এলার্জী চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি • নতুন ফেনীনতুন ফেনী এলার্জী চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি • নতুন ফেনী
 ফেনী |
২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

এলার্জী চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি

রাশেদুল হাসানরাশেদুল হাসান
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৩:৩৮ অপরাহ্ণ, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
ডা. ছরওয়ার আলম।
জোৎস্না আক্তার লাভলী (২২)। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজীর ছাত্রী। ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৩ খ্রি. তারিখে আমাদের নিকট তার এলার্জী, চুল ঝরা ও খুশকীর চিকিৎসার জন্য আসলেন। রোগী হালকা পাতলা গঠনের।
লাভলী জানান, গত ১ বছর ধরে তার এলার্জী দেখা দিয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাকা চাকা হয়ে ফোলে উঠে, আক্রান্ত স্থানে তাপ থাকে ও লাল হয়ে যায়, খুব চুলকায়, চুলকিয়ে  অনেক সময় আক্রান্ত স্থান ছিড়ে ফেলি, তখন ঐ স্থান থেকে কোন কোন সময় আঁইশ উঠে, মাঝে মাঝে পানি যায়। শীতে, গরমে, রাত্রে বাড়ে। খাবারের মধ্যে ঢেড়শ, পুঁইশাক, চিংড়ি, গরুর মাংস ইত্যাদি খেলে সাথে সাথে বাড়ে। এর জন্য এতদিন বিভিন্ন চিকিৎসা করেছেন কিন্তু স্থায়ী আরোগ্য হচ্ছেনা। রোগীনি যেহেতু রোগজীবাণু নিয়ে লিখাপড়া করেন, তাই এলার্জী ও ইহার চিকিৎসা এবং ইহার আরোগ্যের সীমাবদ্ধতা বিষয়ে তার সাধারণ ধারনা আছে। তিনি জানান, শিশুকালেও তার এলার্জীর সমস্যা সহ আনুসঙ্গিক অন্যান্য অসুস্থ্যতার জন্য হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সেবন করে এত বছর ভাল ছিলেন। তাই তিনি এলার্জীর চিকিৎসার জন্য উপায়ান্ত না দেখে আবার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের নিকট এসেছেন।
তিনি আরো জানান, পাঁচ বছর ধরে তার মাথার চুল ঝরে। মাথায় শুকনো খুঁশকি আছে। বেশ চুলকায়। ছোটকালে প্রায় ঠান্ডা লাগার সমস্যা ছিল, এখন কম। বংশে মায়ের এলার্জী আছে, নানুর বাত, বাবার শ্বাসকষ্ট, মা, বাবার ডায়াবেটিস আছে। তার গরম অসহ্য, ঘাম কম, ঘুম ভাল, হাত পায়ের তালুতে জ্বালা পোড়া বেশী। মাথার তালু গরম থাকে। ঠান্ডা পচন্দ কিন্তু সহ্য হয়না।
রোগীর ক্ষুধা অনুপাতে পুষ্টি কম। লবনাক্ত খাবার পচন্দ। ঝাল, মিষ্টি কম পচন্দ। মাছ, ডিম, দুধ, সবজি পচন্দ। টক ও মাংস প্রিয়। স্বরণশক্তি ভাল, সাহস বেশী, সন্দেহ কম, কাজের মধ্যে থাকলে ভাল থাকে। বিকালে ও সন্ধ্যার দিকে খারাপ লাগে।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে রোগ ধরে কোন চিকিৎসা নাই। তাই শুধু এলার্জীর নামে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। সঠিক চিকিৎসা দিতে হলে রোগীর বর্তমান কষ্টকর উপসর্গ সমূহ, রোগীর সার্বদেহিক লক্ষনাবলীসহ
হোমিওপ্যাথির মূলগ্রন্থ অর্গানন অব মেডিসিনেন নিয়মানুসারে সঠিক রোগীচিত্র তৈরী করতে হয়।
সেই রোগীচিত্রের সাথে, হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সমূহের মধ্যে থেকে, যে ঔষধের লক্ষণাবলীর সাথে রোগীর রোগ লক্ষণের সর্বাধিক মিল পাওয়া যায়, সেই ঔষধেই রোগী আরোগ্যলাভ করে। অবিশ্বাস্য হলেও সেই ঔষধের মাধ্যমে অল্প সময়ে এবং স্থায়ীভাবে বিনা কষ্টে ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীনভাবে রোগী আরোগ্য লাভ করে।
জোৎস্না আক্তার লাভলীর ক্ষেত্রেও আমরা রোগীর পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা নিয়ে ঔষধ নির্বাচন করলাম “আর্সেনিক আয়োডেটাম”। উক্ত ঔষধ সেবনের ৬ মাসের মধ্যে রোগী আরোগ্য লাভ করে। অন্য চিকিৎসা পদ্ধতির ক্ষেত্রে বেশ জটিল ও অসাধ্য ব্যাধি “এলার্জী” তুলনামূলক কম সময়ের মধ্যে নিরাপদে আরোগ্য হওয়াতে রোগী ও তার পরিবার পরিজন বেশ খুশি। সকল প্রশংসা একমাত্র মহান সৃষ্টিকর্তার।
লেখকঃ সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ, ফেনী জেলা।

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.