লাপাত্তা একরাম হত্যা মামলার ফাঁসিরদন্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামী! • নতুন ফেনীনতুন ফেনী লাপাত্তা একরাম হত্যা মামলার ফাঁসিরদন্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামী! • নতুন ফেনী
 ফেনী |
১৬ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাপাত্তা একরাম হত্যা মামলার ফাঁসিরদন্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামী!

নুর উল্লাহ কায়সারনুর উল্লাহ কায়সার
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১২:৪৫ অপরাহ্ণ, ২০ মে ২০২২

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একরামুল হক হত্যা মামলার ৮ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে সোর্স নিয়োগ করেও পলাতক এসব আসামীর কোন হদিস পাচ্ছেনা পুলিশ। এদিকে রায় ঘোষণার ৪ বছর পরও একরাম হত্যা মামলা এখন হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় আছে। তবে পেপারবুক তৈরি না হওয়ায় ও করোনা পরিস্থিতির কারণে কার্যতালিকায় আসেনি।


বর্তমানে এ মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ৩৯ আসামীর মধ্যে ২৩ আসামী কারাগারে ১৬ আসামী পলাতক রয়েছে। পলাতকদের মাঝে ৭ জন জামিন নিয়ে পলাতক, ঘটনার শুরু থেকে ৯ জনকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। কারাগারে থাকা আসামীরা নিজেদেরকে নির্দোষ দাবী করে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। তবে তা এখনো শুনানীর কার্যতালিকায় আসেনি।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ২০ মে ফেনী শহরের একাডেমী রোডের বিলাসী সিনেমা হলের সামনে চেয়ারম্যান একরামুল হককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে, কুপিয়ে, গুলি করে ও গাড়িতে আগুন দিয়ে হত্যা করেছিল নিজ দলীয়রা। হত্যাকাণ্ডের রাতে একরামুল হকের বড় ভাই জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ৫৬ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ ফেনী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক আমিনুল হক রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ৫৫ আসামির মধ্যে ৩৯ জনকে ফাঁসির আদেশ দেন। খালাস পান ১৬ জন। অভিযোগপত্র দাখিলের পর সোহেল নামে এক আসামি র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আলোচিত এ মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ২৩ আসামী এখন কারাগারে রয়েছেন। তারা হচ্ছেন, জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির আদেল, ফেনী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহিল মাহমুদ শিবলু, সাজ্জাদুল ইসলাম পাটোয়ারী সিফাত, আবু বক্কর সিদ্দিক, মো. আজমির হোসেন রায়হান, মো. শাহজালাল উদ্দিন শিপন, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ওরফে আজাদ, কাজী শানান মাহমুদ, মীর হোসেন আরিফ ওরফে নাতি আরিফ, আরিফ ওরফে পাঙ্কু আরিফ, রাশেদুল ইসলাম রাজু, মো. সোহান চৌধুরী, জসিম উদ্দিন নয়ন, নিজাম উদ্দিন আবু, আবদুল কাইউম, নুর উদ্দিন মিয়া, তোতা মানিক, মো. সজিব, মামুন, রুবেল, হুমায়ুন, টিপু ও জিয়াউর রহমান বাপ্পি।


দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে জামিনে গিয়ে পলাতক ৭ আসামি হলেন- তারা হচ্ছেন, ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগের তৎকালীন যুগ্ম-সম্পাদক জাহিদ চৌধুরী, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক লায়লা জেসমিন বড় মনির ছেলে আবিদুল ইসলাম, এমরান হোসেন রাসেল, জাহিদুল হাসেম সৈকত, চৌধুরী মোহাম্মদ নাফিজ উদ্দিন অনিক, আরমান হোসেন কাউসার ও জসিম উদ্দিন।
এছাড়া এ মামলায় এখনো ৯ জন আসামিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করতে পারেনি। তারা শুরু থেকেই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। এরা হলেন- ইসমাইল হোসেন ছুট্টু, কফিল উদ্দিন মাহমুদ আবির, রাহাত মোহাম্মদ এরফান আজাদ, শফিকুর রহমান, একরাম হোসেন, মোসলেহ উদ্দিন আসিফ, মহিউদ্দিন আনিছ, টিটু ও বাবলু।
রায় ঘোষণার ৪ বছরেও কার্যকর না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নিহত একরামের ছোট ভাই মোজাম্মেল হক বলেন, ঘটনার ৪ বছরের মাথায় রায় ঘোষণা ও প্রশাসনের কার্যক্রম দেখে আশ্বস্ত হয়েছিলাম। কিন্তুু এখন দেখছি রায় বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চাই দন্ডপ্রাপ্ত সকল আসামীর ফাঁসি দিয়ে মামলাটি দ্রুতি নিষ্পত্তি করা হউক।
ফেনী জেলা জজ আদালতের পিপি হাফেজ আহাম্মদ জানান, একরাম হত্যা মামলার কারাগারে থাকা আসামীরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছে। তা দীর্ঘদিন শুনানীর অপেক্ষায় রয়েছে। তবে পেপারবুক তৈরী না হওয়ায় ও করোনা পরিস্থিতির কারণে এখন পর্যন্ত মামলাটি উচ্চ আদালতের কার্যতালিকায় আসেনি।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, একরাম হত্যা মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক ১৬ আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। নানা চেষ্টা চালিয়েও তাদের অবস্থান নিশ্চিত করা যাচ্ছেনা।

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.