‘ফেনিউরিজম’ – নতুন ফেনী ‘ফেনিউরিজম’ – নতুন ফেনী
 ফেনী |
১৫ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘ফেনিউরিজম’

রাশেদুল হাসানরাশেদুল হাসান
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৫:৪০ অপরাহ্ণ, ০৪ মার্চ ২০১৭

রাশেদুল হাসান |
অভ্যন্তরীণ পর্যটনের একটি অনন্য উদ্ভাবনের নাম ‘ফেনিউরিজম’। ফেনী এবং ট্যুরিজমকে একত্রিত করে ‘ফেনিউরিজম’ নামকরণ করা হয়। এটির উদ্দেশ্য হলো জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরা। শুধু তাই নয় এ অঞ্চলের ঐতিহাসিক স্থান ও পুরাকৃর্তি, স্থাপনা, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাস ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলে নতুন প্রজন্মের কাছে উপস্থাপন করবে ‘ফেনিউরিজম’।
ফেনিউরিজমকে বুঝতে হলে প্রথমে ট্যুরিজম বা পর্যটন সম্পর্কে একটু ধারণা নিই। উইকিপিডিয়ার মতে ট্যুরিজম বা পর্যটন এক ধরণের বিনোদন। অবসর অথবা ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থান কিংবা এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণ করাকে বুঝায়। ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পর্যটন শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়াও বিশ্বব্যাপী অবসরকালীন কর্মকান্ডের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ট্যুরিজম।
ট্যুরিজমের ধারণাটি অনেক পুরনো। রোমান প্রজাতন্ত্রে ধনীক শ্রেনীর লোকজন সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় গিয়ে অবকাশ যাপন করতেন। সেখানে তাঁরা উল্লেখযোগ্য ভবন, শিল্পকর্ম, নিত্য-নতুন ভাষা শিক্ষা লাভ, নতুন সংস্কৃতির সাথে পরিচয়সহ হরেক রকমের রন্ধনপ্রণালীর স্বাদ আস্বাদনের চেষ্টা করতেন। তবে ট্যুরিস্ট বা পর্যটক শব্দটির প্রথম প্রয়োগ হয় ১৭৭২ সালে অন্যদিকে ১৮১১ সালের দিকে ট্যুরিজম বা পর্যটন শব্দের ব্যবহার শুরু হয়।




পর্যটন শিল্প বাংলাদেশেও ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোক্তাদের মাধমে এ শিল্প ক্রমান্বয়ে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে পরিচিত অপরিচিত অনেক পর্যটক-আকর্ষক স্থান আছে। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে যুগে-যুগে ভ্রমণকারীরা মুগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে প্রত্মতাত্বিক নির্দশন, ঐতিহাসিক মসজিদ এবং মিনার, পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত, পাহাড়, অরণ্য ইত্যাদি অন্যতম। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি এলাকা বিভিন্ন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে বিশেষায়িত।
‘ফেনিউরিজম’ একটি অভ্যন্তরিণ পর্যটন ধারণা। এটি গতানুগতিক পর্যটন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ব্যতিক্রমী এ ধারণাটি উদ্ভাবন করেন ফেনী জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান। তিনি জানান, বইয়ের পাতায় ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্বন্ধে জানতে শিক্ষার্থীরা আগ্রহী হয় না। ফেনিউরিজমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিজ মাটি, মানুষ, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সরেজমিনে দর্শনের মধ্যদিয়ে নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতি সাপ্তাহে ৩০ জনের একটি টিম ঘুরে বেড়াবে জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে। তাঁরা এসব স্থাপনার ইতিহাস, কৃষ্টি-কালচার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে। ‘ফেনিউরিজম’ শুধু মাত্র শিক্ষার্থীদের নিয়ে ট্যুর আয়োজন করবে এমনটি নয়। এটির মাধ্যমে বেসরকারী ভাবে ট্যুর আয়োজকদের আরো উদ্যোগী করা, আপাত সাধারণ স্থানকে ইতিহাসের সংমিশ্রনে অসাধরণ করে গড়ে তোলা, পর্যটনের মাধ্যমে ইতিহাস-ঐতিহ্যকে শেখা ও সম্ভাবনাময় নতুন নতুন পর্যটন স্পটের উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও ‘ফেনিউরিজম’ জেলার অভ্যন্তরীন পর্যটন স্পটগুলো আকর্ষনীয় করে গড়ে তুলতে ডকুমেন্টারী নির্মাণ, বুলেটিন ও বই প্রকাশ, নাটিকা, লোকসংগীত, ফ্রেসকো ও বিলবোর্ড স্থাপন করবে। ধারণাটির সঠিক বাস্তবায়ন সম্ভব হলে ফেনীর ইতিহাস-ঐতিহ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক প্রসার লাভ করবে।
‘ফেনিউরিজম’ ধারণাটি ব্যাপক প্রশংসা পেলেও এর নাম নিয়ে সংশয় কাটছে না জেলা প্রশাসনের। জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রকাশিত লিপলেট, ব্যানার, ফেস্টুনসহ বিভিন্ন উপকরণে ‘ফেনিউরিজম’ লেখা থাকলেও একই প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইটে লিখা রয়েছে ‘ফেনীউরিজম’। এ দোলাচালের কারণে প্রকৃত বানান নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি বানান ব্যবহার করা উচিত।




সবশেষে জেলা প্রশাসনের এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে আরো সমৃদ্ধ ও গতিশীল করতে কয়েকটি প্রস্তাবনা দিয়ে শেষ করবো। প্রথমত, ফেনীর সকল পর্যটন স্পর্ট, ঐতিহাসিক স্থাপনা, পুরাকৃর্তি, গৌরব গাঁথা ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ, কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরতে একটি অভিজ্ঞ রিচার্স টিম থাকবে। যাঁরা জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এসব পর্যটন স্পটগুলোর তথ্য অনুসন্ধান ও লোকজ জ্ঞানের মাধ্যমে স্বচিত্র প্রতিবেদন তৈরী করবে। সঠিত তথ্য উদঘটন করতে না পারলে এ আয়োজন কোন কাজে আসবে না। দ্বিতীয়ত, ‘ফেনিউরিজম’ নামে একটি স্বতন্ত্র ওয়েব সাইট নির্মাণ করা যেতে পারে। যারে রিচার্স টিম প্রস্তুতকৃত প্রত্যেক পর্যটন স্পটের স্বচিত্র প্রতিবেদন থাকবে। এটির মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে এ জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে। তৃতীয়ত, ফেনীর সকল ইতিহাস-ঐতিহ্যকে নিয়ে ‘ফেনিউরিজম’ নামের একটি সংকলন প্রকাশ করা যেতে পারে। যেটির মাধ্যমে মানুষ ফেনী সম্পর্কে, ফেনীর ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে।
লেখক: সম্পাদক, নতুন ফেনী ডট কম।

আপনার মতামত দিন

casibomcasibom girişcasibomcasibom girişcasibom güncel girişjojobet güncel girişcasibom girişcasibom güncel girişcasibomcasibom girişcasibom güncel girişjojobetjojobet girişcasibomcasibom girişcasibom güncel girişjojobetjojobet girişjojobet güncel girişkavbetkavbet girişkavbetkavbet girişkavbetkavbet girişcasibom güncel girişmarsbahismarsbahis girişmarsbahis güncel girişholiganbetholiganbet girişholiganbet güncel girişcasibomcasibom girişcasibomcasibom girişcasibomcasibom girişcasibomcasibom girişcasibomcasibomcasibom girişcasibom güncel girişcasibomhttps://casibom-oyunlar.net/casibomcasibom girişcasibom girişcasibom bonuscasibomcasibomcasibom girişcasibom güncel girişcasibomcasibomcasibom girişcasibomcasibomcasibomcasibom girişcasibomcasibom girişcasibomcasibom giriş
Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.