‘তাঁর বা হাতের অংশ বিশেষ ঝলসে যায়’ • নতুন ফেনীনতুন ফেনী ‘তাঁর বা হাতের অংশ বিশেষ ঝলসে যায়’ • নতুন ফেনী
 ফেনী |
২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

‘তাঁর বা হাতের অংশ বিশেষ ঝলসে যায়’

রাশেদুল হাসানরাশেদুল হাসান
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৬:৩৩ অপরাহ্ণ, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯

মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানীদের ‘বীরত্বগাঁথা’ নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে ফেনীর জনপ্রিয় অনলাইন নিউজপোর্টাল নতুন ফেনী’তে। ধারাবাহিকের প্রথম পর্বে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বীর প্রতীক তোফায়েল আহমেদ’র অসামান্য অবদান তুলে ধরা হয়েছে। ধারাবাহিক প্রতিবেদনগুলো সংকলন ও সম্পাদনা করছেন রাশেদুল হাসান।

তোফায়েল আহমেদ যে সব যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন তার মধ্যে স্মরণীয় যুদ্ধ বালিয়াডাঙ্গার যুদ্ধ। এই যুদ্ধ এত ভয়াবহ, লোমহর্ষক ও মারাত্মক ছিল যে ওই যুদ্ধে যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, তাদের এখন সে কথা মনে হলে সবাই হয়তো শিউরে উঠবেন। সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি। তখন একদল মুক্তিযোদ্ধার অবস্থান ছিল সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার বালিয়াডাঙ্গায়। ইপিআর, আনসার, মুজাহিদ ও ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে গড়া এ মুক্তিবাহিনীর দল। মুক্তিবাহিনীর গেরিলা-আক্রমণে পাকিস্তানিরা অতিষ্ঠ। তাই তারা মুক্তিযোদ্ধাদের দমনে নতুন কৌশল অবলম্বন করে। হঠাৎ একদিন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বেলুচ রেজিমেন্ট বিপুল শক্তি নিয়ে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানে আক্রমণ করে। তাদের আক্রমণের মাত্রা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। বৃষ্টির মতো আর্টিলারি গোলার আঘাতে মুক্তিযোদ্ধারাও দিশেহারা হয়ে পড়েন। পাকিস্তানিদের প্রচন্ড আক্রমণের মধ্যেও তারা টিকে থাকার চেষ্টা করেন। যুদ্ধ চলল কয়েক দিন। তিন কি চার দিনের দিন পাকিস্তানিদের অব্যাহত আক্রমণের মুখে মুক্তিবাহিনী সেখান থেকে পিছু হটতে বাধ্য হলো। পাকিস্তানিদের গোলার আঘাতে মুক্তিবাহিনীর আটজন যোদ্ধা ও অনেকে আহত হন। এ যুদ্ধে বীরত্ব দেখান তোফায়েল আহমেদ।

তোফায়েল আহমেদ তৎকালিন সময়ে ইপিআরে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় কর্মরত ছিলেন। সেখানকার কোম্পানী কমান্ডার তোবারক উল্লাহর নেতৃত্বে বিদ্রোহ করে তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ৮ নং সেক্টরের ভোমরা, হাকিমপুর সাব-সেক্টরে যুদ্ধে অংশ নেন তোফায়েল আহমেদ। বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ করে তিনি অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন। পাক সেনাদের বোমায় তাঁর বা হাতের অংশ বিশেষ ঝলসে যায়।

ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের শিলুয়া মজুমদার বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমেদ। বাবা মুজাফফর আহামদ মজুমদার ও মাতা ফাতেমা খাতুন। ১৯৮৩ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন তোফায়েল আহমেদ। ২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর ফেনী মুক্ত দিবসের দিন ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড় জমান তিনি।

১৯৭১ সালের সেপ্টম্বরের মাঝামাঝি সময়। তখন একদল মুক্তিযোদ্ধা সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা
[তথ্যসূত্র: জাহানারা ইমাম (বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ দলিলপত্র, বীরশ্রেষ্ঠ), মুহাম্মদ লুৎফুল হক সম্পাদিত (কামালপুর ১৯৭১), মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (রক্তেভেজা একাত্তর), প্রথমা (একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা- প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড) এবং একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, (খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রন্থ)]

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.