সম্পর্ক গড়ুন
জীবনে সুখ পেতে সম্পর্ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেসব মানুষের শক্ত এবং বিস্তৃত সামাজিক যোগাযোগ রয়েছে, তারা সুখী, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং বেশিদিন বাঁচেন। পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ভালোবাসা দেয়, অর্থাৎ আপনার নিজের গুরুত্ব অনুধাবনে আপনাকে সহায়তা করে। সুতরাং সম্পর্ক ধরে রাখা আর নতুন সম্পর্ক গড়া সুখী হওয়ার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
অন্যের জন্য করুন
সুখী হতে হলে অন্যের সেবা করাও জরুরি। কাউকে সহায়তা করলে শুধু যে সে উপকৃত হয় তাই নয়, আপনাকেও তা সুখী এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করবে। কাউকে সহায়তার মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে আপনার সম্পর্কটাও মজবুত করে নিতে পারেন। আর ‘অন্যকে দেয়া’ বলতে শুধু অর্থ বোঝায় না, কাউকে সময় দেয়া, বুদ্ধি-পরামর্শ এবং ইতিবাচক অনুপ্রেরণা দেয়াও এক ধরনের সহায়তা।
স্বাস্থ্যের যত্ন নিন
আমাদের দেহ এবং মন একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। তাই শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকলে মনও উৎফুল্ল থাকে। শরীরচর্চা অবসাদ দূর করতে সহায়ক। তার মানে এই নয় যে, প্রতিদিন আপনার ম্যারাথনে অংশ নিতে হবে। নিত্যদিন করা যায় এমন কিছুও বেছে নিতে পারেন, পারেন মাঝে মাঝে বাইরে ঘুরতে যেতে। আর পর্যাপ্ত ঘুমও জরুরি।
লক্ষ্য নির্ধারণ করে সামনে এগোন
ভবিষ্যত সম্পর্কে ভালো অনুভব করাটা আমাদের সুখী রাখে। আমাদের এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত, যা পূরণ করতে আমাদের মধ্যে উৎসাহ এবং উদ্দীপনা থাকবে। তবে এমন লক্ষ্যের পেছনে ছুটবেন না, যা আসলে পূরণ করা অসাধ্য। সেরকম কিছু করলে বরং পরিশ্রান্ত হয়ে পড়বেন, যা অর্থহীন।
আশপাশটা খেয়াল করুন
কখনো মনে হয়েছে যে, চারপাশটা আরো বেশি সজীব? হ্যাঁ, সেটাই। আপনি হয়ত আশেপাশের অনেক কিছুর দিকে খেয়াল করছেন না। আরো মনোযোগী এবং সচেতন হতে আশপাশে কী ঘটছে সেদিকেও মনোযোগ দিন। সম্পর্কের মধ্যে নতুন কিছু করা যায় কি না দেখুন, কিংবা বাসা থেকে অফিসে হেঁটে আসার সময় চারপাশের প্রকৃতির দিকে তাকান। এসব একঘেয়েমী থেকে মুক্তি দেবে।
ইতিবাচকভাবে অগ্রসর হোন
ইতিবাচক অনুভূতি শুধু ক্ষণস্থায়ী সুফলই আনে না, দীর্ঘমেয়াদেও তা শরীরের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। যদিও আমাদের জীবনে উত্থান-পতন আছে, তবে যে কোনো পরিস্থিতির ইতিবাচক দিকটা চিন্তা করলে সেখান থেকে ভালো কিছু নেয়া সম্ভব হতে পারে।
নতুন কিছু শিখুন
নতুন কিছু শেখার মানসিকতা আমাদের শরীর এবং মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর ফলে আমাদের নতুন নতুন ধারণা তৈরির পথ সুগম হয়। উৎসাহী মনোবৃত্তি ধরে রাখতেও সহায়ক এই চেষ্টা। গান শেখা, নতুন কোনো ক্লাবে যোগদান কিংবা নতুন কোনো খেলা শুরুও নতুন কিছু শেখার মধ্যেই পড়ে।
শক্ত হোন
আমাদের জীবনে শুধু যে ইতিবাচক ঘটনাই ঘটে, তা নয়। অনিচ্ছাসত্ত্বেও অনেক সময় অনাকাঙ্খিত, দুর্ভাগ্যজনক ঘটনারও শিকার হই আমরা, যার অনেক কিছু হয়ত আমাদের পক্ষে রোখা সম্ভব হয় না। অনেক সময় সমস্যা তৈরিতে আমাদের হাত না থাকলেও সেই সমস্যা কিভাবে মোকাবিলা করবেন সেটা আপনি নির্ধারণ করতে পারেন। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিজেকে প্রস্তুত রাখুন, ভেঙ্গে পড়বেন না।
নিজের প্রতি আস্থা রাখুন
জীবনে কেউই নিখুঁত নয়। তা সত্ত্বেও আমরা নিজেদের ভেতরটা অন্যদের বাহিরের সঙ্গে তুলনা করি। নিজের ত্রুটিগুলো নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগলে কিন্তু আপনি যা পেয়েছেন তা উপভোগের সময়টাও চলে যায়। বরং আমরা যেমন, তেমনটা গ্রহণ করে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে গেলে মঙ্গল। এটা অন্যদেরও তাদের খুঁতসহ গ্রহণ করতে আমাদের উৎসাহ দেবে।
জীবনের ‘অর্থ এবং উদ্দেশ্য’ ঠিক করে নিন
আপনার জীবনের অর্থ এবং উদ্দেশ্য কী সেটা আপনারই ঠিক করে নিতে হবে৷ আপনার ধর্ম পরিচয়, অভিভাবকত্ব কিংবা চাকুরি এক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। সুতরাং ভাবুন এবং নিজের জীবনের উদ্দেশ্যটা ঠিক করে নিন। জীবন একটাই, সেটা উপভোগের দ্বিতীয় সুযোগ মিলবে না কিন্তু! দ্রষ্টব্য: অ্যাকশনফরহ্যাপিনেস ডটঅর্গ ওয়েবসাইট থেকে পরামর্শগুলো নেয়া হয়েছে।
সম্পাদনা: আরএইচ