ডা. ছরওয়ার আলম।
মোঃ শিহাব উদ্দিন (২৪), দেবীপুর, ফেনী। একটি প্রাইভেট হাসপাতালের ফার্মেসী পরিচালনা করেন। দীর্ঘ দিন ধরে তার শরীরে অনেক গ্যাজ দেখা দিয়েছে। শুরু থেকেই চিকিৎসা চলছে। অনেক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ দেখিয়েছেন, আরোগ্য না হওয়াতে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকও দেখিয়েছেন। অপারেশনও করেছেন। কিন্তু কোনভাবেই রোগ আরোগ্য হচ্ছেনা। উপায়ান্ত না দেখে আরোগ্যের আশায় ইন্টারনেটে প্রচুর ঘাটাঘাটি শুরু করলেন। ভাল কোন চিকিৎসকের ও চিকিৎসার সন্ধান পাওয়া যায় কিনা। তার খোঁজাখুঁজিতে আমাদের কয়েকটি লিখা তার নজরে পড়ে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ১. গ্যাজ চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ও ২. ছোঁয়াচে রোগ আঁচিল চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি। লিখাগুলি তিনি ভালভাবে পড়েন, এবং আমাদের পরামর্শ নিতে আগ্রহী হয়ে উঠেন, পত্রিকা অফিস থেকে আমাদের ঠিকানা নিয়ে আমাদের নিকট আসেন। লিখাগুলি অনলাইন পোর্টাল ‘নতুন ফেনীর’ স্বাস্থ্য পাতায় বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়। উপরোক্ত কথাগুলি বললেন শিহাব সাহেব, ১০ আগস্ট ২০১৭ খ্রি. তারিখে তার চিকিৎসা নিতে এসে।
তিনি আরো জানান, প্রথমে তার ডান পায়ে, তার পর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য গ্যাজে ভরে যাচ্ছে। দিন দিন বেড়েই চলছে। কাজ কর্মে ব্যঘাত ঘটছে। এগুলো, শক্ত, চ্যাপ্টা, অমসৃণ, খসখসে। ব্যথা চুলকানি, জ্বালা কিছুই নাই। তবে চাপ পড়লে ব্যথা করে। শরীরের ডান অংশে গ্যাজ বেশি। তার আবহাওয়া স্বাভাবিক পছন্দ, ঘাম, ঘুম স্বাভাবিক, খাবারে সব কিছু স্বাভাবিক পছন্দ তবে মিষ্টি ও মাংস প্রিয়। শান্ত প্রকৃতির তবে অল্পতে রাগ করেন, স্বরণশক্তি ও সাহস ভাল, পায়খানা প্রস্রাব স্বাভাবিক, বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত তার খারাপ লাগে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে আঁচিল, গ্যাজ এই সব রোগের ঔষধ নির্ণায়ক লক্ষণ পাওয়া খুবই কষ্টকর। অনেকটা একদৈশিক রোগের মত ঔষধ চিত্র বের করে আনা যায়না। হোমিওপ্যাথিক মতে রোগ যাই হোক না কেন, রোগীর মানসিক লক্ষণ, সার্বদৈহিক লক্ষণ, হ্রাস-বৃদ্ধি, কাতরতা, ইচ্ছা-অনিচ্ছার গুরুত্ব বেশি।
সেই হিসাবে আমরা শিহাব উদ্দিনের গ্যাজের ঔষধ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ডান দিকে রোগের আক্রমণ বেশি, বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত বৃদ্ধি ছাড়া আর কোন লক্ষণ পেলাম না। যেহেতু তিনি আগেও অনেক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক দেখিয়েছেন তারা নিশ্চয়ই কমন অন্যান্য সব ঔষধ দিয়ে আরোগ্যের চেষ্টা করেছেন ভেবে আমরা তাকে ঔষধ দিলাম “নেট্রাম সালফ”। উক্ত ঔষধ সেবনের এক সপ্তাহের মধ্যে তার শরীর ব্যাপী অসংখ্য গ্যাজের ৮০% ঝরে পড়ে। পরবর্তীতে আরো কয়েকবার ঔষধ সেবনে সে সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য হয়। তিনি কৃতজ্ঞতা জানান সৃষ্টিকর্তার প্রতি। অল্প সময়ে স্বল্প খরছে স্থায়ীভাবে তার বিব্রতকর রোগ আরোগ্য হওয়ার জন্য।
লেখকঃ সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ, ফেনী জেলা।