ফেনীতে বাড়ছে ঠান্ডা জনিত রোগী • নতুন ফেনীনতুন ফেনী ফেনীতে বাড়ছে ঠান্ডা জনিত রোগী • নতুন ফেনী
 ফেনী |
২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ফেনীতে বাড়ছে ঠান্ডা জনিত রোগী

নিজস্ব প্রতিনিধিনিজস্ব প্রতিনিধি
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৭:৩৮ অপরাহ্ণ, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯

শীত মৌসুমের শুরুতেই হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনালের হাসপাতালে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে গত দুইদিন ধরে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসনালী প্রদাহজনিত রোগ, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু ও বয়ষ্ক রোগীর ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। গত দুদিনে প্রায় ৮০-৯০ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এদিকে তিনজন কনসালটেন্ট (শিশু) পদোন্নতি পেয়ে অন্যত্র বদলী হওয়ায় তিনটি পদই খালি থাকায় সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা।

জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা রোগীর সংখ্যাই বেশী। শিশু ওয়ার্ডে সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ও শিশু ওয়ার্ডে বেডের বিপরীতে রোগীর সংখ্যা অধিক। তাই মেঝেতে বিছানা বিছিয়ে রোগীদের সেবা দিচ্ছে চিকিৎসক ও সেবিকারা। এক মাসের কম বয়সী বেশ কয়েকটি নবজাতকের নাকে নেবুলাইজার দিয়ে শ্বাসকষ্ট দূর করার চেষ্টা করছে মা।

কিছু শিশুর বেশী ঠান্ডা লাগায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তাদের বেশ যত্মসহকারে সেবা দিচ্ছে কর্তব্যরত সেবিকাগণ ও শিক্ষানবিশ সেবিকাগণ। রোগী বেশী হওয়ায় সেবিকাদের বেশ ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে বিশেষ করে যেসকল শিশু শ্বাসকষ্টজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছে। অন্যদিকে শিশুদের সাথে সাথে শীতের তীব্রতায় বয়স্ক ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যাও কম নয়। বেশীর ভাগ বয়স্ক রোগী ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

এ বিষয়ে সদর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. আবু তাহের জানান, শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে অন্য সময়ের তুলনায় হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত দুই, তিন দিনে শিশু ওয়ার্ডে ৪২ জন, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৩২ জন ও বয়স্ক রোগী ভর্তি হয়েছে ১৫ থেকে ২০ জন। হাসপাতালে রোগী ভর্তির পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর চিকিৎসার জন্য যথাযথ খেয়াল রেখে চিকিৎসক ও সেবিকারা রোগীদের যতœসহকারে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী শহিদুল ইসলাম জানান, ফুলগাজীর শ্রীপুর থেকে এসেছেন। তার দুই দিন ধরে ডায়রিয়া হচ্ছে সিট না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে।

চিকিৎসাধীন শিশুর অভিভাবকরা বলেন, বাচ্চার ঠান্ডা লাগার পর হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার দেখে বলছে বাচ্চা নিউমোনিয়া হইছে। ডাক্তার ওষুধ লেখে দেয় হাসপাতাল থেকে তা পাওয়া যায় না। ওষুধ সব বাহির থেকে কিনে আনতে হয়।

ফুলগাজীর মুন্সিরহাট এলাকার ৬ বছর বয়সী এক শিশুর অভিভাবক জাহিদুল আলম বলেন, গত ১০ দিনে ধরে জ্বরে ভুগছে। দুই দিন আগে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছি।

সিভিল সার্জন ও ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান বলেন, শীতের প্রকোপে শিশুদের ডায়রিয়া ও শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়ায় তিনজন চিকিৎসক অন্যত্র বদলী হওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে একজন মেডিকেল অফিসারকে দিয়ে আন্ত:বিভাগ ও বহি:বিভাগে শিশু রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও দাগনভূঞা উপজেলার আরেকজন মেডিকেল অফিসারকে ডেপুটেশনে সদর হাসপাতালে পদায়ন করা হয়েছে। মোট দুইজনকে দিয়ে সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্য বলেন, শিশুদেরকে অবশ্যই সব সময় গরম কাপড় পড়িয়ে রাখতে যাবে যাতে কোন অবস্থাতেই ঠান্ডা না লাগে। যদি শিশুর ঠান্ডা লেগে যায় তাহলে অবশ্যই নিকটস্থ এমবিবিএস ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে, তাহলে শিশুর সামান্য ঠান্ডা বেড়ে নিউমোনিয়ার দিকে চলে যাবে।
সম্পাদনা: আরএইচ/এনকে

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.