গ্যাস্টাইটিসের চিকিৎসা • নতুন ফেনীনতুন ফেনী গ্যাস্টাইটিসের চিকিৎসা • নতুন ফেনী
 ফেনী |
২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গ্যাস্টাইটিসের চিকিৎসা

রাশেদুল হাসানরাশেদুল হাসান
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৫:০৪ অপরাহ্ণ, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ডা. ছরওয়ার আলম।
নাইমুর রহমান (২৭) । একটি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার। তার এক সহকর্মীর পরামর্শে আমাদের নিকট আসেন তার গ্যাস্টাইটিসের চিকিৎসার জন্য। তিনি জানান, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে গ্যাস্টাইটিসে ভুগছেন। প্রথমে কম ছিল এখন দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে এবং স্থায়ী হচ্ছে। এর জন্য ঔষধ খেয়ে যাচ্ছেন কিন্তু একটা ঔষধ দীর্ঘদিন খাওয়ার পর আর কাজ করেনা। এর জন্য বিষণ দুশ্চিন্তায় আছেন, এভাবে আর কতকাল ঔষধ সেবন করবেন।

আমরা রোগীর রোগ কষ্টের পুর্ণ বিবরন জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রথমে শুধু পেট ফাঁপতো, এখন বুকজ্বালা, গলায় শীষ উঠা, টক ঢেকুর উঠা প্রায়ই থাকে, সাথে পেট ফোলা আছে। একটু খেলে পেট ভরে গেছে মনে হয়। পেট শক্ত হয়ে থাকে। ক্ষুধা অনুপাতে খেতে পারেনা। খাবার সহজে হজম হয়না। মিষ্টি খাবারে, ভাজা-পোড়া, তৈলাক্ত খাবারে বাড়ে, বিকালে বাড়ে। খাবারের মধ্যে ডিম, দুধ, সবজি পছন্দ, মিষ্টি প্রিয়। মাংস কম পছন্দ। খাবার সব সময় গরম পছন্দ, ক্ষুধারুচি ভাল। পিপাসা বেশি। বংশে মা বাবা দুজনের গ্যাস্টাইটিস আছে। তার গরম অসহ্য। ঘাম বেশি। হাত-পায়ের তালুতে জ্বালাপোড়া আছে। স্বরণশক্তি কমে যাচ্ছে, সঙ্কোচ মনোভাব আছে, সন্দেহ নাই। একাকী থাকতে ভাল লাগেনা। কাজে থাকলে ভাল লাগে তবে কাজে ধীরতা আছে, সঞ্চয়ী মনোভাব বেশি। আবেগ প্রবণতা বেশি। পায়খানা স্বাভাবিক, প্রস্রাব মাঝে মাঝে হলুদ হয়। সব কষ্ট ঘুমের পর ও বিকালে বাড়ে।

নাইমুর রহমান সাহেব গ্যাস্টাইটিস রোগ ছাড়াও তার পছন্দ অপছন্দ, চিন্তা, রুচি, মন মেজাজ, ভাল লাগা, খারাপ লাগার সময় প্রভৃতি বিষয় জিজ্ঞেস করাতে আশ্চর্য হলেন এবং জানতে চাইলেন আমার রোগের সাথে এই বৈশিষ্ট্য সমূহের সম্পর্ক কি। এত বছর ধরে বহু চিকিৎসকের নিকট গিয়েছি কিন্তু কোন চিকিৎসকতো আমার এই বৈশিষ্ট্য সমূহ জানতে চায়নি এবং এত সময় ও দেয়নি। চিকিৎসার জন্য গেলে সর্বোচ্চ এক দুই মিনিটের মধ্য দুই একটা কথা জিজ্ঞেস করে কয়েকটা টেষ্ট দিয়ে প্রেসক্রিপশন লিখে ফেলতেন।

আমরা বললাম হোমিওপ্যাথি রোগের নয় রোগীর চিকিৎসা করে, আমাদের অনেকের রোগ এক হলেও প্রতিটি মানুষের চিন্তা, পছন্দে, রুচিশীলতায় কখনো এক নয়। তাই হোমিওপ্যাথিক নিয়মে তাদের সবার রোগ এক হলেও এইসব স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের কারনে কখনো একই ঔষধে আরোগ্য হয়না। নাইম সাহেব বললেন তাহলে কি আমরা এই কারণেই বছরের পর বছর গ্যাস্টাইটিস সহ অন্যান্য রোগের ঔষধ খেয়ে অধিকাংশ রোগে স্থায়ী আরোগ্য হচ্ছিনা। আমরা বললাম হোমিওপ্যাথিক নিয়মানুযায়ী রোগীর আঙ্গিক লক্ষণাবলী থেকে মানসিক ও সার্বদৈহিক লক্ষণের গুরুত্ব বেশি। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করলে গ্যাস্টাইটিস সহ সকল রোগ অল্পসময়ের স্থায়ীভাবে আরোগ্য হবে।

যাক নাইম সাহেবের গ্যাস্টাইটিসের ক্ষেত্রে তার আঙ্গিক, সার্বদৈহিক ও মানসিক লক্ষণ মূল্যায়ণ করে আমরা ঔষধ নির্বাচন করলাম “লাইকোপোডিয়াম”। উক্ত ঔষধ সেবনে অল্প সময়ে তার গ্যাস্টাইটিস আরোগ্য হয়। তার পেট ফাঁপা, একটু খেলে পেটে গ্যাস জমাসহ যাবতীয় কষ্ট এখন আর নাই। সে এখন অনেক খুশি।

লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ, ফেনী।
সম্পাদনা: আরএইচ/এইচএসটি

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.