ফেনীর চিশতিয়া মা ও শিশু হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালাসহ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে প্রশাসন। রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা হাসপাতালটি পরিদর্শন শেষে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেন। এর আগে শনিবার রাতে ওই হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় ফারহানা আক্তার নামে এক প্রসূতীর মৃত্যু হলে তোলপাড় শুরু হয়।
জানা যায়, শনিবার দুপুরে ফেনী শহরের চিশতিয়া মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রসূতি নারী ফারহানা আক্তারকে। বিকেলে তাকে দ্রুত সিজার করার কথা বলে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। সিজারের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তান হওয়ার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এ সময় প্রসূতির অবস্থা আশঙ্কাজনক জানিয়ে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পথেই মারা যায় প্রসূতি। চিকিৎসকের পরিবর্তে নার্স দিয়ে অপারেশন করায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের।
নিহত ফারহানা আক্তার ফেনীর দাগনভূইয়া উপজেলার রাজাপুর এলাকার জুলহাসের স্ত্রী। সিজারের পর তার একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। বর্তমানে নবজাতকটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
প্রসূতির মৃত্যু খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজনা হাসপাতাল ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এ ঘটনায় চিকিৎসক নাসরিন আক্তার শিমু ও হাসপাতালের মালিকসহ ৩ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় মামলা করেছে নিহতের পরিবার।
এদিকে জেলা প্রশসানের সহকারী কমিশনার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান জানান, ব্যাপক অনিয়ম ও খামখেয়ালী করে চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগে রবিবার দুপুরে ওই হাসপাতালে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। এসময় লাইসেন্স নবায়ন না করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা ও অদক্ষ নার্সসহ নীতিমালা না মেনে ক্লিনিক চালানোর দায়ে প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়াও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের রেজিস্টার খাতায় প্রতিটি ভর্তি হওয়া রোগীর নামের পাশে দালালদের নাম ও কমিশনের হিসাব লিখে রাখায় আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সম্পাদনা: এনকে/আরএইচ