পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীর গায়ে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদরাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও অনির্দিষ্টকলে জন্য হোস্টেল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
সোনাগাজী মাদরাসাসহ গোটা উপজেলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম অতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনার দিন শনিবার বিকাল থেকে মাদরাসা হোস্টেল থেকে শিক্ষার্থীরা চলে গেছে। মাদরাসা ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শনিবার পরীক্ষা কেন্দ্রে ওই মাদরাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির (১৮) গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় জরুরী সভায় বসে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। কমিটির সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পিকেএম এনামুল করিম, সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রুহুল আমিনসহ অপরাপর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদরাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও অনির্দিষ্ট কালের জন্য মাদরাসা হোস্টেল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে ওই কেন্দ্রে চলমান আলিম পরীক্ষা যথা নিয়মের চলবে।
মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রুহুল আমিন জানান, কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদরাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও অনির্দিষ্টকলে জন্য হোস্টেল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
ম্যানেজিং কমিটি এ ধরণের সিদ্ধান্ত খবর জানা নেই নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল পারভেজ বলেন, এ বিষয়ে আজকে আবারো বসা হবে। মাদরাসা বন্ধ হলেও বোর্ড নির্ধারিত পরীক্ষা যথা নিয়মে চলবে।
এদিকে রবিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবুল ফজল। এর আগে পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। পুরো তদন্ত শেষ হওয়ার পরই প্রকৃত কারণ জানা যাবে। ঘটনাস্থল থেকে পলিথিন জাতীয় কিছু পাওয়া গেছে। ধারণা হচ্ছে, ওই পলিথিনের ভেতরেই কেরোসিন ছিল।’
অন্যদিকে আহত মাদরাসা ছাত্রীর বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, নুসরাত জাহান রাফির অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবি নিশাতকে ছাদের উপর কেই মারধর করেছে এমন সংবাদ দিলে সে ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যায়। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
এর আগে ২৭ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
সম্পাদনা: আরএইচ/এনজেটি







