ফেনীতে ক্রিকেট প্রশিক্ষকেরই নেই কোন প্রশিক্ষণ! • নতুন ফেনীনতুন ফেনী ফেনীতে ক্রিকেট প্রশিক্ষকেরই নেই কোন প্রশিক্ষণ! • নতুন ফেনী
 ফেনী |
২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফেনীতে ক্রিকেট প্রশিক্ষকেরই নেই কোন প্রশিক্ষণ!

রাশেদুল হাসানরাশেদুল হাসান
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০২:৩৬ অপরাহ্ণ, ২৩ নভেম্বর ২০১৭

নিজস্ব প্রতিনিধি>>
ফেনী জেলা অনুর্ধ্ব-১৮ দলের প্রশিক্ষকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো: আসলামের নেই কোন প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ সনদ। সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে বিষয়টি উঠে আসলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয় ক্রীড়াঙ্গণসহ নানা অঙ্গণে। স্থানীয়দের অভিযোগ বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটে ফেনীর অবস্থান ভালো থাকলেও অনভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের কারণে গত দু’ বছর অনুর্ধ্ব ১৮ দলের ১ম রাউন্ড থেকে বিদায় নিতে হয়েছে।

ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ফেনীতে বিসিবি নিযুক্ত জেলা ক্রিকেট কোচ রিয়াজ উদ্দিন রবিন ছাড়াও সার্টিফায়েড প্রশিক্ষক রয়েছে ৮ জন। এর মধ্যে আবুল কালাম ও তৈমুর ব্যক্তিগত কারণে এবং সুরজিত পাল কপিল ক্রিকেট আম্পায়ারিংয়ের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় ক্রিকেট কোচিংয়ে নিয়মিত নন। এছাড়া সাইফুল ইসলাম সাগর চলতি বছর প্রবাসে পাড়ি জমায়। অন্যদের মধ্যে আলী আশ্রাফ ইমন, কামরুল হাসান রানা, কপিল মাহমুদ ও সোহাগ জেলার বিভিন্ন ক্রিকেট একাডেমি, ক্লাবে নিয়মিত ক্রিকেট প্রশিক্ষণের সাথে সম্পৃক্ত রয়ছে। অথচ অনুর্ধ্ব-১৮ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ দলে ২০১৫ সালে টুর্নামেন্টের দুইদিন আগে হঠাৎ কোচ হিসেবে সম্পৃক্ত হয় জেলা দলের সাবেক খেলোয়াড় আসলাম। সেইবার প্রথম থেকেই দলটির প্রশিক্ষন সহ সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন জেলা ক্রিকেট কোচ রিয়াজ উদ্দিন রবিন। যার ফলে সেবার বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন হলেও পরের দুই বছর ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ১ম রাউন্ডের বাধা পেরোতেই পারেনি জেলা দলের উত্তরসূরীরা।

ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অধীনে ক্রিকেট কোচ ও আম্পায়ারদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহনের মাধ্যমে বিভিন্ন লেভেল সম্পন্ন করতে। এরপরই বিসিবি সেই প্রশিক্ষককে সার্টিফায়েড ও তালিকাভুক্ত করেন। অথচ জাতীয় প্রতিযোগিতার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অংশগ্রহণকারী দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশিক্ষকের নেই সামান্যতম কোন প্রশিক্ষণ। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে এতো বড় ভূল কিভাবে করে আসছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও ক্রিকেট উপ-কমিটি। জেলায় যদি পর্যাপ্ত ক্রিকেট প্রশিক্ষকের অভাব থেকে থাকে তাহলে হয়তো কোন খোড়া যুক্তি দাঁড় করানো যেতো। কিন্তু যেখানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং তালিকাভুক্ত একাধিক কোচ রয়েছে সেখানে কোচিং জ্ঞানহীন এমন একজনকে বারবার কোচ হিসেবে পাঠানো অপেশাদার সিদ্ধান্তই বটে।

এ প্রসঙ্গে মো: আসলাম বিসিবির প্রশিক্ষণ না থাকার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন। তার দাবী, ফুটবল খেলার কারণে মাঠে নিয়মিত ক্রিকেট প্র্যাকটিস করতে পারেনি। তবুও খেলোয়াড়রা যথেষ্ট চেষ্টা করেছে।

ক্রিকেট এসোসিয়েশনের সভাপতি ইমন উল হক বলেন, দেশের জাতীয় মানের স্টেডিয়ামগুলোর চেয়ে ফেনী স্টেডিয়াম অনেক ছোট। নিয়মিত প্র্যাকটিস না হওয়ায় খেলোয়াড়রা নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে না। এছাড়া কোচের প্রশিক্ষনহীনতাকে দায়ী করেন এ ক্রিকেট সংগঠক।

জেলা ক্রিকেট কোচ রিয়াজ উদ্দিন রবিন বলেন, প্রশিক্ষক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষনের চেয়ে অভিজ্ঞতাকে বিবেচনা করে অনুর্ধ্ব-১৮ দলে আসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নিয়মিত প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলতে না পারা, ট্রার্প উইকেট না থাকায় ফেনীর খেলোয়াড়রা সিমেন্টের পীচে প্র্যাকটিস করতে হয়েছে। এছাড়া অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের পারফর্ম ব্যর্থতাও ছিল।

জানতে চাইলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন বাহার জানান, এভাবে খেলা চলতে পারে না। আরো ভালো পারফর্ম করতে দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেট লীগের পর ক্রিকেটারদের বাছাই পরবর্তী প্রশিক্ষন দেয়া হবে। প্রশিক্ষকের ক্ষেত্রে ক্রীড়া সংস্থা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
সম্পাদনা: আরএইচ

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.