রাত পোহালেই ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তায় প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৫৪৪ জন সদস্য।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সুত্রে জানাযায়, মঙ্গলবার দুপুরে ৩২টি ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার মাধ্যমে নির্বাচনের মালামাল সামগ্রী প্রেরণ করা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার ভোরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে।
উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে মোট ৩২ টি ভোট কেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ ৫৪৪ জন নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়াও নির্বাচনে ছয়জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজেট্রেট এর সাথে বিজিবির ৬০ জন সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।
ভোটের দিন আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থা বজায় ও ভোটের পরিবেশ সুন্দর রাখতে বিজিবি, র্যাব, ও পুলিশ, বিভিন্ন পর্যায়ের গোয়েন্দা সংস্থা,আনসার সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পুরো নির্বাচনি এলাকার কঠোর নিরাপত্তায় মাঠে থাকবেন।
গত সোমবার (৬ মে) মধ্যেরাত থেকে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের নির্বাচনি প্রচার প্রচারণা শেষ হয়েছে। ভোট গ্রহনের জন্য প্রস্তত ফুলগাজী উপজেলার ৩২ টি ভোট কেন্দ্র। নির্বাচনে ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারে সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুুতি গ্রহন করা হয়েছে।
এদিকে গত (৫ মে) ফেনী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মুছাম্মৎ শাহিনা আক্তার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয় ফুলগাজী উপজেলা নির্বাচনে ৬ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেটকে উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে নির্বাচনকালীন সময়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করবেন।
ফুলগাজী সদর ইউনিয়নে তানিয়া ভূঁইয়া (ইউএনও ফুলগাজী), মুন্সীরহাট ইউনিয়নে কামরুল হাসান (ইউএনও সোনাগাজী), দরবারপুর ইউনিয়নে নিবেদিতা চাকমা (ইউএনও দাগনভূঞা), আনন্দপুর ইউনিয়নে আফরোজা হাবিব শাপলা (ইউএনও পরশুরাম), আমজাদহাট ইউনিয়নে মোহাম্মদ হুমায়ুন রশিদ (ইউএনও ফেনী সদর), ও জিএমহাট ইউনিয়নে সাইফুল ইসলাম কমল (ইউএনও ছাগলনাইয়া)।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাচন অফিসার ইসরাত জাহান লিপি জানান, নির্বাচনে ৩২ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ২’শ৫২ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ৫’শ ৪ জন পোলিং অফিসারকে পুরো উপজেলার ৩২ কেন্দ্রে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
প্রতিটি কেন্দ্রে এজেন্টের বিষয়ে ইসরাত জাহান লিপি বলেন, উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের ৩২ টি কেন্দ্রে ২৫২ টি বুথের প্রতিটিতে ৭ জন করে মোট ১ হাজার ৭ শত ৬৪ জন এজেন্ট থাকবে ।
বুধবার (৮ মে) অনুষ্ঠিতব্য ফুলগাজী উপজেলা নির্বাচনে কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদারের সাথে জিএমহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা জাফর উল্লাহ ভুঞা চিংড়ি মাছ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে হারুন মজুমদার মাঠে থাকলেও জাফর উল্লাহ ভুঞাকে প্রচারের শেষ দিন পর্যন্ত মাঠে দেখা যায় নি।
এদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বর্তমান উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মঞ্জুরা আজিজ। তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন, মাহবুবুল হক কালা (তালা প্রতীক), অনিল বনিক (টিয়া পাখি প্রতীক), আইনজীবী সাইফ উদ্দিন মজুমদার শাহীন (উড়োজাহাজ প্রতীক), আবদুর রহিম পাটোয়ারী (চশমা প্রতীক) ও পরিমল চন্দ্র রায় (টিউবওয়েল প্রতীক)।
জানাগেছে, একশত চার বর্গ কিলোমিটারের এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লক্ষ ৫ হাজার ৬৭১ জন।তন্মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫৪ হাজার ৭৬০ জন, ও মহিলা ভোটার ৫০ হাজার ৯১১ জন। সকাল ৮ টা থেকে বিরতিহীন ভাবে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিম, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবুল আলম আজমির ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মঞ্জুরা আজিজ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে এবার বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল আলিম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র দাখিল করে পরে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদারকে সমর্থন জানিয়ে চেয়ারম্যান পদ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
সম্পাদনাঃ আরএইচ