ছাগলনাইয়ায় হবে প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘর • নতুন ফেনীনতুন ফেনী ছাগলনাইয়ায় হবে প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘর • নতুন ফেনী
 ফেনী |
২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ছাগলনাইয়ায় হবে প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘর

নতুন ফেনীনতুন ফেনী
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১২:৪৮ অপরাহ্ণ, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

ছাগলনাইয়ায় পর্যটন শিল্পে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হওয়ার পথে। ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে ছাগলনাইয়া উপজেলায় একটি প্রত্নতাত্ত্বিক বা ঐতিহ্য জাদুঘর করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে বলে সিলেট-চট্টগ্রামের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক নিশ্চিত করেছেন।

এই উপজেলায় ছয়টি ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার মহামায়ায় মোগল সাম্রাজ্যের সনদপ্রাপ্ত বাংলার ১২ ভূঁইয়ার এক ভূঁইয়া চাঁদগাজী ভূঁইয়ার ১৬৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ভূঁইয়া মসজিদ। ছাগলনাইয়া পৌরসভার পশ্চিম ছাগলনাইয়ায় রয়েছে জমিদার মুন্সি সুন্দর চন্দ্র চৌধুরীর নির্মিত সাত মন্দির বা সাত মঠ। উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের জগন্নাথ সোনাপুর গ্রামে রয়েছে বাংলার বাঘ খ্যাত শমসের গাজীর দীঘি। ১৭৪৮ সালে ত্রিপুরার রাজা কৃষ্ণ মাণিক্যকে পরাজিত করে শমসের গাজী সিংহাসনে বসে প্রায় পাঁচ একর জায়গার ওপর খনন করেন মায়ের নামে এই দীঘিসহ বেশ কয়েকটি দীঘি। রাজবাড়ীর লোকজন বিশেষ করে নারীরা এ দীঘিতে আসা-যাওয়া করতে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সুড়ঙ্গপথও নির্মাণ করেছিলেন শমসের গাজী।

এই স্থাপনাগুলো সংরক্ষণে না থাকলেও আজও দর্শনীয় স্থান হিসেবে অক্ষত। এ ছাড়া রাজা শমসের গাজীকে বাল্যকালে লালনপালনকারী জগন্নাথ সেনের স্মৃতি রক্ষার্থে তিনি একটি কালীমন্দির নির্মাণ করে সেখানে মূর্তি স্থাপন করেছিলেন। এটির বৈশিষ্ট্য হলো, এর দুই নেত্র প্রকোষ্ঠে বসানো লাল বর্ণের পাথরগুলো ৩০০ বছর পরও রাতে আলো ছড়াচ্ছে। অন্যদিকে উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের শিলুয়ার শিল নিয়ে আজও সবাই উৎসুক। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের শিলালিপি সদৃশ বিশাল আকৃতির শিলাটি কত বছর আগের তা ইতিহাসবিদরাও জানাতে পারেননি। অন্যদিকে রয়েছে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত শুভপুর ও রেজুমিয়া ব্রিজ। প্রত্নতাত্ত্বিক এই স্থানগুলো দর্শনে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা আসেন। এই নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সম্প্রতি সরকারের সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এসবের তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে।

চলতি মাসের ২১ তারিখে উপজেলার এই ছয়টি দর্শনীয় স্থানসহ আরও অনেক নিদর্শন পরিদর্শনে আসেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান ও গবেষণা সহকারী মো. ওমর ফারুক। ড. আতাউর জানান, ফেনী জেলার ছয়টি উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রাচীন নিদর্শনগুলো। এগুলোর আশপাশে যে বা যারা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন তাদের উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে ছাগলনাইয়া উপজেলায় একটি প্রত্নতাত্ত্বিক বা ঐতিহ্য জাদুঘর করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। শিগগির জমি অধিগ্রহণ করে এই জাদুঘরের কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া ফেনী জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য রক্ষায় অপর একটি জাদুঘর করার জন্য অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে একটি প্রস্তাবনাও বাস্তবায়নের পথে।
সম্পাদনা:আরএইচ/এইচআর

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.