আন্তর্জাতিক গুম দিবসে ফেনীতে মানববন্ধন করেছে গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনরা। সোমবার সকালে ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে এ উপলক্ষে মানববন্ধনের আয়োজন করে মায়ের ডাক ও হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস নেটওয়ার্ক নামের দুটি সংগঠন। এতে মানবাধিকার কর্মী ও গুমের স্বীকার ব্যক্তিদের স্বজনরা অংশ নেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক ফেনীর সময়’র সম্পাদক ও ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক’-সুজন ফেনী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন।
দিবসের মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মায়ের ডাক ও হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস নেটওয়ার্ক’র কো-অর্ডিনেটর, অধিকার ফেনীর ফোকাল পার্সন ও দৈনিক মানবজমিন’র জেলা প্রতিনিধি নাজমুল হক শামীম।
মানবাধিকার কর্মী তন্বী সোম’র সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইয়ুথ জার্নালিষ্ট ফোরাম ফেনী শাখারর সভাপতি ও দৈনিক অজেয় বাংলার নির্বাহী সম্পাদক শাহজালাল ভূঞা, ফেনী গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলী নসু, ফেনী লিও ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মুরাদ হাসনাত রাফি, গুমের শিকার হওয়া যুবদল নেতা মাবুবুর রহমান রিপনের মা রৌশন আরা বেগম, বড় ভাই মাহফুজুর রহমান, মেঝ ভাই মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
এ সময় গুমের শিকার রিপনের চাচা ওহিদুর রহমান, রিপনের বড় মেয়ে ফারিয়া আক্তার নিশাত, ছোট মেয়ে ফাহিমা আক্তার নাওফি, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী কাজি ইকবাল আহমেদ পরান, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ফেনী জেলা শাখার সভাপতি ও মানবাধিকার কর্মী মোস্তফা কামাল বুলবুল, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী এমডি মোশাররফ, ইংরেজী শিক্ষক ও মানবাধিকার কর্মী আবদুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে মানবাধিকার কর্মী ও ভিকটিম পরিবারগুলোর স্বজনরা গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণ করে তাঁদেরকে তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে দেশের সকল নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। সরকার আন্তরিক হলে দেশে গুম বন্ধ হবে এবং সকল নাগরিক নিরাপদে বসবাস করবে।’
সমাবেশ থেকে গুমের পাশাপাশি ‘এনকাউন্টার’ বা ‘ক্রসফায়ারের’ নামে দেশের নাগরিকদের বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা ও হেফাজতে নির্যাতন করে হত্যাসহ সমস্ত ধরণের রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে। বক্তারা বলেন, ‘গুম একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ, যা মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন, এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবেও স্বীকৃত। গুম রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের একটি বড় হাতিয়ার। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার অজুহাতে গুম জনিত অপরাধ মূলতঃ তাঁদের বিরুদ্ধেই প্রয়োগ করা হয় যাঁদেরকে সরকার শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে।’
ফেনীতে বিগত এক যুগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকার হয়েছেন ফেনী শহর যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান রিপন, সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মো. ইউসুফ, সোনাগাজীর চরচান্দিয়ার যুবলীগ নেতা সরওয়ার জাহান বাবুল, একই এলাকার যুবগলীগ নেতা গাজি মিলন। যাদের আজও সন্ধান কিংবা ফিরে পায়নি স্বজনরা।
সম্পাদনা:আরএইচ/এইচআর







