ফেনীতে ৫০ টি হজ্ব এজেন্সি থাকলেও এদের মধ্যে মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ওই সূত্র জানায়, ১৫ ডিসেম্বর থেকে ৫ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত ২০১৫ সালের হজ্ব বুকিং এর ধার্য্য সময়। সরকারি নিয়মানুযায়ী বৈধভাবে ফেনীতে হজ্ব যাত্রী সংগ্রহ হয়েছে ২শ ৫৮ জন। বাকী ৪৮টিতে সংগ্রহ হয়েছে ৪ হাজার ৫শ থেকে ৫ হাজার। এসব যাত্রীদের টিকিট থেকে শুরু করে বাড়ী ফেরা পর্যন্ত নির্ধারিত টাকার চেয়েও অতিরিক্ত গুনতে হবে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে। মৌসুম এলেই চটকদার বিজ্ঞাপন, রং-বেরঙের পোষ্টার-পেষ্টুন ও লিফলেট ছাপিয়ে নানাভাবে প্রচারনা করে এসব প্রতিষ্ঠান। সরকারী খরচের চেয়ে কম খরচে নিরাপদে হজ্ব পালনের কথা বলে প্রথমে ১৫ হাজার টাকা কম নিয়ে প্রলুদ্ধ করে। মুখরোচক কথা বলে যাত্রীদের কাছ থেকে নেয়া হয় পাসপোর্ট। এরপরই যাত্রীরা জিন্মি হয়ে যায় হজ্ব এজেন্সি নামধারী এসব দালালদের কাছে। পরে নানা অজুহাতে তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয় ৫০ হাজার টাকা কিংবা তারও বেশি। চুক্তিভিত্তিক এসব এজেন্সিগুলো বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির হাতে তুলে দেয় এসব হজ্ব যাত্রীদের। ‘ভাল খাবার, ভাল বাড়ি, সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধার’ কথা বলা হলেও তাদের রাখা হয় হজ্ব পালনের স্থান থেকে ৮ থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে। ৩ জনের বেশি থাকার জায়গা না থাকলেও একটি কক্ষে গাদাগাদি করে থাকতে হয় ৬-৭ জনকে। কোরবানী দিতে বাংলাদেশী প্রতি হাজ্বীর ব্যাংক ড্রাফট বাবত ৩-৪ থেকে টাকা খরচ হওয়ার কথা থাকলে আদায় করা হয় ২০-২৫ হাজার টাকা। ২০১৪ সালে জালাল আহমদ নামের এক হজ্ব এজেন্সির মাধ্যমে হজ্বব্রত পালন করতে যান ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল খালেক। তিনি সহ ৪-৫ জন যাত্রীর টিকিট হারিয়ে গেছে বলে ওই এজেন্সির কর্মকর্তারা তাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১ লাখ টাকা আদায় করেন। শুধু আবদুল খালেকই নন, এরকম অসংখ্য ভোগান্তির শিকার হন হজ্ব গমনেচ্ছুরা। আবদুস সাত্তার নামের আরেক হাজ্বী জানান, ২ কিলোমিটার দূরে আমাদের রাখা হয়। ওই জায়গা থেকে নির্দিষ্ট জায়গায় আসতে সরকারি নিয়মানুসারে এজেন্সিগুলো ভাড়া দেয়ার কথা থাকলেও তারা তা বহন করেনা। বাধ্য হয়েই যাত্রীদের ভাড়া বাবত ২-৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত গুনতে হয়।
চলতি সালে সরকারি ধার্যকৃত প্রত্যেক হাজ্বীর খরচ হবে ২ লাখ ৯৬ হাজার ২শ ১৬ টাকা। অথচ ফেনীর যাত্রীদের খরচ হচ্ছে দেড়গুন কিংবা তারও বেশী। এছাড়া জেলা ভিত্তিক ইসলামী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নিরাপদে হজ্ব গমনের সুযোগ থাকলেও প্রচারের অভাবে যাত্রীরা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
হাজ্বীদের অভিযোগ, নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়ে তারা ইসলামিক ফাউন্ডেশনে অভিযোগ দেয়া হয়। কিন্তু তারা তাতে কর্ণপাত না করায় এজেন্সিগুলো খেয়াল খুশি মতই কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেটে ৩ টি জোনে ১১ হাজার ৬শ ৯টি লাইসেন্স রয়েছে। এরমধ্যে বৃহত্তম নোয়াখালীর মালিক রয়েছে ৩শতাধিক। ফেনীতে রয়েছে মাত্র দুটি। ১টি কাজী ট্রাভেলস অন্যটি মীম ট্রাভেলস। মাওলানা জালাল আহমদ হজ্জ কাফেলা, আল-আমিন, আবদুল কাদের, গাজী, ফরাজি ট্রাভেলস, কমফোর্ট, দারুস সুন্নাহ, আবদুল হক, মুফতি মামুন সহ নানা হজ্জ কাফেলারই লাইসেন্স নেই।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন ফেনীর উপ-পরিচালক সরকার সরোয়ার আলম জানান, এখান থেকে যেতে হলে ৪৫ জনের প্যাকেজ কিংবা ১০০ জন হাজ্বী প্রয়োজন। এ কোটা পূরণ না হওয়ায় যাত্রীরা সুবিধা না পেলেও নানা পরামর্শ দিয়ে থাকি।
সম্পাদনা: আরএইচ






