আলমগীর হোসাইন রিপন >>
‘নেপাল যাচ্ছি আঠারো তারিখ ফিরে আসবো, দোয়া করিয়েন’ পরিবারের সাথে শেষ কথা ছিলো মতিউর রহমান পলাশ’র। রবিবার রাত ১২টায় ভাই ফজলুর রহমানের সাথে ফোনে কথা বলেন পলাশ।
মতিউর রহমান পলাশ ছিলেন পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট। বড় ভাই ঢাকার ব্যবসায়ী, মেঝো ভাইও কাজিরহাটে ব্যবসা করে। সেঝো ভাই মতিঝিল শাখা প্রাইম ব্যাংকে কর্মরত, তার ছোট ফজলুর রহমান এবিসি রেড়িও ট্রান্সলেট ম্যানেজার, আর মতিউর রহমান পলাশ ছিলেন রানার মোটরসের সহকারী ম্যানেজার (মোটরসাইকেল বিভাগ)।
মতিউর রহমানের পিতা আমিন উল্যাহ সে ছোট থাকতে মারা যায়। এরপর পরিবারের হালধরে বড় ভাইদের মাধ্যমে তাদের পরিবার খুব সুন্দরভাবেই চলছে। মতিউর রহমানের বিয়ের জন্য পাত্রীও দেখা হচ্ছে নেপাল থেকে আসলেই অনেক ধুমধাম করে পরিবারের সবার ছোটর বিয়ের অনুষ্ঠান করবে। কিন্তু সব হতাশায় ভরপুর হয়ে যায় একটি দূর্ঘটনা। যাতে ভেঙ্গে যায় একটি পরিবারের দেখা স্বপ্ন। শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারসহ পুরো এলাকায়। যেন কোনোমতেই মেনে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না মতিউর রহমান পলাশের মৃত্যুর সংবাদ।
বাড়ীতে প্রবেশ করতেই দেখতে পান অসংখ্য নারীর ভীড়। যারা শুধু পরিবারকে সান্তনা দিতে এসেছেন। কিন্তু নিজেকেও মানাতে পারছেন না। কিছুক্ষণ পর দেখা মিলে ভাই ফজলুর রহমানের সাথে কান্নার কারনে যেন মুখে কথাই আসছেনা। তার সাথেই সর্বশেষ কথা হয় মতিউর রহমানের। তিনি বলেন, জীবিত ব্যক্তিদের নামের তালিকায় ছোট্ট ভাইয়ের নাম দেখতে না পাওয়ায় তারা ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন সনাক্ত করতে পরিবারের সদস্য ইতিমধ্যে নেপাল গিয়ে পৌঁছলো।
সোনাগাজীর ২নং বগাদানা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের আউরারখিল গ্রামের রশিদ ডাক্তারের বাড়ীর আমিন উল্যাহ ও নুুর জাহান বেগমের কনিষ্ঠ সন্তান মতিউর রহমান পলাশ নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত বাংলাদেশের বেসরকারি বিমানসংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় প্রাণহানি ঘটে। সোমবার নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে ৪ ক্রুসহ ৬৭ আরোহীবাহী নিয়ে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫০ জনের প্রাণহানি ঘটে।
সম্পাদনা: আরএইচ/এএইচআর







