আমার একটাই রোগ আমি তোকে ভালোবাসি। তোকে তো বলেছি, আমার অযোগ্যতাকে তুই যোগ্য করে নেয়। কিন্তু তুই শুনেছনি কারন আমি খুব সাধারণ বলে। আচ্ছা তুই বল তো, তুই এমন কি অসাধারণ? আমি তো ভাবিনা তোকে, আমি ভালোবাসি বলে তোর কথা বলি। বলে যাই আনমনে গোপনে তোকে কল্পনা করি। আর আমার সত্যটাকে আমি খুব ঘৃণা করি, এই জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মানুষ পৃথিবী গিলে খায়। এটাই তো আমার ভাবনা, সত্য দিয়ে আমি তোর ভালোবাসা কিনতে পারিনি। যদি বলতি আমার অযোগ্যতার কথা তবে যে যোগ্য হতে আমি পৃথিবীর সকল মন্দিরে মন্দিরে তোকে পাওয়ার প্রার্থনাই করতাম। যদি স্রষ্টা ফিরে নিতেন মুখ তবে যে আমি তোর বাড়ির চাকর হতাম। তোকে দেখতাম মালিকের গোলাম হয়ে। আমার সকল কিছুর উর্ধ্বে আজ তোর মনটাই সবচেয়ে দামি। কিন্তু আমি তো ল্যাংটা নই, তোকে পাওয়ার বাসনায় প্রভুর ঘরে একগছ ধুতি পরে প্রার্থনা করি। আজ তুই আমাকে করুণা করিস আরো বলিস আমার বাবা নেই বলে, আমি নাকি তোর অযোগ্য। তাহলে আগে কেনো তুই আমার সাথে বন্ধুতা করলি। সকাল বিকাল মধুর আলিঙ্গনে স্বপ্নগুলো ভাষাতি সোনারতরীতে। আমি ছেলেটাও কালো, গায়ের জামাটাও সবসময় ময়লা থাকে। তাই তো কখনো সাহস করে তোর সামনে দাঁড়াইনি। তোর চোখে চোখ রাখিনি ভয়ে। এই জন্য যদি তুই কখনো আমায় তাড়িয়ে দিস। এই সত্য ভয়গুলো আমায় তাড়া করতো বলে, আমি তোর কথা বলতাম আমার বন্ধুদের। কখনো কখনো দেখাতাম তোর এসএমএস গুলো। বন্ধুরা ভাবতো তুই আমায় ভালোবাসিছ, খুব ভালোবাসিছ। তোর কথা মিথ্যে নয় খুব সত্য। কারণ তুই জন্মেছিস কারুকাজের ঘরে। আর আমি তো ছনের চাউনি মাটির ঘরে। মনে এই জন্যে ভুলে গেছিস আমায়। আমাকে নিয়ে তোর মধুর দিনগুলো। আমিও কি তোকে ভুলে গেছি?
তান্হা, আমি তোকে আজ হারিয়ে পেলেছি। মাঝে মাঝে তোর স্মৃতিগুলো খুঁজি মেজেস ইনবক্সে। তোর হাতের ছাপ মনে করে এসএমএস গুলো খুব যতœ করে প্রতি রাতে একটা একটা পাঠ করি। তোকে এখনো কিছু মনে হয়না আমার, শুধু মনে হয় তুই আমার কাছে একেকটা দিনের মেঘলা আকাশের সূর্য আর জোনাক জ্বলা রাতের নক্ষত্র। বাবাকে আজ খুব মিস করি। একদিন তুই কান্না করে বলেছিস, তোকে কেউ ভালোবাসেনা। আমি তোকে সান্তনা দিয়ে বলেছি, দুঃখ করনা তানহা আমি তো আছি তোমার বন্ধু হয়ে। এবং থাকবো তুমি যতদিন বাঁচ।
সেই দিন তোর হঠাৎ একটি এসএমএস আমায় কেমন জানি ভাবন্দোলিত করলো। যেমন করে এসএমএসটি সাজিয়েছিস, নো কল, শুধু এসএমএসে কথা হবে ‘তান্হা’। কিছুটা কৌতহল হয়ে ওই নাম্বারে কল দিলে আমিও বেকুব হয়ে যাই। অপর প্রান্তে কোন শব্দ নেই। নীরবতা দেখে ভাবনা আমার বেড়ে যায়। কথা হয়না, দুই দিন পর আবারো এসএমএস। এভাবে সময়টা নিয়েছিস দিন কি মাস পার করে তিন বছর। ভালো থাক তান্হা, ভালো রাখিস তোর দেহটাকে। কারন, সময় অসময় আমাকে তো বলতি, তোর শরীর খারাপ। আমিও অবুঝ তোর কথায় সাথে সাথে সুস্থতা কামনা করে কতনা ভালোবাসা দেখাতাম। ভাবতে বুঝি লজ্জা লাগে আমার সব কিছু ছিলো ভুল, আর তোর সব কিছু অভিনয়। তুই সব কিছু পারবি বলে আমার বিশ্বাস, এই জন্য তোর বেড়ে উঠা রাজধানীর হাজার মানুষের গা ঘেঁষে। আর আমি এক মফস্বলের ছেলে সীমান্তে পড়ে রব তোর স্মৃতি ধরে।
জোনাক রাতের পদচিহ্ন । সাইফুল ইসলাম আপন
