ফেনীতে ৭৪৫ জন নারী প্রশিক্ষনার্থীদের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে স্মার্ট উপহার ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়েছে।
বুধবার সকালে ফেনী শহরের ট্রাংক রোডের পিটিআই মাঠে জেলা প্রশাসন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদপ্তর’র উদ্যোগে আয়োজিত নারী প্রশিক্ষনার্থীদের হাতে ল্যাপটপ বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে “হার পাওয়ার” প্রকল্পের আওতায় ফেনী ছাড়াও চাঁদপুর ও লক্ষীপুর জেলার মোট ৭৪৫ জন নারী প্রশিক্ষণার্থীকে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ফেনী জেলায় ২৪০ জন ছাড়াও লক্ষ্মীপুরে ২৬৫ ও চাঁদপুরে ২৪০ জন নারী রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তারের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, পুলিশ সুপার জাকির হাসান, ই-ক্যাব প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো: মোস্তফা কামাল। এছাড়া প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফেনীর চৈতি সাহা, লক্ষ্মীপুর জেলার ইসরাত জাহান তানজিনা, চাঁদপুর জেলার সাবিহা জামান।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বিশ্বজয়ের হাতিয়ার একটি স্মার্ট ল্যাপটপ। প্রতিবছর ২০-২৫ লাখ তরুন-তরুনী কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছে। সবাইকে চাকরী দেয়া সম্ভব নয়। সবাই ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যে চলে যেতে পারবেনা। তাহলে নিজের গ্রামে বসে আর্থিক স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। তরুন-তরুনীদের উপর নির্ভর করছে স্মার্ট বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলতেন নারীর ক্ষমতায়নে দরকার অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা।
পলক আরো বলেন, দেশে যৌতুকপ্রথা ব্যাধী হয়ে উঠছিল। ৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে নারী শিক্ষার প্রসার, যৌতুক প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্ছার ভূমিকা রাখে। একসময় প্রাইমারী স্কুলে পুরুষ শিক্ষক ছিলেন। এখন ৬০শতাংশ নারী। প্রধানমন্ত্রীর অসংখ্য সিদ্ধান্তে নারীর ক্ষমতায়ন, কর্মক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। ২০০৮ সালে ঘরে ঘরে বিদ্যুত ছিল না। এখন শতভাগ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত। ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেটে যুক্ত। ১৫ বছর আগের চেয়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। আইটি সক্টরে ২০ লাখ তরুন-তরুনীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এ খাত থেকে ১.৯ মিলিয়ন ডলার আয় করেছি। উপহারপ্রাপ্ত তরুনীরা দেশের কল্যানে আরো ১০ জন উদ্যোক্তা তৈরি হতে হবে। ফেনী জেলায় ১১৪টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব আছে। আরো ১শটি ল্যাব তৈরির ঘোষণা দেন প্রতিমন্ত্রী পলক।
ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম বলেছেন, ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন অনেকে হাস্যরস করেছেন। ১৫ বছর পর প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন স্মার্ট বাংলাদেশ। স্বল্প মেয়াদী, মধ্য মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী ২০৪১ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা করেছেন। আজ একটা ল্যাপটপ একটা তরুনীকে মাথা উঁচু করে থাকার প্রেরনা যোগাবে। পৃথিবী অনেক দিক দিয়ে এগিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে অন্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। আগামী ৫ বছরে তথ্যসমৃদ্ধ ছাড়া তথ্যবর্জিত মানুষ থাকবেনা।
ফেনী-২ আসনের সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট নাগরিক প্রয়োজন। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও পিছিয়ে নেই। আজ যারা ল্যাপটপ পাচ্ছেন তাদের অগ্রনী ভূমিকা রাখতে হবে।
এরপর প্রতিমন্ত্রী পলক পরশুরাম উপজেলার আলাউদ্দিন আহমেদ নাসিম কলেজ সংলগ্ন “শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার” স্থাপনের নির্ধারিত জায়গা পরিদর্শন করেন।
সম্পাদনাঃ আরএইচ