সাকিবই কেনো বিশ্বসেরা • নতুন ফেনীনতুন ফেনী সাকিবই কেনো বিশ্বসেরা • নতুন ফেনী
 ফেনী |
২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সাকিবই কেনো বিশ্বসেরা

শরীফুল ইসলাম অপুশরীফুল ইসলাম অপু
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৫:৩৭ অপরাহ্ণ, ১৮ জুন ২০১৯

বিশ্বকাপের আগেই দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছিলেন, সাকিবকে এবার বেশ ব্যতিক্রম দেখাচ্ছে, মাঠে এবং মাঠের বাহিরের সব কিছুতেই তার সম্পৃক্ততা বেশ স্বতঃস্ফূর্ত ।

দলের ম্যানেজার যে আভাস দিতে চেয়েছিলেন তা ছিলো, বিশ্বকাপের এই বড় মঞ্চে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চায় আমাদের সাকিব। সাকিবকে আমাদের বলার মধ্যেই যেনো আলাদা একটা টান অনুভব করা যায় ।

এই সাকিব কিন্তু বরাবরই রোমাঞ্চকর, আপনি জানেন সাকিবই সেরা । তবে তার সেরার লেভেল নিয়ে আপনি সারাক্ষণই থাকবেন রোমাঞ্চে । মানে চিরচেনা সাকিবকে চেনাই দায় । বিশ্বসেরার তকমাটা নিজের গায়ে লাগিয়েছেন আরও অনেক আগেই,তবে এই সেরার লেভেলেও যেনো সুখ মিলছিলো না এই অলরাউন্ডার এর । তাই এই বিশ্বকাপের আগে থেকেই নিজেকে তৈরী করেছেন আলাদা গুরুত্ব দিয়ে, যেনো বিশ্বকাপে নিজের অভিষেক । এই তাড়না যার মধ্যে বিদ্যমান, সেইতো হবে বিশ্বসেরা । অর্থাৎ ক্যারিয়ার এর ১ যুগ পেরিয়েও যে প্রস্তুতি নেয় ক্যারিয়ার এর শুরুর সময়ের মতো,নিজেকে প্রমাণের অনেকটা সম্পন্ন হবার পরও কেউ যখন নিজেকে নিজের কাছে প্রমাণের প্রতিযোগিতায় নামে । সে না হয়ে, তবে কে আর হবে বিশ্বসেরা !

বিশ্বকাপ দলের আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনে ছিলেন না, এই বিতর্ক মাথায় নিয়েই লন্ডন পা রেখেছিলেন ভিন্ন চিন্তার এই টাইগার । বিসিবি,মিডিয়া আর অতিউৎসাহি সমর্থকদের মাথায় যখন টিম ফটোসেশনে সাকিব কেনো নেই, এই নিয়ে ব্যাথা । দুরন্ত সাকিবের মাথায় তখন বিশ্বকাপ মঞ্চটি নিজের করে নেয়ার নীরব পরিকল্পনা । মাথায় যাই সেট করে রাখেন, সাকিব তাই করে দেখান ।সবসময়ই এটির প্রমান দেখা মিলেছে । আইপিএল চলা কালীন সময় থেকেই সাকিবের প্রস্তুতির প্রকার দেখেই আন্দাজ করা যাচ্ছিলো দেশের জন্য উজাড় করে দিতেই তৈরী হচ্ছেন নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার। তাই বিশ্বকাপে নিজেদের ৪ ম্যাচ পরে নিজের চার ইনিংসে ৩৮৪ রান করে সাকিবের নামের পাশে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক দেখে অবাক হবার কিছুই নেই, বরং শ্রীলঙ্কার সাথে বৃষ্টিতে ম্যাচটি ভেস্তে না গেলে অন্যদের সাথে ব্যবধানটা যে আরও প্রসারিত হতো সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখেনা । বল হাতেও বেশ উজ্জ্বল এই বাঁহাতি স্পিনার । সময়মতো ব্রেকথ্রু দেয়ার পাশাপাশি, ব্যাটসম্যানদের জয়ধ্বনির এই বিশ্বকাপে ইকোনমি ধরে রেখেছেন সমানে সমান । ৩৯ ওভার বল করে ২২২ রান দিয়ে উইকেটও নিয়েছেন ৫টি । বিশ্বকাপে টানা চারটি ইনিংসেই পঞ্চাশের বেশী রান করে জাত চিনিয়ে দিচ্ছেন, এরমধ্যে দুটোই টানা শতক । আশাকরি পাঠক বুঝেই নিচ্ছেন কোন গতিপথ ধরে এগোচ্ছে “আমাদের সাকিব” ।

কাল ক্যারিবিয়ানদের সাথে সাকিবের অপরাজিত ১২৪ রানের ইনিংসটি হয়তো আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৯ এর বড় বিজ্ঞাপন হয়ে থাকবে । একটি ফেভারিট দলের সাথে ৩২২ রান চেজ করতে গিয়ে এতটা দলীয় সাবলীল ব্যাটিং এর আগে কখনও দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব,এতে লিটনেরও অবদান কম নয় । তবে পালে মূল হাওয়া দিয়েছে সাকিবই । ২০০৭ এ প্রথম বিশ্বকাপ খেলা সেই আনকোরা সাকিব নিজের ৪র্থ বিশ্বকাপে এসে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক বিষয়ই মনে হবে আমার কাছে । কেনোনা গত ১২ বছরে যে এই সাকিবই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে ধারাবাহিক অলরাউন্ড পারফর্মার । বিশ্বসেরার স্বাধটি ইতিমধ্যে সে পেয়েছে কয়েকবার, তাই এবার সেটির চূড়ান্ত স্বীকৃতির অপেক্ষা । হতে হতেও যদি নাও হবে, তবুওতো আমাদের ছেলে বিশ্বকাপের সেরা দাবিদার হয়েছে, দেশকে নিয়ে গিয়েছে চূড়ান্ত সাফল্যে ।এটিওতো মনের মানসপটে বাঁধাই করে রাখার মতোই কিছু ।
লেখক: ক্রীড়া লেখক ও সংগঠক

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.