ফেনীর আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আজো চার জনের সাক্ষগ্রহণ ও জেরা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার বাংলা বিভাগের প্রভাষক খুজিস্তা খানম, আয়া বেবি রানি দাস, আলীম পরিক্ষার্থী আকলিমা আক্তার ও কায়সার মাহমুদের সাক্ষগ্রহণ করা হয়।
আদালত সূত্রের বরাত দিয়ে জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ বলেন, মঙ্গলবার আদালত মামলাটির ২২ নম্বর থেকে ২৫ নম্বর পর্যন্ত সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহন করেন। বৃহস্পতিবার মামলার আরো তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। এরা হলেন আলীম পরিক্ষার্থী ফাহমিদা আক্তার হামদুনা, নাসরিন সুলতানা ও শিক্ষক মোহাম্মদ কবির আহাম্মদ। এরা মামলাটির ২৬ থেকে ২৮ নম্বর সাক্ষী বলে জানান তিনি।
মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবি গিয়াস উদ্দিন নান্নু, কামরুল হাসান, ফরিদ উদ্দিন নয়ন ও আহসান কবির বেঙ্গল সাক্ষীদের জেরা করেন। রাষ্ট্র ও বাদি পক্ষে ছিলেন পিপি হাফেজ আহাম্মদ, এপিপি এ কে এস ফরিদ আহাম্মদ হাজারী ও এম শাহজাহান সাজু। বুধবার শুনানীকালে মামলার ১৬ আসামী আদালতে হাজির ছিলেন।
নুসরাত হত্যা মামলায় সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা/শম্পা (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামলীগের সভাপতি ও মাদরাসার সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম’র (২০) সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করে চার্জশিট প্রদান করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এ মামলায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।
এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
সম্পাদনা: আরএইচ/এনজেটি