আসন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে সোনাগাজীতে লড়ছেন ছয় প্রার্থী। কিন্তু জেলা আওয়ামীলীগের সমর্থিত দুই প্রার্থীরা ছাড়া অন্যদের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। যার ফলে প্রচারণা একেবারেই ঢিলেঢালা। শুধুমাত্র উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটনের দোয়াতকলমের প্রচারণা কিছুটা চোখে পড়ছে। এখানেও তৃনমুলের আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের তেমন উপস্থিত চোখে পড়েনি। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী কার্যালয় করা হলেও সেগুলোতেও তেমন নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছেনা। একই অবস্থা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সাখাওয়াতুল হক বিটুর টিউবওয়েল প্রতীকের। এপদে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী উড়োজাহাজ প্রতীকের আইয়ুব আলী হায়দার। তার নেই কোনো নির্বাচনী কার্যালয়। গণসংযোগ করছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাখাওয়াতুল হক বিটুর সাথে।
জেলা আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীর সাথে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় নেতাকর্মীরা নিশ্চিত তাদের প্রার্থীর বিজয় হবেই। এজন্য তৃণমূল নেতাকর্মীদের গণসংযোগেও দেখা যাচ্ছেনা। ভোটাদের কেন্দ্রে উপস্থিতি করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। তাই ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতেও তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছেনা।
উপজেলা আওয়ামিলীগের নির্দেশে ৯ ইউনিয়ন ও পৌরসভায় করা হয়েছে বিশেষ বর্ধিত সভা। পাশাপাশি উপজেলা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, মহিলা লীগের ব্যানারে বিশেষ বর্ধিত সভা ও মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। এসব সভায় নেতাকর্মীদের কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি করতে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নেতাকর্মীরা নিজেরা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট দিয়ে ছবি তুলে সেগুলো ফেসবুকে প্রচার করার বিষয়েও তাগিদ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবারের মা-বোন, ছেলে-মেয়ে ও স্বামী-স্ত্রীদের ভোট দিতে কেন্দ্রে নিতে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। একটা দিন যাতে কষ্ট করে সকাল আটটা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কেন্দ্রের সামনে উপস্থিত থেকে নিজেদের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ২৯ মে বুধবার পিকনিক হিসেবে মনে করে কেন্দ্রে অবস্থান করতে বলা হচ্ছে। এবং এই দিনটিকে পিকনিকের উৎসবে পরিণত করার বিষয়েও বারবার বলা হয়েছে।
এছাড়াও ভোটের পার্সেন্ট যাতে বেশী হয় সেদিকে লক্ষ রেখে ভোট কাস্ট করতে বলা হয়েছে। ভোট কম হলে নিজাম হাজারীর সম্মান ক্ষুন্ন হবে বলেও মন্তব্য করে নেতারা। পাশাপাশি কেন্দ্র গিয়ে ভোট দেয়া মানে শেখ হাসিনার সম্মান রক্ষা করা এবং সকল অপপ্রচারের জবাব দেয়া বলেও মন্তব্য করে নেতৃবৃন্দ।
তবে উপজেলায় এখনো নির্বাচনী আমেজ উপলব্ধি হচ্ছেনা দাবী করে শাহাদাত হোসেন নামের এক সাধারণ ভোটার বলেন, মাঠে প্রার্থীই আছে কেবল দুইজন। তার মধ্যে দোয়াতকলমের কিছুটা প্রচার হচ্ছে। অথচ এসব নির্বাচনের সময় গণসংযোগ-প্রচার প্রচারণায় বিশেষ করে মাইকিং এর শব্দের প্রতিযোগিতা চলতো।
জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আব্দুল মোতালেব চৌধুরী রবিন মতবিনিময় সভায় তার বক্তব্যে বলেন, জেলা আওয়ামীলীগ সমর্থন দিলেও এখনো উপজেলার বিভিন্ন এলাকার তৃণমূল নেতাকর্মীদের গণসংযোগে দেখা যাচ্ছেনা। যাতে সামনে সম্মিলিতভাবে প্রচারণায় নামে সেজন্য উপজেলা আওয়ামিলীগের দৃষ্টি কামনা করছি।
টিউবওয়েল প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সাখাওয়াতুল হক বিটু বলেন, নিজাম হাজারী আমাদের মনোনীত করে পাঠিয়েছেন। দোয়াতকলম ও টিউবওয়েল প্রতীকে ভোট দিয়ে নিজাম হাজারী ভাইয়ের সম্মান রক্ষা করতে হবে।
দোয়াতকলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন তার বক্তব্যে বলেন, বিএনপি নির্বাচন বর্জনের নাটক করছে। তারা বর্জন করলেও নেতাকর্মীরা বর্জন করেনি। ইতিমধ্যে তাদের ২০জনের মত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছে। তাই তাদের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের জবাব ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে দিতে হবে। এবং উপস্থিতির চিত্র নিজের ফেসবুক একাউন্টে প্রচার করতে হবে।
উপজেলা আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন তার বক্তব্যে বলেন, একদিনের জন্য ভোট কেন্দ্রকে পিকনিকের উৎসবে পরিণত করতে হবে। ভোটের দিন সকাল-বিকাল সেখানে উপস্থিত থেকে ছবি তুলে প্রচারণা চালাতে হবে। বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যদের ভোট কেন্দ্রে যেতে বিশেষ বর্ধিত সভা ও মতবিনিময় সভা করে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
ছবি- নির্বাচনের দিন ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে ফেনীর সোনাগাজীতে শ্রমিকলীগের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। দোয়াতকলম প্রতীকের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন নির্বাচনী প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সম্পাদনাঃ আরএইচ