হালিমা খাতুন (৪০)। বহু বছর ধরে তার বেশিরভাগ দাঁত নড়ে। তার দাঁতে কোন প্রকার ক্ষয় বা গর্ত নাই। দাঁতের মাঢ়ি ফোলা এবং দাঁতের গোড়া থেকে পুঁজ যাওয়া নেই। কিন্তু তার দাঁতগুলো নড়ে। এর জন্য ডেন্টাল স্পেশালিষ্ট থেকে শুরু করে অনেক চিকিৎসক দেখিয়েছেন। কিন্তু কোনভাবেই তার দাঁত নড়া রোগ আরোগ্য হচ্ছেনা।
আমরা বললাম, আপনার রোগের পূর্ণ বিবরণ জানতে হবে। রোগীনি বললেন অবশ্যই জানাবো। আমরা দীর্ঘ সময় ধরে রোগীলিপি নিয়ে তার দাঁত নড়া রোগের ক্ষেত্রে ঔষধ নির্ণায়ক যে লক্ষণ সমূহ পেলাম তা হলঃ তার কাছে মনে হয় দাঁতের গোড়া শিথিল হয়ে গেছে। দাঁতে কোন শক্তি নাই। শক্ত কিছু চিবিয়ে খেতে পারেন না। মনে হয় দাঁতগুলি খাবারের সঙ্গে খুলে পড়ে যাবে, তাই নরম খাবারও অতি সতর্কতার সাথে খান। ছোট থেকেই তার দাঁতগুলি লালচে। বহু রকমের মাজন ও দেশি বিদেশি উন্নতমানের বহু পেষ্ট ব্যবহার করে দেখেছেন কোনভাবেই দাঁতগুলি সাদা করতে পারেননা। অনেক বছর ধরে দাঁতে মাত্রাতিরিক্ত পাথর জমে, পাথর বেশি জমলে দাঁতের গোড়ায় শিনশিন করে, মুখে পানি জমে, তখন দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত পড়ে। এর জন্য কিছুদিন পর পর দাঁতের চিকিৎসকের নিকট গিয়ে দাঁত ওয়াশ করে পাথর পরিষ্কার করাতে হয়। কিন্তু কোনভাবেই দাঁতের গোড়ায় পাথর জমা বন্ধ হচ্ছেনা। জিহ্বা ফাটা কিন্তু ব্যথা নেই। দাঁতে বেশি পাথর জমলে মুখে মাঝে মাঝে গন্ধ করে।
অন্যান্য কষ্টের মধ্যে তার কোমরে ব্যথা আছে। পায়খানা কষা। ঠান্ডা অসহ্য। চোখে কম দেখেন। সব সময় সাংশারিক খরচপাতির বিষয়ে নিয়ে টেনশনে থাকেন। পায়ের শিরাসমূহে ফোলা ও ব্যথা আছে।
আমরা তার রোগীলিপি মূল্যায়ণ করে তার দাঁত নড়া রোগের ক্ষেত্রে ঔষধ নির্বাচন করলাম “ক্যালকেরিয়া ফ্লোর”। উক্ত ঔষধ সেবনে তার দীর্ঘ বছরের নড়া দাঁত ধীরে ধীরে বসে যায়। এখন সে যাবতীয় শক্ত খাবারও খেতে পারে। এছাড়া তার দীর্ঘ বছর ধরে দাঁতে পাথর জমা রোগও আরোগ্য হয়। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় তার নড়া দাঁত সমূহ বিনা কষ্টে অল্প সময়ে সুস্থ্য হওয়াতে ও দাঁতে পাথর জমা রোগ আরোগ্য হওয়াতে সে খুবই খুশি এবং সৃষ্টিকর্তার নিকট কৃতজ্ঞ।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ, ফেনী জেলা।