বারইয়ারহাট পৌর নির্বাচনে জমে উঠেছে প্রার্থীতার লড়াই • নতুন ফেনীনতুন ফেনী বারইয়ারহাট পৌর নির্বাচনে জমে উঠেছে প্রার্থীতার লড়াই • নতুন ফেনী
 ফেনী |
২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বারইয়ারহাট পৌর নির্বাচনে জমে উঠেছে প্রার্থীতার লড়াই

এম মাঈন উদ্দিন, নিজস্ব প্রতিনিধিএম মাঈন উদ্দিন, নিজস্ব প্রতিনিধি
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:৪৩ অপরাহ্ণ, ০৪ ডিসেম্বর ২০২০

দুয়ারে কড়া নাড়ছে মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে তৎপর হয়ে উঠেছেন। দলের সিনিয়র নেতাদের মন জয়ের পাশাপাশি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন আগ্রহী প্রার্থীরা।

নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড় ঝাঁপ শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ভোটারদের মাঝে চলছে আলোচনা সমালোচনা। আওয়ামীলীগ থেকে যাদের নাম শোনা তারা হলো: বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন (ভিপি নিজাম), বারইয়ারহাট পৌর আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি মীর আলম মাসকু, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম খোকন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আলী আহছান ও বারইয়ারহাট পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ফজলুল করিম লিটন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাকিয়ে আছে দলীয় সিদ্ধান্তের দিকে। দলীয় প্রার্থী নির্ধারণে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী, মিরসরাইয়ের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সীদ্ধান্ত অনেকটা চূড়ান্ত বলে জানা গেছে। তাই দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির জন্য সকল প্রার্থী তাঁর সুদৃষ্টির প্রত্যাশায় প্রহর গুনছেন।

বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন (ভিপি নিজাম) বলেন, আমি আমাদের প্রিয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির সহায়তায় বারইয়ারহাট পৌরসভায় রের্কড পরিমাণ উন্নয়ন করেছি। বিগত ৫ বছরে প্রায় ৪৩ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। আমাদের প্রিয় নেতার নামে পৌর সদরে ‘মোশাররফ চত্তর’ করা হচ্ছে। আমি মনে করি আমাদের প্রিয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি উন্নয়ন কাজের যথাযথ মূল্যায়ন করবেন।

বারইয়ারহাট পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মীর আলম মাসুক বলেন, আমি ১৯৬৯ সাল থেকে আওয়ামীলীগ নেতা মহিউদ্দিন রাশেদ সহ দলের হয়ে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছি। দলের নেতাকর্মীদের সুখে দুঃখে পাশে রয়েছি। সকল আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিলাম। গতবারও আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম, প্রিয় নেতার নির্দেশে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। এবার মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। দলীয় মনোনয়ন পেলে বারইয়ারহাট পৌরসভাকে মডেল পৌরসভায় পরিণত করবো।

বারইয়ারহাট পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম খোকন বলেন, আমি সব সময় দলীয় কর্মকান্ডে সরব রয়েছি। ২০১৩-২০১৪ সালের বিএনপি-জামায়াতে জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন প্রতিহত করতে রাজপথে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছি। আশা করছি দল যদি ত্যাগীদের চায় সেক্ষেত্রে আমি দলীয় মনোনয়ন পাবো।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর পরিচালক আলী আহছান বলেন, আমি দুইবার চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর সভাপতি ছিলাম। দায়িত্ব থাকাকালীন জনগণের কাছে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। বারইয়ারহাট পৌর আওয়ামীলীগের বিগত কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলাম। কিন্তু আমাদের প্রিয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে সরে গেছি। তাই আগামী পৌর নির্বাচনে আমি দলীয় মনোনয়ন চাইবো।

বারইয়ারহাট পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও কেরানী বাড়ি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা ফজলুল করিম (লিটন) বলেন, মানবসেবায় ব্রত হয়ে কেরানী বাড়ি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করি। করোনাকালীন সময়ে কেরানী বাড়ি পাঠাগারের সার্বিক সহযোগীতায় ২১৭০ জনকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। এতে করে দলের ভাবমূর্তি উজ্জল হয়েছে। আশাকরি দল আমার কর্মকান্ড বিবেচনা করবে।
এদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয় হলেও নীরবে প্রচারণা চালিয়ে নিচ্ছেন বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির বর্তমান আহবায়ক দিদারুল আলম মিয়াজি, সাবেক সভাপতি মাঈন উদ্দিন লিটন। দলের জন্য ত্যাগী, নির্যাতিত এমন নেতাকে মনোয়ন দেয়ার দাবী জানিয়েছেন পৌরসভা বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির আহবায়ক ও চট্টগ্রাম জেলা বিএনপি আহবায়ক কমিটির সদস্য দিদারুল আলম মিয়াজি বলেন, আমি সব সময় রাজপথে থেকে দলের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছি। দলের নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহস ও সহযোগীতা করেছি। নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে ইতিমধ্যে দলীয় হাইকমান্ডের সাথে যোগাযোগ করেছি। দলের তৃণমূলের নেতাকর্মী ও পৌর এলাকার জনসাধারণের সুখে দুঃখে অংশীদার হওয়ার চেষ্ঠা করছি। দল যদি ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দেয় নির্বাচনে অংশ নেবো। এক্ষেত্রে দলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে তিনি মনে করেন।

বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মাঈন উদ্দিন লিটন জানান, সম্প্রতিক সময়ে তিনি দলের সকল কর্মসূচি পালন করছেন। দলীয় নেতাকমীদের সুখে দুঃখে পাশে দাঁড়িয়েছেন। আগামী নির্বাচনে দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অংশ নেবো।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন পৌরসভার দুইবারের সাবেক কাউন্সিলর জামায়াত নেতা নুরুল হুদা হামিদী।

প্রসঙ্গত : চট্টগ্রাম জেলার শুরু বারইয়ারহাট পৌরসভা দিয়ে। ২০০০ সালের ২৭ এপ্রিল পৌরসভাটির যাত্রা শুরু হয়। ২.১২ কিলোমিটার আয়তনে অবস্থিত পৌরসভাটি ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা ১১ হাজার ৬০২ জন। সর্বশেষ হালনাগাদ সহ বর্তমানে মোট ভোটার সংখ্যা ৮ হাজার ৭১০ জন।
সম্পাদনা:আরএইচ/এমএমইউ

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.