মোহাম্মদ আশরাফুল। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক। টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরি করার রেকর্ডের অধিকারী। আশরাফুল বিশ্বের কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট শতক করার রেকর্ড করেন। ২০০১ সালের ১১ এপ্রিল জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ওয়ানডে অভিষেক হয় আশরাফুলের। ওয়ানডে ও টেস্ট ক্যারিয়ারে নতুন নতুন চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশসহ গোটা ক্রিকেট দুনিয়াকে। ২০১৩ ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে জাতীয়দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। ১ অক্টোবর বিকেলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বরপূত্র মোহাম্মদ আশরাফুল স্টার লাইন গ্রুপের আমন্ত্রণে ফেনী সফর করেন। তাঁর ক্রিকেট জীবনের অতিত, বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলেছেন- শাহাদাত হোসেন তৌহিদ
নতুন ফেনী: কেমন আছেন?
আশরাফুল: আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।
নতুন ফেনী: ফেনীতে এসে কেমন লাগছে?
আশরাফুল: অনেক ভালো লাগছে, ফেনীর মানুষ অনেক বেশি অতিথিপরায়ন। এর আগেও ফেনীতে এসেছি তখনও ফেনীর মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি এবারও ভক্তদের ভালোবাসা দেখে সত্যিই অনেক বেশি মুগ্ধ হয়েছি। ফেনীতে ক্রিকেট নিয়ে তরুণ প্রজন্মের যে উচ্ছ্বাস সেটি দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি।
নতুন ফেনী: ফেনীর মানুষ সম্পর্কে আপনার অনুভূতি কেমন?
আশরাফুল: বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে এখানকার মানুষের আচার-আচরণ অনেক ভালো। মানুষকে ভালোবাসা দিতে জানে। যে কোনো মানুষকে আপন করে নিতে পারে; এটি দেখে আমার অনেক ভালো লাগছে।
নতুন ফেনী: ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুন ফর্মে আছে জাতীয় দলের চান্স পাওয়া ফেনীর ছেলে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। তার সম্পর্কে আপনার অভিমত কি?
আশরাফুল: বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সম্ভাবনাময় তরুণ মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ওর ফিউচার খুবই ভালো। আমি তার খেলা দেখেছি। সে বিপিএলে ও জাতীয় লীগগুলোতে ভালো পারফরম্যান্স করেছে। আরেকটু মনোযোগী হলে দেশকে সে আরো ভালো ক্রিকেট উপহার দিতে পারবে। ভবিষ্যৎ জাতীয় দলে সে অপরিহার্য একজন খেলোয়োড় হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবে। এভাবেই সে বাংলাদেশ দলকে আরো ৮/১০ বছর ধারাবাহিকভাবে খেলতে পারবে।
নতুন ফেনী: ক্রিকেট নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
আশরাফুল: আমি ক্রিকেট কন্টিনিউ করতে চাই। এখন ঘরোয়া ক্রিকেটগুলোতে নিয়মিত খেলছি। আশা করি আগামী অল্প সময়ের মধ্যে জাতীয় দলে ফিরতে পারব। ৬ অক্টোবর চট্টগ্রামে একটি ম্যাচ রয়েছে। এছাড়াও আরো তিনটি ম্যাচ রয়েছে সেগুলোতো অন্তত দুইটা সেঞ্চুরি করার চেষ্টা করব। সব মিলিয়ে ভালো পারম্যান্স করতে নিজেকে ক্রিকেটে ফেরাতে চাই।
নতুন ফেনী: আপনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জনপ্রিয় খেলোয়াড় ও সাবেক অধিনায়ক। ২০১৩ সালে ম্যাচ ফিক্সিংয়োর অভিযোগ উঠে আপনার বিরুদ্ধে। বিষয়টি আপনার ক্রিকেট জীবনে কেমন প্রভাব পড়েছে।
আশরাফুল: বিষয়টি যদিও আমাকে আমার ক্রিকেট জীবনে খুব নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কিন্তু তা সত্ত্বে ও ভক্তদের ভালোবাসায় ও আমি ক্রিকেটে ফিরে আসতে পেরেছি বলে আমার অনেক ভালো লাগছে। আর ওই অপরাধের জন্য তো আমি শাস্তি পেয়েছি।
নতুন ফেনী: অভিযোগ স্বীকার করায় আপনাকে জাতীয়দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ওই সময়ে সামগ্রিক বিষয়টি কিভাবে মোকাবেলা করলেন?
আশরাফুল: আসলে সবকিছুর যেমন উত্থান পতন রয়েছে তেমনি ক্রিকেটও এর বাইরে নয়। ওসব এখন মাথা থেকে ঝেঁড়ে ফেলেছি। এখন আমার সামনে একটি চ্যালেঞ্জ জাতীয় দলে ফিরে আসা। আমি আবারো ক্রিকেটে পরিপূর্ণ মনোযোগ দিতে চাই। ক্রিকেট নিয়েই থাকতে চাই।
নতুন ফেনী: ফিক্সিং হতাশা থেকে ক্রিকেট ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছে হয়েছিলো?
আশরাফুল: না, তেমন নয়। আমার বিশ্বাস ছিলো আমি ক্রিকেটে ফিরে আসবই। কারণ ক্রিকেট আমার জীবনের সাথে অঙ্গা-অঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে।
নতুন ফেনী: সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় লীগগুলো ভালো খেলছেন; জাতীয় দলে ফেরার কোনো আশা আছে কিনা?
আশরাফুল: জাতীয় দলে ২০১৮ এর আগস্ট থেকে খেলতে পারবো। এর আগে ডোমেস্টিক ক্রিকেটে যতগুলো খেলা রয়েছে সেখানে ভালো খেলতে পারলে হয় নির্বাচকরা আমাকে দলে নেবে বলে আমার বিশ্বাস। আমার সামনে চ্যালেঞ্জ একটাই-ডোমেস্টিক ক্রিকেটে ভালো খেলা।
নতুন ফেনী: সম্প্রতি বাংলাদেশ দল সাউথ আফ্রিকায় সফর করছেন। সেখানে প্রথম টেস্টে ম্যাসে বাংলাদেশের ফারফর্ম নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
আশরাফুল: এ সফরে বাংলাদেশ তাদের সর্বোচ্চ খেলাটা উপহার দিতে ব্যার্থ হচ্ছে। ভিন্ন পরিবেশে কারণে সামান্য প্রভাব ফেলছে। আশা করছি বাংলাদেশ ক্রিকেটে তার স্বরুপে ফিরে আসবে। মুশফিকের নেতৃত্বে বাংলাদেশে দল যেভাবে খেলছে এটিকে কন্টিনিউট করতে পারলে টেস্টে আরো বেশি এগিয়ে যাবে।
নতুন ফেনী: দীর্ঘক্ষণ সময় দেয়ার আপনাকে ধন্যবাদ
আশরাফুল: ধন্যবাদ আপনাকে এবং নতুন ফেনী পরিবারকে।