দাগনভূঞায় ইমামকে বসতভিটে থেকে উচ্ছ্বেদের পাঁয়তারা • নতুন ফেনীনতুন ফেনী দাগনভূঞায় ইমামকে বসতভিটে থেকে উচ্ছ্বেদের পাঁয়তারা • নতুন ফেনী
 ফেনী |
১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দাগনভূঞায় ইমামকে বসতভিটে থেকে উচ্ছ্বেদের পাঁয়তারা

নিজস্ব প্রতিনিধিনিজস্ব প্রতিনিধি
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৪:৪২ অপরাহ্ণ, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের পশ্চিম চন্ডিপুরে স্থানীয় মসজিদের ইমাম সিরাজ উল্লাহকে বসতঘর থেকে উচ্ছ্বেদের পাঁয়তারা করে আসছে একটি চক্র। স্থানীয়দের বাধার মুখে ওই চক্রটি ব্যর্থ হয়ে মিথ্যা মামলায় ইমাম সিরাজ উল্লাহ ও তার স্বজনদের হয়রানি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, পশ্চিম চন্ডিপুর গ্রামের বকসি ব্যাপারী বাড়ির মৃত লকিয়ত উল্লাহর স্ত্রী বিবি ছকিনা ও তার মেয়ে ছায়েরা বিগত ২০ বছর পূর্বে ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া সকল সম্পত্তি বিক্রি করে পাশ্ববর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহীতে স্থায়ী আবাস গড়ে তোলেন। অসামাজিক কাজের অভিযোগে সেখান থেকে ছায়েরা ও তার পরিবারকে উচ্ছেদ করে স্থানীয়রা। পরে তারা স্টীলের ব্রীজ নামক স্থানে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানেও তাদের অনৈতিক কাজে বাধা দেয়ায় ওই বাড়ির মালিককে কুপিয়ে আহত করে। এক পর্যায়ে ওই বাড়ি থেকেও স্থানীয়রা তাদের বের করে দেয়। পরে ছকিনা বেগম তার চন্ডিপুরের পৈত্তিক  বাড়িতে এসে শিমুলের পরিত্যাক্ত ঘরে আশ্রয় নেয়। পৈত্রিক বাড়িতে থেকে ছায়েরার পরিবার স্থানীয় একটি মহলের ইন্ধনে জায়গা পাবে দাবী করে ইমাম সিরাজের বসত ঘরের পাশে একটি ঘর নির্মাণের চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে স্থানীয়দের বাধার মুখে তারা পিছু হটে। এঘটনায় ২০২০ সালের মার্চে দাগনভূঞা থানায় একটি অভিযোগ করেন সিরাজ উল্লাহর স্ত্রী নারগিস আক্তার। অবস্থা বেগতিক দেখে ছায়েরা ও তার পরিবার শিমূলের ঘর ছেড়ে ফেনী রেল স্টেশন এলাকায় একটি বাড়িতে ওঠেন। পরে কয়েক দফায় ফেনী থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে সিরাজের বাড়ি দখল করে সেখানে ঘর দেয়ার চেষ্টা চালায়। জবর দখলে বাধা দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ছায়েরা খাতুনের স্বামী আবুল কাশেম বাদী হয়ে সিরাজ উল্লাহসহ এলাকার মান্যগন্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও বিভিন্ন কুৎসা রটানো শুরু করে। কুচক্রী মহলের লোকজন ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক ও ফেনীর পুলিশ সুপারকে ভুল বুঝানো হয় যে, ছায়েরা খাতুন ও তার পরিবারকে স্থানীয়রা প্রভাব খাটিয়ে অন্যায়ভাবে বসতভিটে থেকে বের করে দিয়েছে। এ কারণে তারা ফেনী শহরের রাস্তার পাশে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসে।
স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ইদ্রিস ভূঞা সুরুজ জানান, একটি মহলের ইন্ধনে সমাজের সহজ সরল ইমামকে বসত ভিটে থেকে উচ্ছ্বেদের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা জবর দখলে বাধা দেয়ায় তাদেরকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে। এনিয়ে সমাজের নেতৃস্থানীয় লোকদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চলছে।
এয়াকুব পুর ইউপির সদস্য নিজাম উদ্দিন ফারুক জানান, ইমাম সাহেবের বাড়ি দখলের চেষ্টার পর আমরা উভয় পক্ষ নিয়ে বৈঠকে বসি। কাগজপত্র পর্যালোচনার পর দেখা যায় যে, ওই বাড়িতে ছায়েরা খাতুনদের নামে কোন সম্পত্তি অবশিষ্ট নেই। তারা তাদের যাবতীয় পাওনা সম্পত্তি প্রায় দুই যুগ আগে বিক্রি করে অন্যত্র চলে গেছেন। তাই ছায়েরাগংদের দাবী অগ্রাহ্য করা হয়।
ভূক্তভোগী ইমাম সিরাজ উল্লাহ জানান, ৪ হাজার টাকা বেতনে মসজিদের চাকুরী করেন। দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে কোন রকম অভাবের সংসারে দিনাতিপাত করেন। কিন্তুু কয়েক বছর যাবত তার বসতবাড়ির মালিকানা দাবী করে ছায়েরা খাতুন দখল করতে চাচ্ছে। তাকে মামলায় আসামী করা হয়েছে। তাকে হয়রানী করা হচ্ছে। তিনি সমাজ ও প্রশাসনের কাছে এসব জামেলা থেকে পরিত্রাণ চান।
দাগনভূঞা থানার ওসি মো. হাসান ইমাম নতুন ফেনীকে জানান, প্রাথমিক তদন্তে সিরাজ উল্লাহর বাড়িতে ছায়েরা খাতুনদের কোন জায়গা নেই মর্মে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রকৃত ঘটনা জানার পর থেকে সিরাজ উল্লাহকে কোন হয়রানী করা হচ্ছেনা। উভয় পক্ষের দায়ের করা দুটি মামলাই তদন্তনাধিন রয়েছে।

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.