আগামী ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগরে চেয়ারম্যান প্রার্থী যুবলীগ নেতা আলাউদ্দিনের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার দেখিয়ে নৌকা প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ তুলে ধরেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আলাউদ্দিন।
জানা যায়, ফরহাদনগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে বিবেচিত হয়। এর ১০ দিন পর একজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন মর্মে নৌকা প্রতীকে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীকে একক প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। কিন্তু প্রার্র্থীতা প্রত্যাহারকারী ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী তা প্রত্যাহার করেননি বলে অভিযোগ তুলেছেন।
এমন অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলাউদ্দিন দাবি করেছেন, তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদনই করেননি। তাঁর সই জাল করে কেউ আবেদন করেছেন, যা আমলে নিয়ে তাঁর প্রার্র্থীতা বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমি আমার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করিনি। আমি নিজেও রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে যাইনি। এ ছাড়া আমার সমর্থনকারী বা প্রস্তাবকারীও প্রার্থীতা প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনো আবেদন করেননি। জীবন গেলেও আমি কোনোভাবেই প্রার্থীতা প্রত্যাহার করব না। জনগণ আমাকে চায় বলেই আমি প্রার্থী হয়েছি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে, ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে পারলে আল্লাহর রহমতে আমি ৯০ শতাংশ ভোট পাব।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ফেনী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন জানিয়ে আলাউদ্দিন বলেন, ‘প্রার্থীতা প্রত্যাহারের আবেদনের সই ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে এই সই আমি করিনি।’
তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনকারী উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, এ পর্যন্ত তিনি কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। আলাউদ্দিনের পক্ষ থেকে দুই ব্যক্তি এসে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের আবেদন জমা দিয়েছিলেন। তবে তাঁদের পরিচয় অবশ্য তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘যে আবেদনটি পেয়েছিলাম, সেটির সঙ্গে মনোনয়নপত্রে থাকা সই মিলিয়ে দেখেছি। সইয়ের মোটামুটি মিল আছে। তবে ওই সময়ে আমি আলাউদ্দিনের মোবাইল নম্বরে (মনোনয়নপত্রে দেওয়া) কল করেছিলাম। তখন নম্বরটি বন্ধ ছিল।’
মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার পর থেকে তাঁকে বিভ্রান্ত করে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন আলাউদ্দিন। সই জাল করে কে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন, জানতে চাইলে আলাউদ্দিন কারও নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘প্রার্থী দুজন। আমি যেহেতু কোনো অবস্থাতেই প্রার্থীতা প্রত্যাহার করব না, তাই জাল-জালিয়াতি কে করছে, এটা কারও অজানা নয়।’
আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে ওই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একক প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন মোশারফ হোসেন। তিনি ফরহাদ নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আলাউদ্দিন একই ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় বিজয়ী প্রার্থী মোশারফ হোসেন বলেন, ‘এই অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। আমরা তিনজন প্রার্থী ছিলাম। রহিম খান এবং উনি (আলাউদ্দিন) প্রার্থীতা প্রত্যাহার করায় রিটার্নিং কর্মকর্তা আমাকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন।’ (খবর-প্রথম আলো অনলাইন)







