সোনাগাজীতে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের পর আগুনে পুড়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার উম্মে সুলতানা পপিই হলো আলোচিত সেই ‘শম্পা’। সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন ফেনী পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো।
এর আগে গত ৯ এপ্রিল শম্পা সন্দেহে সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে উম্মে সুলতানা পপিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই সময় সোনাগাজী-দাগনভূঞা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, শম্পা সন্দেহে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে ওই মাদরাসার ছাত্রী রাফির শ্লীলতাহানির ঘটনায় আটক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলার শ্যালিকার মেয়ে। সে একই মাদরাসা থেকে এবার আলিম পরীক্ষার্থী। ১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক সরাফ উদ্দিন আহম্মেদ তার ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুন করেন।
ঘটনার দিন অগ্নিদগ্ধের সময় নুসরাত জাহান রাফি কেউ একজন ‘শম্পা চল’ বলেছেন এমন শব্দ রাফি শুনেছেন বলে চিকিৎসকদের কাছে তথ্য দিয়েছেন। সেই সূত্রে পুলিশ তাকে আটক করে। উম্মে সুলতানা পপি কি শম্পা এ নিয়ে ধোঁয়াশা ছিলো।
আলোচিত এ মামলা এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধে ওই অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠি আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, যোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন ও মো. শামীম। এদের মধ্যে মামলার এজহারভুক্ত আট জনের মধ্যে ৭ আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। হাফেজ আবদুল কাদের নামে এজহারভুক্ত আরো বকে আসামীকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে রবিবার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্ধি দিয়েছে মামলার অন্যতম আসামী নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামিম। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছে।
এর আগে টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জালড়ে ১০ এপ্রিল বুধবার রাত নয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি। পরদিন সকালে ময়তদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে বিকালে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
সম্পাদনা: আরএইচ/এনজেটি