স্বজনদের ‘নির্মমতায়’ প্রাণ গেলো সাহাব উদ্দিনের • নতুন ফেনীনতুন ফেনী স্বজনদের ‘নির্মমতায়’ প্রাণ গেলো সাহাব উদ্দিনের • নতুন ফেনী
 ফেনী |
২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্বজনদের ‘নির্মমতায়’ প্রাণ গেলো সাহাব উদ্দিনের

বিশেষ প্রতিনিধিবিশেষ প্রতিনিধি
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১২:৪৩ পূর্বাহ্ণ, ০৩ জুন ২০২০

করোনা সন্দেহে স্বজনরা ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখার পর ষাটোর্ধ্ব সাহাব উদ্দিনের নির্মম মৃত্যু অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাতে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভাদাদিয়া গ্রামে জ্বর-কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সাহাব উদ্দিন মারা যাওয়ার পর চাঞ্চল্যকর এ তথ্য বেরিয়ে আসে।

স্থানীয়রা জানায়, চট্টগ্রামের একটি পেট্রোল পাম্পে চাকরি করতেন সাহাব উদ্দিন। জ্বর-কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত শুক্রবার নিজ বাড়িতে আসেন তিনি। শনিবার রাতে শরীর আরো খারাপ হলে রোববার দুপরে নিজে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিজে গিয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে আসেন। হাসপাতাল থেকে ফেরার পর সাহাব উদ্দিনের সাথে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা বন্ধ করে দেয়। সাহাব উদ্দিন দোতলা বাড়ির নিচ তলার একটি কক্ষে অবস্থান করলে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা ওই কক্ষে ছিটকিনি মেরে দ্বিতীয় তলায় চলে যায়। বিকেলে শ্বাসকষ্ট ও কাশি বেড়ে যায়। এ সময় তিনি চিৎকার করে খাবার ও পানি চাইলেও কেউ দেননি। ছোট ছেলে এগিয়ে যেতে চাইলে তাকে বোনেরা বাধা দেয়। এভাবে চিৎকার করতে করতে রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয় সাহাব উদ্দিনের। সাড়াশব্দ না পেয়ে পরিবারের লোকজন জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখেন তিনি মারা গেছেন। এসময় ছোট ছেলে চিৎকার দিয়ে কান্না শুরু করলে খবরটি জানাজানি হয়।

পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রবিউজ্জামান বাবু ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন। সাহাব উদ্দিনের স্ত্রী, তিন ছেলে, তিন মেয়ে ও তিন জামাতা ছিলেন। ঘটনার সময় দুই ছেলে কাজের সূত্রে গ্রামের বাইরে ছিলেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফেরদৌস রাসেল বলেন, বাড়ির একটি কক্ষের বাইরে থেকে ছিটকিনি লাগানো ছিল। সেটি খুলে আমরা ভেতরে বিভৎস দৃশ্য দেখতে পাই। সম্ভবত সাহাব উদ্দিনের শ্বাসকষ্ট উঠেছিল এবং তিনি তা সহ্য করতে না পেরে মেঝেতে গড়াগড়ি করেছিলেন। তার পরনের কাপড় খোলা অবস্থায় পাশে পড়েছিল। পরে ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় লাশ উদ্ধার করে দাফন করা হয়।


মতিগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউজ্জামান বাবু বলেন, সাহাব উদ্দিনের মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা লাশ ফেলে পালিয়ে যান। মৃতের স্ত্রী, মেয়ে, জামাতা কেউ মরদেহ দাফনে আসতে রাজি নন। বার বার অনুরোধ করার পরও তার আত্মীয়-স্বজনরাও আসছেন না। এ অবস্থায় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মৃতের দাফনের সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দাফনের জন্য পিপিই ও সোনাগাজী থানা থেকে মরদেহের জন্য ব্যাগ আনা হয়েছে। রাত সাড়ে তিনটার দিকে জানাযা ও দাফনের কাজ সম্পন্ন করা হয়।

সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা উৎপল দাস জানান, রোববার ওই ব্যক্তির করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত ফলাফল আসেনি বলে জানান তিনি। সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো ও যমুনা টিভি
সম্পাদনা: আরএইচ/ এনজেটি

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.