নিজস্ব প্রতিনিধি>>
দেশে প্রথম বারের মত দলীয় প্রতিকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নিজ এলাকা ফেনীতে প্রার্থী সংকটে পড়েছে বিএনপি। নির্বাচন কমিশনের কাছে সময় বাাড়নো দাবী তুলেও শেষমেষ নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। মেয়র পদে ফেনীর তিনটি পৌরসভায় দলীয় প্রার্থী খুুঁজে পেতে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে তাদের।
দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, ফেনী পৌরসভায় সাবেক মেয়র প্রার্থী আলাল উদ্দিন আলালের নাম উঠে আসে সবার আগে। কিন্তু রাজনৈতিক হয়রানী মামলায় দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকা আলাল উদ্দিন আলাল প্রার্থী হতে রাজী হওয়ায় বিপাকে পদে দলটির নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপর সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন আহমেদ মিষ্টারের নাম উঠে আসে। শেষ মেষ ২ ডিসেম্বর মনোনয়ন জমা দেয়ার আগের দিন তাড়াহুড়ো করে ফেনী সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বকুলকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। দলীয় নেতার্মীদের অভিযোগ, বকুলকে নির্বাচন করার জন্য নয় বরং প্রার্থী দেখাতে মনোনয়ন দাখিলের নাটক করে বিএনপি।
একইভাবে দাগনভূঞা পৌরসভায় সাবেক মেয়র প্রার্থী ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছোট ভাই আকবর হোসেনকে প্রার্থী না দিয়ে পৌর বিএনপির সভাপতি কাজী সাইফুর রহমান স্বপন ও পরশুরাম উপজেলায় সাবেক মেয়র ও পরশুরাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু তালেবকে না দিয়ে পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদকে দলীয় মনোনয়ন দেয় বিএনপি।
তিনটি পৌর সভার ৩৬ টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ১২টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর দিতেও ব্যর্থ হয় বিএনপি। বৃহস্পতিবার মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ফেনীর তিনটি পৌর সভায় ৭ মেয়র প্রার্থীসহ ৮১ কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলর মনোনয়ন জমা দেন। প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী না থাকায় এদের মধ্যে ৩৩ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বদ্ধিতায় জয়ের পথে এগিয়ে রয়েছেন।
ফেনী পৌরসভা নির্বাচনে শুধু মাত্র ১নং ওয়ার্ডে আশ্রাফুল আলম গীটার, ২নং ওয়ার্ডে লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, ৩নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর কোহিনুর আলম, ৪নং ওয়ার্ডে মজিবুর রহমান ভূঞা, ৫নং ওয়ার্ডে জয়নাল আবদীন লিটন, ৭নং ওয়ার্ডে বাহার উদ্দিন বাহার, ৯নং ওয়ার্ডে সিরাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, ১০নং ওয়ার্ডে মাহতাব উদ্দিন মুন্না, ১১নং ওয়ার্ডে গোলাম মেহেদী আলম চৌধুরী রুবেল, ১৩নং ওয়ার্ডে নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ১৫নং ওয়ার্ডে আবু ইউসুফ ভূঞা বাদল, ১৭নং ওয়ার্ডে মো: মানিক মনোনয়ন পত্র জমা দেন। এছাড়া সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে সাহেদা আক্তার চাঁপা; ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডে মোসাম্মৎ জেসমিন আক্তার; ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে সেলিনা চৌধুরী সেলী; ১০, ১১ ও ১২নং ওয়ার্ডে আমেনা মজুমদার মনোনয়ন পত্র জমা দেন। এদের উভয়ই আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থী বলে জানা যায়।
দাগনভূঞা পৌর নির্বাচনে ৩ নং ওয়ার্ডে আলি আহাম্মদ, ৫নং ওয়ার্ডে মনিরুজ্জামান সবুজ, ৬ নং ওয়ার্ডে মো: হানিফ, ৯ নং ওয়ার্ডে মহিউদ্দিন জুয়েল মনোনয়ন পত্র জমা দেন। একই ভাবে ১,২,৩ নং ওয়ার্ডে মারজাহান হোসেন, ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডে শাহনাজ আক্তার, ৭,৮,৯ জাহান আরা বেগম মনোনয়ন পত্র জমা দেন। ফলে আগামী ৫ ও ৬ ডিসেম্বর মনোয়ন যাচাই-বাচাইয়ে কোন ধরণের অঘটন না ঘটলে তিন মহিলা প্রার্থীসহ ৭ কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় বিজয় লাভ করবে।
পরশুরাম পৌরসভায় ১ নং ওয়ার্ডে আবদুল মান্নান লিটন, ২ নং ওয়ার্ডে খোরশেদ আলম, ৩ নং ওয়ার্ডে আবু তাহের বাঘা , ৪ নং ওয়ার্ডে আবদুল মান্নান, ৫ নং ওয়ার্ডে উপজেলা এনামুল হক এনাম, ৬ নং ওয়ার্ডে কামাল উদ্দিন , ৭ নং ওয়ার্ডে নিজাম উদ্দিন সুমন, ৮ নং ওয়ার্ডে রাসুল আহাম্মদ মজুমদার স্বপন, ৯ নং ওয়ার্ডে আবু সাহাদাত চৌধুরী লিটন ও সংরক্ষিত ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডে রাহেলা আক্তার ছাড়া অন্য কোন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেনি।
এ বিষয়ে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন মিষ্টার বলেন, রাজনৈতিক হয়রানী ও মামলা হামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বেশির ভাগই করাগারে, অনেকে আবার পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। প্রার্থী নির্বাচনে সামান্য বেগ পেতে হলেও যোগ্য ব্যাক্তিদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে বলে তিনি জনান।
সম্পাদনা: আরএএইচ