ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামে মুহুরী নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে অন্তত ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবার রাত ও বৃহস্পতিবার দিনভর অতিবৃষ্টিতে পানির চাপে বাঁধের ৩টি স্থান ভেঙ্গে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে থাকে। প্লাবিত এলাকায় বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মাছের ঘের পানির নিচে তলিয়ে গেছে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভাঙ্গন কবলিত স্থান পরিদর্শন করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানি ও টানা বৃষ্টির কারণে পরশুরাম ও ফুলগাজী এলাকায় সৃষ্ট পানির চাপ বহন করতে না পেরে বাঁধের ৩ স্থানে ভেঙ্গে যায়। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ফুলগাজীর জয়পুর ও ১২টার দিকে দৌলতপুর এলাকায় ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। সকালের দিকে পরশুরামের সাতকুচিয়া এলাকারও একটি স্থানে ভাঙ্গনের দেখা দেয়। এসময় মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। ভাঙ্গন কবলিত স্থান দিয়ে পানি ঢুকে পরশুরামের সাতকুচিয়া ও জয়পুর গ্রাম ফুলগাজীর জয়পুর, কিসমত ঘোনিয়া, সাহাপাড়া, উত্তর দৌলতপুর ও রৈরাগপুরসহ আশপাশের এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় ফসলী জমিও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে মাছের ঘের। ঢুবে গেছে কয়েকটি পোল্টি খামারসহ বাড়ি ঘর। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান ভাঙ্গন কবলিত স্থান পরিদর্শন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তাগাদা দিয়েছেন।
আবুল হাসান নামের ফুলগাজী বাজারের এক ব্যবসায়ি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাজারে পানি উঠতে শুরু করে। মুহূর্তেই বাজারের দোকানপাটে পানি ঢুকে জিনিসপত্র ডুবে গেছে। লকডাউনে দোকান বন্ধ থাকায় অনেক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ রেখে বাড়ি ঘরে ছিলেন। খবর পেয়ে আশপাশের ব্যবসায়ীরা দ্রুত দোকান খুলে মালামাল সরাতে পারলেও দূর-দূরান্তের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তবে বিকাল থেকে আস্তে আস্তে পানি নামতে শুরু করেছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌসী বেগম জানান, ভাঙ্গন কবলিত স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের খাদ্য সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দত্ত জানান, তার উপজেলায় বেড়িবাঁধের ১টি স্থানে ভাঙ্গনে ২-৪টি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। তবে বৃষ্টি বন্ধ হলে পানি নেমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন জানান, অতিরিক্ত পানির চাপে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বেড়িবাঁধের ৩স্থানে ভাঙ্গনের শুরু হয়। এতে আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়। তবে এখন (সন্ধ্যা ৬টা) পানি কমতে শুরু করেছে। পানির স্রোত স্বাভাবিক হলে বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে।







