নুর উল্লাহ কায়সার>>
ফেনী শহরের পূর্ব বিজয়সিংহ এলাকায় গড়ে উঠেছে ফুলে ফলে সু-শোভিত একটি দৃষ্টিনন্দন বাড়ি। বাড়িটিতে রয়েছে নানা রকম ফুল, ফল, সবজি, মাছসহ নানা রকম বৃক্ষ। শুধু বাড়ির আঙ্গিনা নয়; ঘরের ছাদেও রয়েছে হরেক রকমের ফুল ও ফল বৃক্ষের বিপুল সমাহার। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ও সত্ত্বাধিকারী শহীদুল ইসলামের প্রচেষ্টায় প্রাকৃতিক আবহে ঘেরা পুরো বাড়িটি যেন এক স্বর্গ রাজ্য। প্রতিদিনের বিকালে আশপাশের প্রকৃতি প্রেমীরা ওই বাড়িতে ঘুরতে গিয়ে ভীড় জমান।
জানা যায়, ২০০৮ সাল থেকে হাজী হাবিব উল্লাহর ছেলে শহীদ উল্লাহ এ বাড়িটিকে আধুনিক, দৃষ্টি নন্দন ও প্রাকৃতিক আবহে ঘেরা একটি সমৃদ্ধ বাড়ি বানাতে কাজ শুরু করেন। পেশায় প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং ব্যবসায়ী হলেও তার বাড়ির এমন পরিবেশ দেখে অনেকেই বিস্মিত হচ্ছেন। কেউ কেউ ইতিমধ্যে তাকে অনুসরণ করে নিজ বাড়িতেও শুরু করেছেন প্রাকৃতিক বাড়ি বানানোর কার্যক্রম। অনেকেই ওই বাড়িকে প্রাকৃতিক বাড়ি বলেও নাম করণ করেছেন।
সরে জমিনে দেখা যায়, ৫০ শতক জমির উপর গড়ে তোলা এ বাড়িতে ১০ শতাংশের পুকুরে রয়েছে ৫০টি হাঁস ও ১০ ধরনের মাছ মাছ চাষ, বাড়ির আঙ্গিনায় ৫ শতাংশে টমেটো, বেগুন, মুলা, লালশাক ও ধনিয়া সহ মৌসূমী সবজি, পাশেই রয়েছে গোয়াল ঘরে দুটি গাভী। বাড়ির ছাদে উঠে দেখা যায়, অন্তত ২৫ ধরনের ফল ও ফুলে ভরে গেছে বাড়ির ছাদ। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই ফুলের গ্রাণে মাতাল করে তুলে বাড়ির বাসিন্দাদের।
বাড়ির সত্ত্বাধিকারী শহীদুল ইসলাম নতুন ফেনী’কে জানান, তার বাড়িতে বর্তমানে ১৫০টি আম কলম গাছ, ২৫টি পেয়ারা গাছ, ২০টি নারিকেল গাছ, ৫০টি সুপারি গাছ, ৩টি ভিয়েতনামা ডোয়াফ নারিকেল গাছ, ৪টি মাল্টা গাছ, ৩টি কমলা গাছ, ২টি আপেল গাছ, ৩টি লিচু গাছ, ৫টি আতা গাছ, ৩টি লেবু গাছ, ৫টি জলপাই গাছ, ১টি বাতাবী লেবু গাছ, ২টি কামরাঙ্গা গাছ, ১টি আপেল কুল, ১টি বাউকুল, ৫টি সফেদা, ৩টি আমড়া, ২টি ড্রাগন, ২টি গোলাপ জাম, ২টি জাম, ১টি কাউ, ১টি চালতা, ৫টি কাঠাল, ২টি ডালিম, ২টি আমলকি, ১টি হরতকিসহ নানা রকুম ফলজ, বণজ, ঔষধী গাছ রয়েছে। বাড়িতে ৫০টি হাঁস ও ১ শতাধিক মুরগি পালন করা হচ্ছে।
মাঝে মধ্যে ওই বাড়িতে সমন্বিত কৃষি খামার এর জৈব প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। প্রদর্শনীতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু নঈম মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল ইসলাম, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আজিজুল হক, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মতিউর রহমান, ফুলগাজী উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: আরিফুর রহমান, ফেনী সদরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন, প্রণব চন্দ্র মজুমদার সহ কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশ নিয়ে থাকে।
ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু নঈম মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন নতুন ফেনী’কে জানান, বাড়িটিকে প্রাকৃতিক আবহে আরো বেশি সমৃদ্ধ করতে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছেন। তিনি জানান, হাবিব ম্যানশনের অনুকরণ করে আশ পাশের এলাকায় আরও কয়েকটি বাড়িতে এমন কার্যক্রম চালু হয়েছে। গ্রামে গঞ্জেও এমন বাড়ি গড়ে তুলছে শৌখিন রুচির মালিকরা।
বাড়ির মালিক শহীদুল ইসলাম জানান, তার এ বাড়িতে উৎপাদিত ফল, মাছ, দুধ, সবজি নিজের পরিবারের চাহিদা পূরণ করে প্রতিনিয়ত আশপাশের লোকজনের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতি মৌসূমে বিক্রিও হয় অনেক টাকা। এতে করে একদিকে তিনি তার পরিবারের জন্য ফরমালিন মুক্ত টাটকা খাবার পাচ্ছে। অন্যদিকে প্রাকৃতিক আবহে সমৃদ্ধ রয়েছে তার বাড়ি।
সম্পাদনা: আরএইচ/এনকে







