নিজস্ব প্রতিনিধি>>
ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া বাজারে সরকারী জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। খোদ সরকারী কর্মকর্তারা জড়িত থাকায় একাধিকবার উর্ধ্বতনকে জানানোর পরও এ বিষয়ে কোন সুরাহা হয়নি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানায়, লেমুয়া বাজারের সরকারি খাস জায়গা ৯০৯ দাগে ৬০শতাংশ, ৮৯৫ দাগের ২৪শতাংশ, ৩০৪ দাগে ৭৪ শতাংশ জায়গা ইতিমধ্যে জবরদখল করেছে ভূমিদস্যুরা। এসব জায়গায় বন্দোবস্ত ছাড়াই ভূমি কর্মসর্তাদের ম্যানেজ করে দোকানপাট ও মার্কেট নির্মাণ করছে একটি চক্র। ওই চক্রের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে অনেকেই দফায় দফায় লাঞ্চিত হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আসলে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করতে ওই বাজারে অভিযান চালানো হয়। সরকারী জায়গা চিহ্নিত হওয়ার পর ৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা ইজারা আদায় করে রাজস্ব বিভাগ।
জানা গেছে, কিছুদিন যেতে না যেতেই ভূমি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ভূমিদস্যুরা ফের বাজার দখল করে নেয়। গরু বাজারের ৭৮শতাংশ এর মধ্যে ৭২শতাংশই দখলকারীদের কবলে। একইভাবে ধান হাটা ও মুহুরী বাজার দখল করে ফার্নিচার দোকান ও মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। ওই মার্কেটে প্রত্যেক দোকান থেকে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা হারে সেলামী নেয়া হয়েছে। এছাড়া সুপারী ও তরকারি বাজার, মেইন রোড, কসাইখানা সংলগ্ন জায়গা দখল করে মার্কেট ও দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে দোকানপ্রতি ১০-১৫ লাখ টাকা হারে সেলামী নিয়ে দোকান বরাদ্ধ দেয়। বর্তমানে বাজারের রাস্তা ছাড়া সরকারী কোন জায়গা দখলমুক্ত নেই।
ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় ৮৪ জনকে অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করে নোটিশ প্রদান করা হয়। ভূমিদস্যুদের কাছে দলিল, খাজনা দাখিলা, এমআরওআর দলিল না থাকায় তৎকালীন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা লায়েক উদ্দিন চৌধুরী বাদী হয়ে ফেনী সদর উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে মামলা দায়ের করেন। গত ৭ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার সাহাবউদ্দিনের এজলাসে ১৪টি মামলার শুনানী শুরু হয়। শুনানীকালে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রৌশন আরা বেগম এ প্রসঙ্গে সময় চেয়ে আবেদন করেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সেটেলমেন্ট অফিসে অসাধু কর্মকর্তারা জনৈক মুহুরী মিন্টু ও কিরন সহ একটি চক্র ভূমিদস্যুদের সাথে আঁতাত করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভূয়া খতিয়ান তৈরীর চেষ্টা করছে।
সাবেক ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা লায়েক উদ্দিন চৌধুরী জানান, তিনি ৮৪ টি মামলা দায়ের করলেও বর্তমানে ৭৪টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বাকী ১০ মামলার কোন হদিস নেই।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে ফেনী সদর উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের সহকারি কর্মকর্তা শাহাবউদ্দিনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
সম্পাদনা:আরএইচ/এনকে
লেমুয়া বাজারে সরকারি জায়গা দখলের অভিযোগ







