নিজস্ব প্রতিনিধি >>
যুবকদের কৌশলে বাসায় ডেকে ‘নগ্ন ছবি’ তুলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সালমা-আখিঁ নামের দুই নারী প্রতারক চক্রের সদস্য। প্রতারণার অভিনব জাল বিছিয়ে স্বর্বস্ব লুট করে নেয় তারা। মঙ্গলবার রাতে সালমা-আখিঁসহ ৫ প্রতারকে আটকের পর উঠে আসে এ চক্রের অপরাধ বৃত্তান্ত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর কাচারী বাজারস্থ এলাকার সোনাপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের মেয়ে আখিঁ আক্তার স্বর্ণা (২২) ও পরশুরাম উপজেলার দক্ষিন কুলাপাড়া গ্রামের সিরাজ মিয়ার মেয়ে সালমা আক্তার পারভিন (২৯)। শহরের রামপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন তারা। দীর্ঘদিন ধরে নানা অপরাধ কর্মের সাথে জড়িত। অপরিচিত যুবককে কৌশলে বাসায় ডেকে নগ্ন ছবি তুলে চাঁদা আদায় করে।
সালমা-আখিঁ প্রেমের ফাঁদ ফেতে বা কৌশলে বাসায় নিয়ে আসে কোন যুবককে। এরপর পূর্ব থেকে প্রস্তুত থাকা তাদের সহযোগিতা করে ইলিয়াছ, আলম ও রিফাত মারধর করে ওই দুই নারীর সাথে ‘নগ্ন ছবি’ তুলে। ওই ছবি ফেসবুক ও ইন্টারনেটে ছেড়ে য়ার কথা বলে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে।
১৭ আগষ্ট সোমবার ইলাশপুর রকমারী ফিশারী জামে মসজিদের ইমাম ও ব্যবসায়ী মো: তমিজ উদ্দিনকে (৩০) অজ্ঞাত নাম্বার থেকে এক মহিলা ফোন করে জানায়, সে অসুস্থ্য তাকে একটি তাবিজ দিতে বাসায় যেতে বলে। তমিজ উদ্দিন যেতে অপারগতা প্রকাশ করলে সন্ধ্যায় আবারো কল দিয়ে অনুরোধ করে ওই মহিলা। পরে তমিজ উদ্দিন রাত ৮ টার দিকে তার দেয়া তথ্য মতে বাসায় গেলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা ইলিয়াছ, মনজু ও সায়েদসহ তাকে মারধর করে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। একপর্যায়ে সালমা আক্তার পারভিন (২৯) ও আখি আক্তার স্বর্ণাকে (২২) তার পাশে নগ্ন করে বসিয়ে ছবি তুলে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। টাকা দিতে না চাইলে ইন্টারনেট ও পত্রিকায় ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে তমিজ উদ্দিন ৫০ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়। তখন প্রতারকরা তার কাছে থাকা নগদ ১হাজার ৫শ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বাকি টাকার জন্য ইলিয়াছ রিক্সাযোগে তমিজ উদ্দিনকে নিয়ে লক্ষ্মীয়ারা রাস্তার মাথায় তার মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকানে আসে। তখন তমিজ উদ্দিন মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানালে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে বারাহিপুরের ইয়াকুবের ছেলে ইলিয়াছ আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ট্রাংক রোড থেকে ফেনী সদর উপজেলার ইজ্জতপুরের সোলয়মানের ছেলে মনজুরুল আলম (৩৮) নামে আরেক প্রতারককে গ্রেফতার করে। মনজুর আলমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সোমবার রাত ১২টার দিকে রামপুরে নিয়ে নুর আলমের বাসায় অভিযান চালায়। সালমা আক্তার পারভিন ও আখিঁ আক্তার স্বর্ণাকে আটক করা হয়। এঘটনায় তমিজ উদ্দিন বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
ফেনী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার উপ-পরিদর্শক জিয়াউল হক নতুন ফেনী’কে বলেন, আটককৃতদের দেয়া তথ্য যাচাই-বাচাই করে এ চক্রের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
সম্পাদনা: আরএইচ/এনকে