালু করা যায়নি। সরকারের প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত এই হাসপাতালটি এখনও চালু না হওয়ায় তা এলাকাবাসীর কোন কাজে আসছে না।
২০১৩ সালের জুলাই মাসে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও জনবল ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে এখনো চালু হয়নি। একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসারকে ডেপুটেশনে দিয়ে নামকাওয়াস্তে আউটডোর চালু করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন হাসপাতালটি কবে পূর্ণাঙ্গ ভাবে চালু হবে? কবে মানুষ চিকিৎসা সেবা পাবে? এলাকাবাসীর প্রাণের দাবী জরুরী ভিত্তিতে যেন এই হাসপাতালের সকল কার্যক্রম চালু করা হয়।
এই হাসপাতালটি চালু হলে সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি, চর মজলিশপুর, বগাদানা, মতিগঞ্জ, চরদরবেশ, আমিরাবাদ, নবাবপুর ও ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের আড়াই লাখ লোক চিকিৎসা সেবা পাবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নির্মাণকাজে ত্রুটির কারণে হাসপাতাল ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে মাত্র সাড়ে ৫ বছরে। ময়লা আবর্জনায় ভরা জরাজীর্ণ হাসপাতালের লোহার গ্রিল, জানালা, দরজা ও কাচের গøাস ভেঙে গেছে। হাসপাতাল ভবন, ডাক্তার কর্মচারীদের বাসাসহ পুরা কমপ্লেক্স এলাকা অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। কোনো কিছুই কাজে লাগছে না। সব কিছুই বছরের পর বছর পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও হাসপাতালটিতে নেই নিরাপত্তার জন্য নৈশপ্রহরী।
২০১৩ সালের জুলাই মাসে নির্মাণ কাজ শেষ হলে ৯ সেপ্টেম্বর সিভিল সার্জন এবং সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের মেসার্স রয়েল অ্যাসোসিয়েট অ্যান্ড দেশ উন্নয়ন লিমিটেড ভবনটি বুঝিয়ে দেন। কিন্তু চিকিৎসা কার্যক্রম কখন শুরু হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। ফেনী-সোনাগাজী সড়কের ডাকবাংলা এলাকায় হাসপাতালটি নির্মাণ করা হলেও স্বাস্থ্যবিভাগ ৫ বছরেও প্রয়োজনীয় জনবল, যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র বরাদ্ধ দেয়নি। যে কারণে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী।
মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের ৮নং ওয়াডের ইউপি সদস্য জাফর ইকবাল বলেন, হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় আমাদের চিকিৎসায় অসুবিধা হচ্ছে। বিশেষ করে গরিব অসহায় রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমাদের দাবি অবিলম্বে হাসপাতালটি চালু করা হোক।
বটতলা গ্রামের শহিদুল ইসলাম সোহেল বলেন, কী কারণে হাসপাতালটি চালু হচ্ছে না তা জানি না। তবে হাসপাতালটি চালু হলে আমরা চিকিৎসা নিতে পারতাম। তাই দ্রæত হাসপাতালটি চালুর দাবি জানাচ্ছি।
সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: নুরুল আলম নতুন ফেনী’কে জানান, হাসপাতালটিতে বর্তমানে একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) শাহেদা আক্তার ও এমএলএসএসের এরশাদ উল্যাহ নামের একজন পিয়নকে প্রেষণে দিয়ে কোনো মতে বহির্বিভাগে চালু করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়া অন্য কোনো চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। হাসপাতালটি চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল, যন্ত্রপাতি, ঔষুধ, আসবাবসহ আনুষঙ্গিক সামগ্রীর জন্য সিভিল সার্জনের মাধ্যমে মন্ত্রনালয়ে চিঠি লেখা হয়েছে।
তবে সিভিল সার্জন অফিস থেকে বন্যা দূর্গতদের জন্য বরাদ্দ দেয়া ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে কিছু ঔষধ সামগ্রী দিয়ে কোনো রকম প্রাথমিক চিকিৎসাহ দেয়ার চেষ্টা করতেছি। তিনি আরো জানান, পদ সৃষ্টি করে ৩৯তম বিসিএসের নিয়োগের মাধ্যমে জনবল পদায়ন করা হলে হাসপাতালটি ভালো ভাবে চালুর সম্ভবনা রয়েছে।
সম্পাদনা: আরএইচ/এএইচআর







