মোঃ ইয়াছিন রনি>>
পবিত্র মাহে রমজানের রোজা যতই ঘনিয়ে আসছে দাগনভূঞা উপজেলা সদরের বিপনী বিতান ছাড়াও মফস্বল হাট বাজারের দোকানগুলিতে ক্রেতা সাধারনের সমাগম বাড়তে শুরু করেছে। অধিকাংশ বিপনী বিতানগুলিতে মহিলা খরিদ্দার সমাগম বেশী পরিলক্ষিত হচ্ছে।
সীমিত আয়ের মাঝে দ্রব্য মূল্যের আকাশচুম্বিতায় ঈদের কেনাকাটার স্বপ্ন অধরা থাকছে অনেকের কাছে। দাগনভূঞা উপজেলা সদরে আতাতুর্ক স্কুল মার্কেট, ইসহাক খায়ের রহমান শপিং কমপ্লেক্স, তৈয়বা মার্কেট, আয়েশা মার্কেট, সুলতান মার্কেট ও আজিজিয়া মাদ্রাসা মার্কেটসহ মফস্বলের দুধমুখা বাজার, দরবেশের হাট, রাজাপুর, কোরাইশমুন্সি, বৈরাগীরহাট, সিলোনিয়া, তুলাতলী, গজারিয়া ও বেকের বাজারের মিনি মার্কেটগুলিতে কাপড়, জুতা, ও কসমেটিক্স দোকানে ক্রেতা সাধারনের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফুটপাতের মৌসুমী ও ভ্রাম্যমান দোকানেও নি¤œবিত্তদের আনাগোনা আছে। মার্কেট ঘুরে মনে হল দেশীয় পন্যের চাইতে বিদেশী পন্যের প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষন মাত্রাতিরিক্ত। দোকানদারেরা বিদেশী পন্য পশরা সাজিয়ে বসে আছে। দাম হাঁকা হচ্ছে বেশী। অনেক মার্কেটে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য রকমারী পুরস্কারের কুপন ছাড়ছে। আতাতুর্ক স্কুল মার্কেটের জনৈক কাপড় ব্যবসায়ী জানালেন দেশীয় কাপড়ের চাইতে ভারতীয় কাপড়ের চাহিদা বেশী বিধায় আগাম ভারতীয় কাপড় মওজুত করে রেখেছে। হলিউড বলিউড ও হিট ছবির নামকরা নায়ক নায়িকার নামে পন্যে স্টিকার লাগিয়ে পোষাক সামগ্রী অভিজাত দোকানে সোপিসে এবং টাংগিয়ে রাখা হয়েছে। এবার ঈদে ভারতীয় বাহুবলী, আইপিএল, বাজরাঙ্গী বাইজান, দিলওয়াল, মাস্তানী ও অরনারী ব্যবসায়ীদের কাছে মওজুত রয়েছে বেশী। বিক্রির কৌশলে দেশীয় এবং বার্মিজ পন্যও ডিসপ্লেতে আছে। ভারতীয় দামী লেহেংগাও দোকানে মওজুত আছে বলে এক ব্যবসায়ী জানালেন। বিভিন্ন দেশীয় ফ্যাশন হাউজ যেমন-আড়ং, নিউ আড়ং, এম ক্রাফট, আবর্তন, গ্রামীন চেক, কুমিলার আদি খদ্দের, নিপুন, মেলা, কেক্রাফট, ঝলক, দেশ কারুপন্য, ড্রেসিডেল, পলক ও নোলকের আলাদা বিশেষত্বে দিয়ে তৈরী পন্য সাজিয়েছে রুচি ও মৌসুমের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ব্যবসায়ীরা। বক, টাইডাই, হাতের কাজের সাথে ব্রাশ পেইন্টের শাড়ী, লুংগী, পাঞ্জাবী, থ্রিপিস, শার্ট, প্যান্ট, ফতুয়া, শেরওয়ানী, তাঁতের কাপড়, স্বর্নালংকারসহ ছোটদের পোষাকে ভরপুর দোকানগুলিতে। জুতার দোকানে ইটালীর তৈরীর সীল মেরে নি¤œমানের জুতা বেশী দামে বিক্রি করছে। কসমেটিক্স দোকানেও খ্যাত কসমেটিক্স কোম্পানীর স্টিকার বা লেভেল দিয়ে চড়া দামে কসমেটিক্স সামগ্রী বিক্রি করছে। ঈদ ঐতিহ্য ও আমেজকে সার্থক করার জন্য পন্য সামগ্রী ক্রয় না করলেও মার্কেটে একবার ঘুরে যাচ্ছে দায়িত্বশীল পরিবার কর্তারা।
মার্কেটগুলিতে পোষাকী রোমিওদের আনাগোনা বেড়েছে। রোমিওদের টিজের কারনে ভদ্র মহিলা খরিদ্দারেরা বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার বলে কলেজ পড়–য়া ছাত্রী নওরিন জাহান সুমনা ক্ষোভের সাথে জানান। প্রবাসে স্বামী থাকার কারনে স্ত্রী এলিজা হক পরিবারের চাহিত পন্য ক্রয় করতে এসে রোমিওদের উত্যক্তে জিনিসপত্র না কিনে লজ্জায় গৃহে ফিরছেন বলে জানান। যে দোকানগুলিতে মহিলাদের উপচে পড়া ভিড় সেখানে রোমিওদের অনাহুত উপস্থিতিতে ক্রেতা বিক্রেতারা কূল রাখি না মান রাখি অবস্থা। দাগনভূঞা থানার ওসি আসলাম উদ্দিনের সাথে আলাপে জানা গেল স্পর্শকাতর পয়েন্টগুলিতে পুলিশী টহল, মোবাইল পুলিশ, সাদা পোষাকধারী র্যাব ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা অবস্থানে আছে। দাগনভূঞা ইসহাক, খায়ের ও রহমান শপিং কমপ্লেক্্ের’র সভাপতি মোঃ জামাল উদ্দিন জানান, ঈদ উপলক্ষে মার্কেটের ভিতরে ও বাইরে নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী ছাড়াও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এবং প্রত্যেক জিনিসের ক্রয়মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন শপিং সেন্টারের ব্যবসায়ী কমিটি এবং ব্যবসায়ীরা এখন পর্যন্ত নিরাপদে আছে বলে জানালেন। যদিও মার্কেট গুলিতে ক্রেতা সমাগম আছে, কিন্তু কাম্য বিক্রয় নেই বলে জানান দরবেশেরহাটের কাপড় ব্যবসায়ী সরওয়ার বস্ত্র বিতানের স্বত্ত্বাধিকারী মনসুর আহমেদ। বিগত বছরের তুলনায় এবার জিনিষপত্রের সীমাহীন মূল্য উর্ধ্বগতি বিধায় আগাম ক্রয় বিক্রয়ে মন্থরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা গেল তারা আশাবাদী তাদের কাম্য বিক্রি টার্গেটে পোঁছতে পারবে।
সম্পাদনা: আরএইচ/ইআর
দাগনভূঞায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার







