নিজস্ব প্রতিনিধি>>
ফেনীর বহুল আলোচিত ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা একরামুল হক একরাম হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে। রবিবার থেকে শুরু হয়ে সোমবার তৃতীয়দিরেন মতো ফেনী জেলা ও দায়রা জজ আমিনুল হকের আদালতে এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। ৩১ জানুয়ারী বুধবারও একই আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে বলে আদালত সূত্র জানায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাক্ষ্য গ্রহণ, সাফাই সাক্ষীর জেরা শেষ হওয়ার পর রবিবার থেকে সরকার পক্ষে ও আসামী পক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে পিপি হাফেজ আহম্মদ প্রথম বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি আদালতকে জানান, এ মামলায় ৫৯ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৫০ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলার চার্জশীটভুক্ত ৫৬ জন আসামীর মধ্যে ১৬ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে জবানবন্দী প্রদান করেছেন। স্বীকারোক্তি প্রদান করা ১৬ জনের মধ্যেেে হলাল উদ্দিন নামে একজন পরে রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করেন। এছাড়া মামলার প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীরাও একরামুল হকের গাড়ির গতিরোধ, গুলি করে, কুপিয়ে ও গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার রোমহর্ষক বর্ননা দিয়েছেন। সরকারী আইনজীবী আসামীদের মৃত্যুদন্ডসহ সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
তিনজন আসামীর পক্ষের আইনজীবী শাহ মোহাম্মদ কায়কোবাদ ও একজন আসামীর পক্ষের আইনজীবী মাইনুদ্দিন আসামীদের নির্দোষ দাবি করে তাদেরকে বেকসুর খালাস দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানান। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী কফিল উদ্দিন ১৭ জন পলাতক আসামীর পক্ষ হয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
পিপি হাফেজ আহম্মদ জানান, মামলার চার্জশীটভুক্ত ৫৬ জন আসামীর মধ্যে বর্তমানে ১৪ জন কারাগারে, ২৪ জন জামিনে ও ১৭ জন পলাতক রয়েছেন। পলাতকদের মধ্যে ৭ জন জামিনে গিয়ে পলাতক এবং ১০ জন একরাম হত্যা মামলা দায়েরের পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। এছাড়া জামিনে থাকা মো. সোহেল ওরফে রুটি সোহেল নামে একজন আসামী ইতিমধ্যে র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন।
সোমবার দ্বিতীয়দিন আদালতে আসামী পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এদিকে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির আদেলের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউর এডভোকেট রানা দাস গুপ্ত।
আসামী আবদুল কাদেরের পক্ষের এডভোকেট জাহিদ হোসেন কমল, মো: আরিফ ওরফে নাতি আরিফের পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান ও অন্যান্য আসামীর পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সাহাব উদ্দিন যুক্তিতর্ক উপস্থান করেন এবং আসামীদের নির্দোষ দাবি করে তাদেরকে বেকসুর খালাস দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানান।
পিপি হাফেজ আহম্মদ আরো জানান, মামলার চার্জশীটভুক্ত ৫৬ জন আসামীর মধ্যে বর্তমানে ১৪ জন কারাগারে, ২৪ জন জামিনে ও ১৭ জন পলাতক রয়েছেন। পলাতকদের মধ্যে ৭ জন জামিনে গিয়ে পলাতক এবং ১০ জন একরাম হত্যা মামলা দায়েরের পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। এছাড়া জামিনে থাকা মো. সোহেল ওরফে রুটি সোহেল নামে একজন আসামী ইতিমধ্যে র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন।
একই ভাবে ৩০ জানুয়ারী তৃতীয় দিনের মতো মঙ্গলবারও আলোচিত একরাম হত্যা মালার যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করা হচ্ছে। ফেনী জেলা ও দায়রা জজ আমিনুল হকের আদালতে এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হচ্ছে।
এর আগে ২০১৪ সালের ২০ মে ফেনী শহরের একাডেমীস্থ বিলাসী সিনেমা হলের সামনে ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সভাপতি একরামুল হক একরামকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে তাকে বহনকারী গাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। ঘটনায় একই দিন রাতে নিহত একরামের বড় ভাই বাদী হলে বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন মিনারকে প্রধান আসামী করে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় একই বছরের ২৮ আগষ্ট পুলিশ ৫৬ জনকে আসামী করে চার্জশীচ দাখিল করে।
সম্পাদনা: আরএইচ/এএইচই







