কবে শেষ হবে ফুলগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ? • নতুন ফেনীনতুন ফেনী কবে শেষ হবে ফুলগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ? • নতুন ফেনী
 ফেনী |
১৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কবে শেষ হবে ফুলগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ?

শরিফুৃল ইসলাম, ফুলগাজী প্রতিনিধিশরিফুৃল ইসলাম, ফুলগাজী প্রতিনিধি
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৯:৩৪ অপরাহ্ণ, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২১

ফুলগাজী উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্স এই উপজেলার শোয়া লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবা নেয়ার একমাত্র ভরসা। ৩১ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে তৈরী হচ্ছে নতুন ভবন। ২০১৭ সালে কাজ শুরু হলেও ৪ বছরেও শেষ হয়নি ভবন নির্মানের কাজ। প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও হয়নি একটি জটিল অস্ত্রোপচার কিংবা প্রসূতিদের সিজারিয়ান অপারেশন। টেকনিশিয়ানের অভাবে অচল হয়ে পড়ে আছে দুটি এক্স-রে যন্ত্র। নেই কোন ডেন্টাল ল্যাব ও প্যাথলজি ল্যাব টেকনিশিয়ান।

২০০২ সালে ফুলগাজী উপজেলার পুরোনো মুন্সিরহাট বাজারে ৩১ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চালু হয়। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০-২৫০ রোগী এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। গড়ে প্রতিদিন ২৫ জন রোগী ভর্তি থাকেন। তবে হাসপাতালে বেড সংকটের কারনে রোগীদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ। রোগীর সংখ্যা বাড়লে হাসপাতালের বারান্দায় আশ্রয় নিতে হয় রোগীদের। বেড সংকট নিরসনের জন্য ২০১৭ সালে ১৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মানের কাজ শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১ বছরের মধ্য ২০১৮ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো ৫০% কাজও শেষ করতে পারেনি নির্মানের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান ঢালি কনস্ট্রাকশান।

হাসপাতালের এক্স-রে টেকনিশিয়ান কয়েক বছর ধরে শূন্য পড়ে আছে। ফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সচল এক্স-রে যন্ত্র দুটি বর্তমানে অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। দন্ত বিভাগের টেকনিশিয়ানের গত ১৫ বছর ধরে শূণ্য। প্যাথলজি ল্যাব টেকনিশিয়ান পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। রোগীদের অতি প্রয়োজনীয় এক্স-রে ও সাধারণ পরীক্ষাগুলো করার জন্য জেলা শহরে আসতে হয়। এতে করে রোগীদের যেমন ভোগান্তি পোহাতে হয় তেমনি অধিক মূল্যে খরচ করতে হচ্ছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে আরও জানা যায়, গত ১৭ বছরেও হাসপাতালে অবেদনবিদ (অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ) এবং জরুরি চিকিৎসা কর্মকর্তার (ইএমও) পদ সৃষ্টি করা হয়নি। অবেদনবিদ ও জরুরি চিকিৎসা কর্মকর্তা না থাকায় হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থাকলেও তা অযত্নে পড়ে রয়েছে। ফলে সেটা জরুরি কিংবা প্রসূতি রোগীদের কোনো কাজে আসছে না। বর্তমানে হাসপাতেল সৃষ্ট ১৬ পদের মধ্য ১৫ জন চিকিসৎক কর্মরত আছেন। দীর্ঘদিন ধরে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) পদটি শূন্য পড়ে আছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও চিকিৎসা নিতে আসা হারুন অর রশিদ নতুন ফেনীকে জানান, এ হাসপাতালে এক সময় ডাক্তার ছিলো ৫জন। এখন ডাক্তার বেশি থাকলেও সবাইকে নিযমিত পাওয়া যায়না। এক্স-রে, প্যাথলজীসহ অন্যান্য পরীক্ষাগুলা হাসপাতালে করতে পারলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হতো।
তবে জরুরি সেবা ও প্রয়োজনীয় প্রাথমিক ঔষধপত্র পাওয়ায় কিছুটা সন্তুষ্ট রোগীরা।

নির্মান কাজের অগ্রগতি বিষয়ে জানার জন্য ঢালি কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আবদুস সালাম ঢালির মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি ।

হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. এবিএম মোজাম্মেল হক জানান, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন ভবনের নির্মান কাজ শেষ হলে, টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেয়া হলে ফুলগাজীতে সাস্থ্য সেবার মান আরো বাড়বে। ভবন নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করা ও টেকনিশিয়ান নিয়োগের জন্য জেলা সিভিল সার্জন, সাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো সমাধান মেলেনি।

ফেনী জেলা সাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আলাউদ্দিন ভূঞাঁ বাপ্পি নতুন ফেনীকে বলেন, ঠিকাদারের গাফলতির কারনে ভবনের নিমার্ণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। তবে আমরা আশা করছি ২০২১ সালের জুনের মধ্য কাজ শেষ হবে।

ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসেন দিগন্ত নতুন ফেনীকে বলেন, ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকটের বিষয়টি দীর্ঘদিনের সম্যা। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। ভবনের কাজ দ্রুত শেষ করার বিষয়েও সাস্থ্য প্রকৌশল নোয়াখালী আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে তাগিদ দেয়া হচ্ছে। আশা করি দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে।
সম্পাদনা:আরএইচ/এসই

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.