ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল ফ্লাইওভারের দক্ষিণ মাথায় দক্ষিণ চাড়িপুর গ্রামে সম্প্রতি একটি ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রীজটি নির্মাণ কাজ শেষে পথচারীদের জন্য উম্মুক্ত করা হলেও এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়নি। ব্রীজটি নির্মাণের ফলে মহাসড়ক পারাপারের পথচারী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বস্তি নেমে এসেছে। মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী জানান, জনসমস্যা সমাধানে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এ ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করা হয়েছে। আমার বাবার নামে ‘রফিকুল ইসলাম মিয়াজী ফুটওভার ব্রীজ’টির নামকরণ করা হয়েছে। আগামী মাসের যে কোন সময়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি অথবা ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর মাধ্যমে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।
স্থানীয়রা জানায়, মহাসড়কের ফ্লাইওভারের দক্ষিণ মাথায় রাস্তার দুই পাশেই রয়েছে বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসাসহ মহিপালমুখি লেইন। এ এলাকার পথচারী ও শিক্ষার্থীরা রাস্তাপারাপারের সময় প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনার শিকার হতেন। বিশেষ করে রাস্তার পশ্চিম পাশে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর বিদ্যাপীঠ আলহাজ্ব কোব্বাদ আহাম্মদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ব পাশে মহিপাল মহিউচ্ছুন্নাহ মাদ্রাসা, শাহীন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজসহ বিভিন্ন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুকি নিয়ে মহাসড়ক পারপার করতে বাধ্য হতেন। ৪ লেনের মহাসড়ক বাস্তবায়নের পর ওই এলাকায় রাস্তা পারাপার আরো ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় ফেনীর সড়ক ও জনপথ বিভাগ ২০২০-২১ অর্থ বছরে ওই স্থানে ৫১ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে এটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে জনচলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হয়।
আলহাজ্ব কোব্বাদ আহাম্মদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তামিম ও সাজিয়া জানান, ব্রীজটি হওয়ার আগে রাস্তা পার হওয়ার জন্য অনেকক্ষণ দড়িয়ে থাকতে হতো। বড়রা কেউ রাস্তা পারাপারের জন্য এলে আমরা তার সহযোগিতা নিয়ে রাস্তা পার হতাম। দ্রুতযানগুলো দেখলে অনেক ভয় লাগতো। অনেক সময় লেগে যেতো। এখন আর কোন ভয় নেই। বরং ফুটওভার ব্রীজ পার হওয়ার সময় বিনোদন পাই। ভালো লাগে।
চাড়িপুর আলহাজ্ব কোব্বাদ আহাম্মদ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক একেএম জহির উদ্দিন জানান, ব্রীজটির ওপার থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠানে অন্তত ২শতাধিক শিক্ষার্থী আসে। যখন ব্রীজটি ছিলোনা; তখন অনেক দূর্ঘটনা ঘটতো। শিক্ষার্থীরা অনেক ভয়ে ভয়ে রাস্তা পার হতো। রাস্তা পার হওয়ার সুযোগে পেতে কখনো কখনো অনেক সময় শিক্ষার্থীদের রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকতে হতো।
ফেনী শাহীন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ’র অধ্যক্ষ একরামুল হক ভূইয়া জানান, ফুটওভার ব্রীজটি বাস্তবায়নের পূর্বে আমাদের শিক্ষার্থীরা ওই এলাকা পার হতে নানা দুশ্চিন্তায় পড়তে হতো। রাস্তা পারাপারের বিষয়ে অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন থাকতো। বর্তমানে এখানে ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ হওয়ায় এখন আর কোন দুশ্চিন্তা নেই। সবাই স্বাচ্ছন্দে ফুটওভার ব্যবহার করে রাস্তা পার হতে পারছে।