অনেক বেশি পুরাতন না হলেও ফেনীতে বেশ পরিচিত হাজীর মিস্টি। গরম গরম রসে ডুবানো হাজীর মিস্টি মুখে দিলেই হাওয়া হয়ে যায়। এক অতুলনীয় স্বাদে ভরপুর এই মিস্টি। বাইরের জেলা থেকে কোন মেহমান এলে হাজীর মিস্টি খেয়ে যান এবং সাথে করে নিয়েও যান। শুশুর বাড়ি, আত্মীয় স্বজনের বাড়ি যাওয়ার সময়, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত থাকে এই মিস্টি।
২০০৬ সালে ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ বাজারে হাজী শফিউল্যাহ প্রতিষ্ঠা করেন হাজীর হোটেল। তার ছেলে রিয়াদ (২৬) সৌদি প্রবাসী কাকা দেলোয়ার হোসেন এর কাছ থেকে এই মিস্টি বানানো শিখেন। হাজীর হোটেলে তখন এই মিস্টি বিক্রি করতো দোকানের নাম অনুসারে মিস্টির নাম প্রচলিত হয় হাজীর মিস্টি ।

হাজীর মিস্টির স্বত্ত্বধীকারি রিয়াদ হোসেন জানান, গরুর খাটি দুধ, পাউডার দুধ, ডিম, চিনি দিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে এই মিস্টি তৈরী করা হয়। এই মিস্টি তৈরীতে আটা, ময়দা ব্যাবহার করা হয়না। প্রথমে গরুর দুধ দিয়ে ছানা তৈরী করা হয় । পরবর্তীতে সেই ছানার সাথে পাউডার দুধ, হালকা পরিমানে চিনি, ডিম মিশিয়ে গোলাকার মন্ড তৈরী করা হয়। সেই মন্ড জাল দিলে তৈরী হয় নরম নরম সুস্বাদু হাজীর মিস্টি। এক পাতিলে ৪০ কেজি মিস্টি তৈরী করা হয় এতে সময় লাগে ৪০ মিনিট।
রিয়াদ জানান, শুরুতে মাত্র একটি দোকান থাকলেও এখন হাজীর মিস্টি ৭টি শাখা রয়েছে। মিস্টির মূল কারখানা মতিগঞ্জ বাজারে অবস্থিত । কারখানায় ২০ জন কারিগর ও ৭টি শাখায় ২০০ জন লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পেরে সে আনন্দিত।

তিনি জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিস্টির অর্ডার আসে। ঢাকা থেকে যেসব অর্ডার আসে অগ্রিম টাকা পাঠিয়ে দিলে তারা ঢাকার বাসে তুলে দিলে কাস্টমারের কাছে ৩-৪ ঘন্টা মধ্য মিস্টি পৌছে যায়। সীমিত লাভে প্রতি কেজি ১৮০ টাকা এবং খুচরা এক পিচ ১০ টাকা বিক্রি করেন। কেজিতে ১৮-২০ টা মিস্টি হয়।
হাজীর মিস্টি মহিপাল শাখায় খেতে আসা এক কাস্টমার বলেন, যে জীবনে একবার এই মিস্টি খাবে সে আর কোন মিস্টি খেতে চাইবেনা এটা ছাড়া। এই মিস্টি এতই স্বাদ সারা জীবন মনে থাকবে।
মিস্টি খেতে আসা তাসিন জানান, হাজীর মিস্টি অনেক জনপ্রিয় । আগে ফেনীতে শাখা না থাকায় সব সময় খাওয়ার সুযোগ ছিলনা। এখন মন চাইলেই খেতে পারি। অনান্য মিস্টি থেকে আলাদা স্বাদ। তবে মনে হচ্ছে আগে থেকে মানটা কমে যাচ্ছে।
সম্পাদনা:আরএইচ/এইচআর







