ডা. ছরওয়ার আলম।
মাকসুদুর রহমান। বয়স ১২ বছর। আমাদের নিকট এসেছেন ‘পা ফাটা’ রোগের চিকিৎসার জন্য। রোগির বাবা জানান, তার ছেলের দীর্ঘ দিন ধরে ‘পা ফাটা’ রোগ দেখা দিয়েছে। অনেক চিকিৎসা করেছেন, দামি দামি ক্রিম ব্যবহার করেছেন কিন্তু স্থায়ী আরোগ্য হচ্ছে না। হোমিওপ্যাথিতে রোগের স্থায়ী চিকিৎসা হয় শুনে আমাদের নিকট চিকিৎসার জন্য এসেছেন।
রোগী জানান, ‘পা ফাটা’ রোগে তার খুব কষ্ট হয়, হাটতে পারেনা, স্কুলে যেতে পারেনা, প্রথমে এক পায়ে ফাটা দেখা দেয়, এখন উভয় পায়ে ফাটা দেখা দিয়েছে। মোটা চামড়া উঠে, রক্ত যায়। আঠালো পানি যায়। গন্ধ আছে। চুলকায়, রাত্রে বাড়ে। সাবান পানি ও এলার্জী খাবারে বাড়ে। গরম পানিতে আরাম লাগে।
জিজ্ঞাসাবাদে রোগীর বাবা জানান, মাকসুদ অলস ও ভীতু প্রকৃতির, মনে প্রফুল্লতা কম, মন মরা ভাব। পড়তে চায়না। ঠান্ডা সহ্য করতে পারেনা। কানের পেছনেও ভিজা, ফাটা, ব্যথাযুক্ত চর্মরোগ আছে, চুলকায় কষ-পানি যায়, আরোগ্য হচ্ছে না। প্রায় সময় ঠোট ফাটে।মুখে দুর্গন্ধ বেশি, বালিশে লালা পড়ে না।
পায়খানা কষা, ২/৩ দিনে একবার হয়। রোগী মোটাসোটা, তার দেহের তুলনায় পেট বড়। ঘাম কম। সব সময় পেট ব্যথার কথা বলে। ক্ষুধা-রুচি কম। মাছ, মাংস ও মিষ্টি অপচন্দ। অল্পতে ঠান্ডা লাগে। কানে কম শুনে।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় রোগের নামে কোন চিকিৎসা হয়না। রোগের লক্ষণ সাথে রোগির গঠনপ্রকৃতি, রোগের বৃদ্ধি- উপশম, আবহাওয়া গরম-ঠান্ডা সহ্য করার প্রবৃত্তি, খাবারের পচন্দ-অপছন্দ এবং সার্বদৈহিক অন্যান্য কষ্টকর উপসর্গ, সুস্থ্য মানবদেহে পরীক্ষিত হোমিওপ্যাথিক যে ঔষধের সাথে সর্বাদিক মিল পাওয়া যাবে একমাত্র সে ঔষধে অতি অল্প সময়ে, বিনা কষ্টে, স্থায়ীভাবে রোগী আরোগ্য হবে। আমরা মাকসুদুর রহমানের ‘পা ফাটা’ রোগে তার রোগের পূর্ণাঙ্গ রোগিলিপি নিয়ে এবং যতœসহকারে তা মূল্যায়ণ করে তার জন্য ঔষধ নির্বাচন করলাম “গ্রাফাইটিস”। উক্ত ঔষধ সেবনে তুলনামূলক অল্পসময়ের মধ্যে সে আরোগ্য লাভ করে। তার পা ফাটার সমস্যা এখন আর নাই, এখন সে নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ, ফেনী জেলা
সম্পাদনা: আরএইচ/এইচএসটি