নাজিম উদ্দিন চৌধুরী >>
ফেনী পৌর মৎস আড়ৎ-এ প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়। এ পেশায় থেকে জীবিকা নির্বাহ করেন জেলার কয়েক হাজার পরিবার। জেলার ৬টি উপজেলাসহ আশপাশের আরো ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা এখান থেকে মাছ কিনে অন্যত্র বিক্রি করেন। তবে চুরি-ছিনতাইসহ গুটি কতেক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে পারলে এ ব্যবসার দিকে আরো মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শেষ রাতেই সরগরম হয়ে পড়ে ফেনী শহরের আদালত পাড়া সংলগ্ন পৌর মৎস আড়ৎ। মালিক-কর্মচারীদের যেন দম ফুরাবার সময় নেই। জেলার দূর-দূরান্ত থেকে দলে-দলে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা এ আড়তে প্রবেশ করে। সূর্যের আলো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে ব্যবসায়ীরাও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিয়ে জেলা প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন।
সূত্র আরো জানায়, এখান থেকে ফেনীর ৬টি উপজেলা ছাড়াও রাামগড়, করেরহাট, বারাইয়ার হাট, রায়পুর, লক্ষীপুর, সেনবাগ, লাকসাম ও চৌদ্দগ্রাম এখান থেকে ব্যবসায়ীরা মাছ নিয়ে বিক্রি করেন। প্রতিদিনই কয়েক হাজার ব্যবসায়ীর আনাগোনা দেখা যায় এ মার্কেটে। এখানে ৪৪জন আড়ৎদার এ ব্যবসায় পরিচালনা করে আসছে। এছাড়াও কিছু ছোট ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা তাদের উৎপাদিত মৎস এখানে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। প্রতিদিন প্রায় ৮শ’ ভ্যান চালক এখান থেকে মাছ নিয়ে পাড়া-মহল্লায় বিক্রি করেন।
জেলা মৎস আড়ৎদার সমিতি সূত্র জানায়, এখানকার ব্যবসায়ীরা টেকনাফ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে, লইট্রা, চুরি, পোয়া, আইলা, বাইলা, কোরাল, রুপচাঁদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ সংগ্রহ করে থাকেন। সিলেন থেকে শিং, মাগুর, গুতুম, বাইং ও ছোট চিংড়ী; নরসিংদী থেকে পাংগাস, কই; রাজশাহী ও সাতক্ষীরা থেকে রুই, কাতল, মৃগেল, কারপু, ব্রিগেড; কুমিল্লা থেকে কাতল, তেলাপিয়া; লক্ষীপুর, সোনাপুর, চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জ থেকে ইলিশ; খুলনা থেকে গলদা চিংড়ি, বাগদা চিংড়ি ও বড়-ছোট হরিনা চিংড়ি মাছ সংগ্রহ করে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবসায়ী নতুন ফেনী’কে জানান, ফেনীসহ আশপাশের বেশ কয়েকটা উপজেলায় মাৎস সরবরাহের একমাত্র আড়ৎ ফেনী পৌর এ মৎস আড়ৎ। গভীর রাতে ব্যবসায়ীরা এ আড়তে আসতে হয়। প্রতিদিনই কোন না কোন ব্যবসায়ী চুরি-ছিনকাইয়ের শিকার হন। তিনি বলেন, এ সময়ে স্টার লাইন পাম্প থেকে চাড়ীপুর রাস্তার মাথা, শহরতলীর রানীরহাট থেকে বারাহীপুর রেলগেইট পর্যন্ত, লালপোল থেকে কোর্টবিল্ডিং পর্যন্ত এলাকায় ভোর চারটা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বৃদ্ধি করা হলে এসব চুরি ছিনতাই থেকে রেহাই পাবে ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে ফেনী জেলা মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহআলম ভুঁইয়া জানান, নিরাপত্তা জনিত কারণে বৃহৎ এ মৎস মার্কেটে পাইকাররা আসতে অনিহা প্রকাশ করছে। দিনের পর দিন এখানে ক্রেতার সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টির দিকে একটু নজর দিলে ব্যবসায়ীরা নির্বিগ্নে এখানে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে বলে তিনি জানান।
সম্পাদনা: আরএইচ/এনইউসি