বছরের পর বছর ধরে অকোজো ফেনীর ৬ সরকারী হাসপাতালের এক্স-রে যন্ত্র • নতুন ফেনীনতুন ফেনী বছরের পর বছর ধরে অকোজো ফেনীর ৬ সরকারী হাসপাতালের এক্স-রে যন্ত্র • নতুন ফেনী
 ফেনী |
১৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বছরের পর বছর ধরে অকোজো ফেনীর ৬ সরকারী হাসপাতালের এক্স-রে যন্ত্র

রাশেদুল হাসানরাশেদুল হাসান
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১২:২৭ অপরাহ্ণ, ০১ জানুয়ারি ২০১৮

বিশেষ প্রতিনিধি>>
ফেনীতে চার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ছয়টি সরকারি হাসপাতালের এক্স-রে যন্ত্রগুলো বছরের পর বছর অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা এর ফলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দরিদ্র রোগীদের বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারি রোগ নির্ণয়কেন্দ্র ও ক্লিনিক থেকে এক্স-রে করতে বাধ্য হচ্ছে।

ফেনী জেলার সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সোনাগাজী, দাগনভূঞা, ফুলগাজী ও পরশুরাম এই চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং জেলার বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও ট্রমা সেন্টারে গত ৫ থেকে ১০ বছর ধরে এক্স-রে যন্ত্র নষ্ট। অপর দিকে ২৫০ শয্যার ফেনী সদর হাসপাতাল ও ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে যন্ত্র থাকলেও রেডিওলজিস্ট না থাকায় সেগুলোও অকেজো পড়ে আছে।

ফেনী সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালে গরিব ও অসহায় রোগীদের এক্স-রে করতে কোনো ফি নেওয়া হয় না। কিন্তু অপেক্ষাকৃত সচ্ছল রোগীদের জন্য এক্স-রে করতে ফি দিতে হয় ৫৫ থেকে ৭০ টাকা। তবে এক্স-রে যন্ত্র নষ্ট থাকায় গরিব রোগীরা এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বেসরকারি ক্লিনিকে এক্স-রে করাতে খরচ পড়ে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা।

সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুরুল আলম বলেন, গত ১০ বছর থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে যন্ত্র দুটি নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। মেডিকেল টেকনোলজিস্টও নেই এ হাসপাতালে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো কাজ হয়নি।

পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত এক বছর ধরে এক্স-রে যন্ত্র নষ্ট রয়েছে। পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল খালেক মাছুম বলেন, গত ২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি নতুন এক্স-রে যন্ত্র স্থাপন করা হলেও চার মাসের মাথায় সেটি নষ্ট হয়ে যায়। এরপর একাধিকবার লেখালেখি হলেও এটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। হাসপাতালে দুটি এক্স-রে যন্ত্রই নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। তবে এ হাসপাতালে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আছে।

ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াছ বলেন, গত প্রায় আড়াই বছর থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে যন্ত্র দুটি নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। এক্স-রে বিভাগের মেডিকেল টেকনোলজিস্টকেও ঢাকার একটি হাসপাতালে প্রেষণে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

একই অবস্থা দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেরও। দাগনভূঞা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল খায়ের মিয়াজী বলেন, এক্স-রে যন্ত্র দুটি দীর্ঘদিন নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে হাসপাতালে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নেই।

ফেনী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের এক্স-রে যন্ত্রটি ২০১০ সাল থেকে নষ্ট বলে জানান সেখানকার জ্যেষ্ঠ পরামর্শক চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান নতুন ফেনী’কে বলেন, হাসপাতালে মেডিকেল টেকনোলজিস্টও নেই। রোগীদের প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ফেনী শহরে গিয়ে এক্স-রে করতে হয়।

অপর দিকে ফেনীর ২০ শয্যার ট্রমা সেন্টারের এক্স-রে যন্ত্র এখন পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়নি। গত ৮ থেকে ৯ বছর ধরে যন্ত্রটি এভাবেই পড়ে আছে। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট না থাকায় যন্ত্রটি চালু হয়নি।

ফেনীর সিভিল সার্জন হাসান শাহরিয়ার কবীর নতুন ফেনী’কে বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে যন্ত্র নষ্ট ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট না থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দীর্ঘদিন থেকে অকেজো হয়ে পড়ে থাকা ফেনীর বিভিন্ন হাসপাতালের এক্স-রে যন্ত্রগুলো ঠিক করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বার বার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোন ফল হয়নি। ফলে জেলার সাধারণ মানুষ বেশি টাকা খরচ করে প্রাইভেট সেন্টার গুলো থেকে এক্স-রে সেবা নিতে বাধ্য হচ্ছে।
সম্পাদনা: আরএইচ/এনকে

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.